1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাশিয়া কাতারের পর হয়ত বিশ্বকাপ আয়োজন করবে চীন বা ভারত

১৫ ডিসেম্বর ২০১০

২০১৮ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল যাচ্ছে রাশিয়ায়; ২০২২-এর বিশ্বকাপ যাচ্ছে কাতারে৷ ফিফা’র এই সিদ্ধান্তের আগে এবং পরে এই নিয়ে বিতর্ক আজও শেষ হয়নি৷ কিন্তু কে জানে, এ’ থেকেই একদিন চীন কিংবা ভারতের বিশ্বকাপ আয়োজনের পথ খুলে গেল কিনা৷

https://p.dw.com/p/QbIz
Joseph Sepp Blatter, FIFA
‘আমরা এখন রাশিয়া যাচ্ছি, কাতারে যাচ্ছি’ : সেপ ব্ল্যাটারছবি: AP

দোসরা ডিসেম্বর বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সাংগঠনিক প্রতিষ্ঠান ফিফা'র নির্বাহী পরিষদ দুটি বড় চমক দেয়: ২০১৮ সালের বিশ্বকাপের আয়োজন করবে রাশিয়া এবং ২০২২ সালের বিশ্বকাপের আয়োজন করবে কাতার৷ ইংল্যান্ড বাদ, জাপান বাদ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাদ৷ ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে আরো বলা দরকার যে, নির্বাহী পরিষদের ২২ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র দু'জন ইংল্যান্ডের পক্ষে ভোট দেন৷ ফলে ইংল্যান্ড মনোনয়নের প্রথম পর্যায়েই বাদ পড়ে৷

ইংল্যান্ডের এই ভরাডুবির পিছনে সানডে টাইমস পত্রিকা এবং বিবিসি'তে ফিফা'য় দুর্নীতি নিয়ে খবর ফাঁসের কতোটা অবদান আছে, তা' বলা শক্ত৷ আপাতত তর্ক চলেছে, ভবিষ্যতে বিশ্বকাপের আমন্ত্রণকর্তা দেশ নির্বাচনের পদ্ধতি পরিবর্তন করা উচিৎ কিনা, তাই নিয়ে৷ এবং দ্বিতীয়ত, কাতারে গ্রীষ্মের দাবদাহে ফুটবল খেলা সম্ভব কিনা৷ রাশিয়া এবং কাতার সংক্রান্ত সিদ্ধান্তকে এখন ফিফা নিজেই ‘‘রাজনৈতিক'' সিদ্ধান্ত বলে ঘোষণা করেছে৷ ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আমন্ত্রণকর্তা করাও নাকি ঐ ধরণের একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিল, বলেছেন ফিফার মহাসচিব জেরোম ভাল্কে৷ কাজেই ফুটবল বিশেষজ্ঞ অরুণাভ চৌধুরী কাতার এবং রাশিয়ার নির্বাচনে আদৌ বিস্মিত নন:

Flash-Galerie Fussballrückblick 2010
২০১৮ সালের বিশ্বকাপের আয়োজন করবে রাশিয়াছবি: picture alliance / dpa

‘‘তিনমাস আগে আমি দিল্লিতে ছিলাম৷ তখন এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট মোহম্মদ বিন হাম্মাম, যিনি নিজে কাতারি, আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বলেছিলেন, ‘২০২২ সালে যে বিশ্বকাপ হবে, আমি যতোটা পারব, চেষ্টা করব তা আমাদের দেশে আনার৷' অন্যদিকে রাশিয়ার ক্ষেত্রে তো নিশ্চয় রাজনীতির ব্যাপার আছে - ব্ল্যাটার যা বলেছেন, ‘আমরা নতুন বাজারের দিকে তাকাতে চাই, আমারা নতুন দেশের দিকে তাকাতে চাই৷' সেইজন্যই রাশিয়া এবং কাতারে বিশ্বকাপ গেছে৷ রাশিয়ার ক্ষেত্রে আর একটা আশ্চর্য ব্যাপার হল, অতো বড় একটা দেশ, অতো শক্তিশালী দেশ, কিন্তু আজ পর্যন্ত তারা কোনো বিশ্বকাপের আয়োজন করতে পারেনি৷''

অরুণাভ আরো স্মরণ করিয়ে দিলেন, বিশ্বকাপই হল ফিফা'র আমদানির সময়৷ ঐ এক বিশ্বকাপের অর্থে তাদের পরের চার বছর সংসার চালাতে হয়৷ ওদিকে ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র কি জাপানে আগেই বিশ্বকাপ হয়েছে৷ সেখানে কি আমদানি হতে পারে, তা ফিফা'র জানা৷ কাজেই নতুন নতুন বাজারের খোঁজ৷ যাই হোক, রাশিয়ায় বিশ্বকাপ সম্পর্কে অরুণাভ আশাবাদী, কেননা রাশিয়া ২০১৪ সালে শীতকালীন অলিম্পিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে, সোচি'তে৷ সেটা হবে একটা বড় অভিজ্ঞতা৷ কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার মতো রাশিয়াতেও দূরত্ব এবং পরিবহণ হবে মূল সমস্যা৷ কাতারের ক্ষেত্রে যা থাকবে না৷ অবশ্য কাতারের সমস্যা হবে গরম, গ্রীষ্মের দারুণ অগ্নিবাণ - যা নিয়ে বিতর্ক চলেছে৷

WM-Gastgeber 2018 und 2022 NO FLASH
২০২২ সালের বিশ্বকাপের আয়োজন করবে কাতারছবি: picture-alliances/dpa

অরুণাভ জানায়, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকায় এ'বছরের বিশ্বকাপ শীতকালে হয়েছিল৷ শূন্যের নীচে তাপমাত্রা পৌঁছেছিল৷ কাজেই ফিফা'র চিন্তা করা উচিৎ, যে দেশে গরম বেশি, যে দেশে ঠাণ্ডা বেশি - ঐ জুন-জুলাই স্লটে বিশ্বকাপ না করে, জানুয়ারি মাসে করা যেতে পারে৷ তাদের এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের কাছ থেকে শেখা উচিৎ, যাদের এশিয়ান কাপ সামনের বছরে কাতারেই হচ্ছে৷ তবে এশিয়ান কাপ সাধারণত অগাস্টে হয়, তারা সেটা জানুয়ারি মাসে আয়োজন করছে গরম বেশি বলে৷ ফ্রানৎস বেকেনবাউয়ার, মিশেল প্লাতিনি, সকলেই একই কথা বলেছেন: কাতারের ক্ষেত্রে ফিফা'র জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি'তে বিশ্বকাপ আয়োজনের কথা চিন্তা করা উচিৎ৷''

কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার মানুষদের কাছে কাতারে বিশ্বকাপ একটা সম্পূর্ণ আলাদা চেহারা নিতে পারে! কারণ অরুণাভ'র কথায়, ‘‘অনেক ভারতীয়, বাংলাদেশি এবং পাকিস্তানি কাতারে কাজ করেন৷ কাতারের নিজের জনসংখ্যা যা, তার চেয়ে বেশি দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ সেখানে থাকেন৷ এছাড়া সামনের কয়েক বছরে কাতারে যে নির্মাণকার্য চলবে, স্টেডিয়াম তৈরি হবে, হোটেল তৈরি হবে, রাস্তা তৈরি হবে, তাতে দক্ষিণ এশিয়া থেকে লোক যেতে পারবেন, সেখানে কাজ করার জন্য৷ অন্যদিকে সেপ ব্ল্যাটার বলেছেন, ‘আমরা এখন রাশিয়া যাচ্ছি, কাতারে যাচ্ছি৷ বিশ্ব ফুটবলে আমাদের পরের গন্তব্য হল চীন এবং ভারত৷' তাই আমার মনে হয়, ২০৩০ কিংবা ২০৩৪ সালে ভারতে বিশ্বকাপ হতে পারে৷''

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক