1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আহতরা এখনও আতঙ্কগ্রস্ত

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২১ এপ্রিল ২০১৪

রানা প্লাজা ধসের পর সেই ভবনের যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁদের মধ্যে শতকরা ৫০ ভাগই গুরুতর ‘ট্রমায়’ আক্রান্ত৷ তাঁদের চিকিত্‍সার কোনো সমন্বিত ব্যবস্থা এখনও করা হয়নি৷ কিছু প্রতিষ্ঠান কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থা করলেও, তা পর্যাপ্ত নয়৷

https://p.dw.com/p/1Blg2
Bangladesch Rana Plaza Bergungsarbeiten Archiv 24.04.2013
ছবি: Reuters

আনিসুল ইসলাম (৩০) রানা প্লাজার ‘নিউ ওয়েভ বটম' নামের পোশাক কারখানার অপারেটরের কাজ করতেন৷ ভবস ধসের পরদিনই তাঁকে উদ্ধার করা হয়৷ তাঁর শারীরিক ক্ষতি তেমন না হলেও, তিনি এখন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত৷ আনিসুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘রানা প্লাজা ধসের কয়েক মাস পর আমি একটি পোশাক কারখানায় কাজ নিই৷ কিন্তু তিন দিন পর কাজ ছেড়ে দেই আমি৷ মেশিন ধরতে গেলেই আমার হাত-পা কাঁপে৷ বিদ্যুৎ চলে গেলে প্রচণ্ড ভয় লাগে আমার৷'' এই একইরকম অবস্থা রহিমা এবং সালেহা বেগমসহ আরো অনেকের৷

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট রানা প্লাজা ধসের পর বেঁচে যাওয়া শ্রমিকদের ওপর একটি জরিপ চালায়৷ সেই জরিপে দেখা যায়, ৯০ ভাগ শ্রমিকই ‘প্রাথমিক ‘ট্রমা' বা প্রাথমিক আতঙ্কে আক্রান্ত৷ তিন মাস পর আরেকটি জরিপে দেখা যায় যে, কমপক্ষে ৪০ ভাগ শ্রমিক ‘গুরুতর ট্রমা' বা গুরুতর আতঙ্কে আক্রান্ত৷ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘তাঁদের মধ্যে নানা উপসর্গ দেখা দিচ্ছে৷ ভয় পাওয়া, দুঃস্বপ্ন দেখা, অপরাধ বোধসহ নানা ধরণের দুঃসহ স্মৃতি তাঁদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে৷ এছাড়া ঘটনার পর থেকে তাঁরা বিষন্নতা এবং মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন৷'' তিনি বলেন, ‘‘এর সঠিক চিকিত্‍সা না হলে তাঁরা মাদকাসক্ত হয়ে উঠতে পারেন৷ তাঁদের মধ্যে বাড়তে পারে আত্মহত্যার প্রবণতা৷''

রানা প্লাজায় আহতদের মধ্যে যাঁরা আতঙ্কগ্রস্ত, তাঁদের চিকিত্‍সা সহায়তা দিচ্ছে বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংগঠন৷ ‘কেয়ার'-এর চিকিত্‍সা কেন্দ্র ‘মনোসামাজিক সহায়তা কেন্দ্র' এরকম ৫০০ জনকে চিকিত্‍সার আওতায় এনেছে৷ তাঁদের নিয়ে কাউন্সেলিং করা হচ্ছে৷ কেন্দ্রের পরিচালক ও মনোসামাজিক চিকিত্‍সক দেওয়ান সাফায়েত আহমেদ ডয়চে ভেলেকে জানান, তাদের পর্যবেক্ষণে রানা প্লাজার ঘটনায় আহতদের প্রতি ১০ জনের পাঁচজন ট্রমায় আক্রান্ত৷ তার মানে, আহত ২,৪৩৮ জনের মধ্যে অর্ধেকই এখন গুরুতর আতঙ্কে ভুগছেন৷ দেওয়ান সাফায়েত আহমেদও বলেন, সঠিক চিকিত্‍সা না হলে এর শেষ পরিণতি আত্মহত্যা৷

অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলামের কথায়, আতঙ্কগ্রস্তদের জন্য এখন সরকারের উদ্যোগে ব্যাপক ভিত্তিক চিকিত্‍সা কার্যক্রম শুরু করা উচিত৷ নয়ত তাঁরা আর কর্মক্ষম হবেন না৷ ঠিকমতো চিকিত্‍সা না হলে তাঁরা আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন না৷ করতে পারবেন না কোনো কাজ৷ তখন তাঁদের ও তাঁদের পরিবারে নেমে আসবে চরম বিপর্যয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য