1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজা তুতেনখামেন ‘মেয়েলি’ ছিলেন না

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০

আধুনিক বিশ্বের কাছে প্রাচীন মিশরের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও রহস্যময় ‘বালক রাজা’ তুতেনখামেন ‘মেয়েলি’ ছিলেন না৷ তিনি হত্যাকাণ্ডেরও শিকার হননি বরং মারা গেছেন ম্যালেরিয়ার ধকল সামলাতে না পেরে৷ আর রানি নেফারতিতিও তাঁর মা নন৷

https://p.dw.com/p/M3x3
তুতেনখামেনের সোনার মুখোশছবি: AP

রাজা তুতেনখামেনকে নিয়ে প্রায় এক শতাব্দী ধরে রহস্যের আবর্তে চাপা এমন অনেক বিষয়েরই বৈজ্ঞানিক প্রমাণ মিলেছে অবশেষে৷ এছাড়াও তাঁর বংশপরিচয়সহ অন্যান্য অনেক বিষয়েও নিশ্চিত হওয়া গেছে৷

দীর্ঘ দুই বছরের যৌথ গবেষণা শেষে ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল থেকে এসব বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন মিশর এবং জার্মানির বিজ্ঞানী দল৷ মিশরের প্রধান প্রত্নতত্ত্ববিদ জাহি হাওয়াসের নেতৃত্বাধীন বিজ্ঞানীরা বুধবার কায়রোতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই গবেষণার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ফলাফল জানান৷

গিজার পিরামিডের পর সম্ভবত তুতেনখামেনের স্বর্ণনির্মিত আবক্ষ মুখোশটিই প্রাচীন মিশরের সবচেয়ে বহুল জনপ্রিয় প্রতীক৷ কিন্তু গোল বেঁধেছিল এই আবক্ষ মুখোশ নিয়েই৷ এতে তাঁর স্ফীতবক্ষ দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলছিলেন বালক রাজার বোধহয় হরমোনের এমন সমস্যা ছিল যে কারণে পুরষদের শারীরিক গঠন নারীদের মতো হয়ে যায়৷ সহজ কথায় বললে অনেকেই বলছিলেন, তুতেনখামেন ‘মেয়েলি' ছিলেন৷

কিন্তু, মিশরীয় জাদুঘরে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে স্থাপিত অত্যাধুনিক গবেষণাগারে দুই বছরের লাগাতার পরীক্ষা নিরীক্ষাশেষে বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে মিশরের প্রধান প্রত্নতত্ত্ববিদ জাহি হাওয়াস নিজ মুখেই বললেন, ‘‘মানুষজন বলছিল তিনি অন্যরকম এবং মেয়েলি ছিলেন৷ কিন্তু তা নয়, তিনি আমাদের সবার মতোই স্বাভাবিক পুরুষ ছিলেন৷''

গবেষকরা জানান, সুস্থ স্বাভাবিক পুরুষ তুতেনখামেন দুই সন্তানের জনক ছিলেন৷ দুটিই মেয়ে৷ তবে ওরা মারা গিয়েছিল মাতৃগর্ভেই৷

বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, মাথার পেছনে খুলিতে যে গর্ত দেখে ধারণা করা হত যে তাঁকে হয়তো আততায়ীরা মাথায় আঘাত করে হত্যা করেছিল সেই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল৷ এমন কি বিষপানে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টিও ঠিক নয়৷ আসলে রক্তকণিকায় বিশেষ বংশগত দুর্বলতার কারণে হাড়ের অসুখে ভুগছিলেন রাজা তুতেনখামেন৷ তাঁর আত্মীয়দের মমি পরীক্ষা করেও ওই একই অসুখের প্রমাণ পাওয়া গেছে৷ ফলে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর ধকল সামলাতে না পেরে মারা যান তিনি৷

এছাড়া প্রাচীন মিশরের আরেক জনপ্রিয় প্রতীক রানি নেফারতিতিই তাঁর মা কি না সেই বিষয়েরও সুরাহা করেছে এই গবেষণা৷ ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল বলছে তা একেবারেই অসম্ভব৷ তবে, বিখ্যাত ফারও রাজা আখেনাটনই যে তাঁর পিতা এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে৷ আর তাঁর মা ছিলেন প্রভাবশালী রানি তিয়ে৷

রাজা তুতেনখামেন এর মমিসহ তাঁর আত্মীয়দের বলে বিশ্বাস করা মোট ১১টি মমির ডিএনএ পরীক্ষা করেছেন এই বিজ্ঞানীদল৷ মাত্র ৯ বছর বয়সে রাজা হয়েছিলেন ‘টুট'৷ ১৯ বছর বয়সে মারা যান তিনি৷ বিখ্যাত এই ফারাও রাজার রাজত্বকাল ছিল ১৩৩৩ থেকে ১৩২৪ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত৷

প্রতিবেদন : মুনীর উদ্দিন আহমেদ

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক