1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মোবাইল ফোনের বহুমুখ ব্যবহারে বাংলাদেশের নারীরা

১৭ ডিসেম্বর ২০১০

মোবাইল ফোন ব্যবহারেও বিশ্বজুড়ে রয়েছে লিঙ্গবৈষম্য৷ তারপরও ১৯৯৭ সাল থেকে এই পর্যন্ত বাংলাদেশের ৩ লাখ ৬৪ হাজার নারী মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে৷ সাধারণ কথাবার্তা ছাড়াও আজকাল অর্থ উপার্জনের বাহন হয়ে উঠেছে মোবাইল ফোন৷

https://p.dw.com/p/Qdxt
বাংলাদেশের এক নারী মোবাইল ফোনে কথা বলছেনছবি: AP

রঙিন শাড়ি পরে মনোয়ারা তালুকদার হেঁটে চলছেন৷ তাঁর একহাতে ভেষজ চায়ের বাক্স আর অন্যহাতে পুরানো একটি মোবাইল ফোন৷ অন্য আর দশজন বড় ব্যবসায়ীকে যেমন দেখায় মনোয়ারাকে যেনো ঠিক তেমনটি দেখায়না৷ কিন্তু মাত্র ছয় বছরের মধ্যে তিনি বাংলাদেশে গড়ে তুলেছেন একটি আন্তজার্তিক ভেষজ চায়ের সামাজ্য৷ তাঁর সঙ্গে কাজ করেন প্রায় দেড় হাজার কৃষিজীবী নারী৷ এরইমধ্যে তিনি পশ্চিমা বিশ্বের নামকরা স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের চেইন কোম্পানি থেকে অর্ডার পেয়েছেন এবং যা থেকে আয় করেছেন ৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা৷

বাংলাদেশে যারা প্রথম মোবাইল ফোনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি তাদেরই একজন৷ ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে যখন মোবাইল ফোন আসে তখন এর দাম ছিলো অনেক বেশি৷ কিন্তু আটচল্লিশ বছর বয়েসি চার বাচ্চার মা মনোয়ারা বলেন, বিনিয়োগ করতে তিনি কখনও আফসোস করেননা৷ তিনি বলেন,‘‘মোবাইল ফোন আমার ব্যবসাতে অনেক সাহায্য করেছে, বিশেষ করে চা ডিস্ট্রিবিউশন ও মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে৷'' মনোয়ারা বলেন, ‘‘আমার কোনো অফিস বা শোরুম নেই৷ তাই লোকজন মোবাইল ফোনেই আমার কাছে চায়ের অর্ডার দেয়৷ বাংলাদেশের ৬৪ জেলাতেই এখন আমার চা রয়েছে৷ অষ্ট্রেলিয়া, কুয়েত এবং নেপালের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও আমি চায়ের অর্ডার পেয়েছি৷''

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এইভাবে ব্যবসা শুরু করা প্রসঙ্গে মনোয়ারা বলেন, আমি ‘গ্রিন ট্রেড ফেয়ার' এ গিয়েছিলাম৷ এবং সেখানে আমার মোবাইল নম্বরসহ পোস্টার লাগিয়েছিলাম৷ এখন আমার সঙ্গে যারা কাজ করছেন তাঁদের মাধ্যমেই অর্ডারগুলো পাচ্ছি৷

কিন্তু সব নারীর ভাগ্য মনোয়ারার মতো নয়৷ টেলিকমের একজন কর্মকর্তা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার পুরুষদের তুলনায় নারীদের মোবাইল ফোনের সংখ্যা ৩৭ শতাংশ কম৷ যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য দেখা যায়, সেখানে বাংলাদেশের মতো বিকাশমুখী দেশে মোবাইল ফোন নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করছে৷ বাংলাদেশের টেলিকম কোম্পানি গ্রামীণ ফোনের একটি প্রকল্প ‘ভিলেজ ফোন লেডিজ'৷ এই প্রকল্পের অধীনে গ্রামের গরিব নারীদের মোবাইল ফোন কেনার জন্য ঋণ দেওয়া হয়৷ এইসব নারী অর্থের বিনিময়ে গ্রামের অন্যান্য নারীদের তাঁর মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেন৷ এতে একদিক থেকে যেমন তাঁর কিছুটা আয় হয়, অন্যদিকে গ্রামের এইসব নারীরা যারা হয়তো কখনও ফোনে কথা বলার কথা চিন্তাও করেননি তাঁরা টেলিফোন নেটওয়ার্কের আওতায় আসছে৷ বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন কোম্পানি বাংলালিংক ২০০৫ সালে প্রথম নারীদের কথা ভেবে ‘লেডিস ফার্স্ট' নামে একটি প্যাকেজ চালু করেছিলো৷

প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক