মিয়ানমারের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চায় বাংলাদেশ
৬ ডিসেম্বর ২০১৮সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট নিউজওয়াচ-এ মিয়ানমারের ধর্মমন্ত্রী থুরা অং কো-র বক্তব্যের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়৷ এতে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলিমদের মিয়ানমারের দিকে ‘ছুটে চলতে' ‘মগজ ধোলাই' করা হচ্ছে৷ বাংলাদেশ তাঁদের ফিরতে দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷ ‘‘তারা ক্যাম্পে, বেঙ্গলি যুবকদের খাওয়াচ্ছে এবং মগজ ধোলাই করছে, যেন তারা মিয়ানমারের দিকে মার্চ করে৷ ঐ ওভার পপুলেটেড বেঙ্গলিদের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য, মিয়ানমারের দিকে মার্চ করা,'' বলে মন্তব্য করেন ধর্মমন্ত্রী থুরা অং কো৷ উল্লেখ্য, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ‘বেঙ্গলি' বলে আখ্যায়িত করে৷
২৭ নভেম্বর এক বৌদ্ধ ভিক্ষুর শেষকৃত্যানুষ্ঠানে একটি ‘চরমপন্থি ধর্ম'-এর জন্ম হার নিয়েও কথা বলেন তিনি৷ ধর্মমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা বৌদ্ধরা একগামী এবং আমাদের একটি বা দুটি সন্তান থাকে৷ কিন্তু একটি চরমপন্থি ধর্ম তিন-চারটি স্ত্রী রাখা এবং ১৫ থেকে ২০টি সন্তান জন্ম দিতে উৎসাহ দেয়৷'' এই বক্তব্যের পর সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘‘আসলে ‘অন্য ধর্ম' বলতে বেঙ্গলিদের বোঝায়৷''
থুরা অং কো-র এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ লিউইন ও-কে বুধবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাঠানো হয়েছিল৷ সেই সময় বাংলাদেশ মিয়ানমারের ধর্মমন্ত্রীর এমন উসকানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানায় বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা৷
মিয়ানমারের দিকে ‘ছুটে চলা' মন্তব্যের বিষয়ে ঐ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে বলেন, ‘‘জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে৷ আমরা কখনো মৌলবাদকে উৎসাহ দেই না৷'' তিনি বলেন, ‘‘আপনি যদি রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেন, তাঁদের সম্পত্তি ফিরিয়ে দেন, তাহলে তাঁরা এমনিতে মিয়ানমারে ফিরে যাবে৷ তা না করে আপনারা উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন, যা দুর্ভাগ্যজনক৷''
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ লিউইন ও-এর সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত থাকা এক কর্মকর্তা জানান, ধর্মমন্ত্রীর ঐ বক্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত মতামত বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত৷ ‘‘কিন্তু আমরা ঐ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি,'' জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঐ কর্মকর্তা৷
জেডএইচ/এসিবি (রয়টার্স)