1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘মিসেস টি’ এবং তাঁর ডিম আর একটি ফসিল

২২ জানুয়ারি ২০১১

ফসিল সন্ধানীদের জন্য দারুণ সুখবর পাওয়া গেল চীন থেকে৷ টেরোড্যাক্টিল বা পেট্রোসাউর প্রজাতির এক উড়ন্ত মেয়ে ডাইনোরের ফসিল মিলেছে, যার গর্ভে ছিল আস্ত একটি ডিম৷

https://p.dw.com/p/100w1
ফসিল, ডাইনোসর, টেরোড্যাক্টিল, ডিম, প্রাণী, মেয়ে, পুরুষ, চীন, বিজ্ঞান, গবেষণা
প্রাচীন ফসিল থেকে পাওয়া যাবে বহু তথ্যছবি: AP

সেই আদিম যুগের কথা৷ জুরাসিক যুগ৷ যখন পৃথিবীর মাটিতে বিশালাকায় আর আকাশে উড়ন্ত সব ডাইনোসর দখল করে রেখেছিল এই গ্রহটাকে৷ সময়টা ২২০ থেকে ৬৫ মিলিয়ন বছর আগে৷ পেট্রোসাউর প্রজাতির সেই ডাইনোসরের পুরুষদের মাথায় থাকত রঙচঙে ঝুঁটি আর তাদের নিতম্ব হত বেশ ক্ষীণ৷ তুলনায় পেট্রোসাউর মেয়েরা মাথায় ঝুঁটি নিয়ে জন্মাত না তবে যেহেতু সন্তান, মানে ডিম থাকত তার গর্ভে, তাই তার নিতম্বটি হত পুরুষের অনুপাতে বেশ বড়সড়৷ ঠিক যেমন আধুনিক মানুষের হয়ে থাকে আর কি!

তো, এমনই এক মেয়ে পেট্রোসাউরের ফসিল পাওয়া গেল চীনের বিখ্যাত লিওনিং প্রদেশ থেকে৷ যে প্রদেশে অতীতেও বহু ফসিলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে৷ আর এই ফসিলটির সন্ধান পেয়েছেন চীনা ফসিল সন্ধানী জুংচাং লু আর তাঁর সহকারীরা৷ ফসিলটিকে ভালো করে খতিয়ে দেখে রীতিমত আনন্দিত বিজ্ঞানী মহল৷ কারণ, পেট্রোসাউর প্রজাতিক প্রাচীন এই উভচর প্রাণীদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য অনেকটাই ধরা পড়েছে এই ফসিল আবিষ্কারের পর৷ বিজ্ঞানীরা এই ফসিল হয়ে যাওয়া মেয়ে পেট্রোসাউর-এর নাম দিয়েছেন ‘মিসেস টি'৷ টি অক্ষরটা তাঁরা নিয়েছেন টেরোড্যাক্টিল ডাইনোসরাসের নাম থেকে৷ কারণ, নামে পেট্রোসাউর হলেও এই ডাইনোসররাও আসলে নাকি ওই উভচর টেরোড্যাক্টিল প্রজাতিরই আসলে৷

জানা গেছে, ফসিল হয়ে যাওয়া মিসেস টি নাকি প্রায় ডিমটি পাড়ার মত কাছকাছি সময়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন৷ শেষের দিকে তিনি সামান্য দুর্ঘটনায় পড়েন৷ আকাশে উড়তে উড়তে তিনি কোনকিছুতে আঘাত পেয়ে হ্রদের জলে পড়ে যান৷ তাঁর একটি হাত বা ডানা ভেঙে যায়৷ হ্রদের জলেই হয়ে যায় মিসেস টি-এর সলিল সমাধি৷ তারপরে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর পেরিয়ে গেছে৷ আজকের মানুষ অবশেষে মিসেস টি -এর ফসিল পেয়ে গেছে এবং দেখা গেছে তার শরীরের মধ্যে অক্ষত রয়ে গেছে সেই ডিম৷ সেটাও অবশ্যি এখন ফসিল৷

নতুন এই ফসিল থেকে জানা যাবে বহু তথ্য৷ লিসেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীতত্ব বিভাগের অধ্যাপক ডেভিড উনউইন এই ফসিলটির ওপরে গবেষণা চালাচ্ছেন৷ তাঁর মতে, এ ধরণের এবং এতটাই অবিকৃত অবস্থায় কোন ফসিলের সন্ধান পাওয়া প্রায় অসম্ভবের পর্যায়ে পড়ে৷ সুতরাং এর থেকে এমন অনেক অজানা বিষয়আশয় জানা যাবে যা কিনা সেই সুপ্রাচীন পৃথিবী সম্পর্কে আধুনিক বিজ্ঞানকে বহু তথ্য সরবরাহ করবে৷

তাহলে, সেই আদ্যিকালের মিসেস টি বিজ্ঞানের জন্য উপকারী বলেই প্রমাণিত হলেন শেষ পর্যন্ত!

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম