1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপীয় মূল্যবোধ ভাঙার শাস্তি

১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

হাঙ্গেরির সরকার যাবতীয় সমালোচনা অগ্রাহ্য করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মূল্যবোধ লঙ্ঘন করে চলেছে, এই অভিযোগের ভিত্তিতে সে দেশের বিরুদ্ধে শাস্তির প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলো ইউরোপীয় পার্লামেন্ট৷

https://p.dw.com/p/34iPp
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J.-F. Badias

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইতিহাসে কখনো কোনো সদস্য দেশের বিরুদ্ধে এমন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি, যেমনটা হাঙ্গেরির ক্ষেত্রে ঘটলো৷ সে দেশের সরকার ২০১০ সাল থেকে যেভাবে গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করে চলেছে এবং ইইউ-র মূল্যবোধের প্রতি অবজ্ঞা দেখাচ্ছে, তার ফলে গভীর ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে৷ এতকাল কার্যত অসহায় অবস্থায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার পর বুধবার ইউরোপীয় পার্লামেন্ট হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলো৷ মোট ৪৪৮ জন সদস্য এই প্রস্তাবের পক্ষে, ১৯৭ জন বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন৷ ৪৮ জন ভোটদানে বিরত ছিলেন৷ সেই প্রক্রিয়ার শেষে হাঙ্গেরি ইইউ-র মধ্যে তার ভোটাধিকার হারাতে পারে৷ ২০১৭ সালের শেষে পোল্যান্ডের সরকারের বিরুদ্ধেও একই রকম প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে৷ তবে সে দেশ অনেক প্রশ্নে অবস্থান নরম করেছে৷

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ইয়ুডিট সার্গেন্টিনি হাঙ্গেরির পরিস্থিতি নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন৷ তাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মূল্যবোধ লঙ্ঘনের একাধিক দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে৷ হাঙ্গেরির সরকারের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যম, শিক্ষাজগত ও বিচার ব্যবস্থার কাঠামোর স্বাধীনতা খর্ব করার অভিযোগ আনা হয়েছে৷ রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকার এনজিও-গুলির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে ও দুর্নীতির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে৷ ২০১৫ সালে ইউরোপে শরণার্থীদের ঢল নামার পর হাঙ্গেরি কার্যত সীমান্ত বন্ধ করে শরণার্থীদের গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে৷ এমনকি ইউরোপীয় আদালতের রায়ও অগ্রাহ্য করেছে সে দেশের সরকার৷

বুধবার ভোটাভুটির ফলাফলের পর পার্লামেন্টে হাঙ্গেরির সরকারের ফিদেস দলের ভবিষ্যতও অনিশ্চিত হয়ে পড়লো৷ বর্তমানে তারা ইউরোপীয় পার্লামেন্টে রক্ষণশীলদের সংসদীয় গোষ্ঠীর অংশ৷ কিন্তু রক্ষণশীলদের মধ্যে ফিদেস দলের অভিবাসন-বিরোধী পপুলিস্ট নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ বেড়ে চলেছে৷ আগামী বছর ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে ফিদেস-কে বহিষ্কার করে সেই দায় ঝেড়ে ফেলতে চান অনেক সদস্য৷ এমনকি তার ফলে সংসদে কিছু আসন হারাতেও প্রস্তুত তাঁরা৷ ভোটাভুটির সময় রক্ষণশীলদের সংসদীয় গোষ্ঠীর সদস্যরা স্বাধীনভাবে তাঁদের মত প্রকাশের সুযোগের সদ্ব্যাবহার করেছেন৷ তাঁদের মধ্যে অনেকে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন৷ ফলে হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা সম্ভব হয়েছে৷

মঙ্গলবার হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওর্বান ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখেন৷ এত অভিযোগের মুখেও তিনি নিজের অবস্থানে অটল ছিলেন৷ তিনি জোরালো কণ্ঠে দাবি করেন, যে হাঙ্গেরির ভোটাররা অভিবাসনের বিরুদ্ধে স্পষ্ট রায় দিয়েছেন৷ তা সত্ত্বেও তাঁর দেশকে ‘ব্ল্যাকমেল' করা হচ্ছে বলে ওর্বান অভিযোগ করেন৷ তাঁর মতে, মুসলিম শরণার্থীরা ইউরোপীয় সভ্যতার অস্তিত্বের জন্য হুমকি৷ কোনোরকম আপোশের ইঙ্গিত না দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে এমনকি রক্ষণশীল গোষ্ঠীর মধ্যেও ক্ষোভ আরও বেড়ে গেছে৷

এসবি/জেডএইচ (ডিপিএ, রয়টার্স)