1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরব শান্তিতে নোবেল জয়ীরা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৩০ ডিসেম্বর ২০১৬

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জন শান্তিতে নোবেলজয়ী৷ ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ আরো ২২ জন জাতিসংঘের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন৷ ইউনূস সেন্টার এই তথ্য জানিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/2V3y9
Bnagladesch Rohingya-Flüchtlinge Flüchtlingslager Kutupalong
ছবি: DW/B. Hartig

অন্যদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত ৯ অক্টোবর থেকে ৫০ হাজার রোহিঙ্গা নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসছে৷ তাদের ফেরত নেয়ার জন্য মিয়ানমারকে চিঠি দেয়া হয়েছে৷

জাতিসংঘে পাঠানো চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস, হোসে রামোস-হরতা, আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু, মেইরিড মাগুইর, বেটি উইলিয়ামস, অসকার অ্যারিয়াস, জোডি উইলিয়ামস, শিরিন এবাদী, তাওয়াক্কল কারমান,  লেইমাহ বোয়ি, মালালা ইউসুফজাই, চিকিৎসা শাস্ত্রে নোবেলজয়ী স্যার রিচার্ড জে. রবার্টস, এলিজাবেথ ব্ল্যাকবার্ন৷

স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আরো রয়েছেন ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী রোমানো প্রোদি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমা বোনিনো, চলচ্চিত্র পরিচালক রিচার্ড কার্টিস, নারী অধিকার প্রবক্তা আলা মুরাবিত, দ্য হাফিংটন পোস্ট-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক অ্যারিয়ানা হাফিংটন, ব্যবসায়ী নেতা ও সমাজসেবী স্যার রিচার্ড ব্র্যানসন, পল পোলম্যান, মো. ইব্রাহিম, জোকেন জাইটজ ও মানবাধিকারকর্মী কেরি কেনেডি৷

জাতিসংঘে পাঠানো চিঠিতে তাঁরা বলেছেন, ‘‘জাতিগত নিধন ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধতুল্য একটি মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে মিয়ানমারে৷ গত দুই মাস ধরে রাখাইন প্রদেশে যে সামরিক আগ্রাসন চালানো হচ্ছে, তাতে শত শত রোহিঙ্গা হত্যার শিকার হচ্ছে৷ এতে ৩০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন৷ তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে, নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, বেসামরিক লোকজনকে নির্বিচারে আটক করা হচ্ছে, শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে৷’’

মানবিক সাহায্য সংস্থাগুলোকে সেখানে প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়৷ এর ফলে আগে থেকেই চরম দরিদ্রদের এই এলাকাটিতে মানবিক সংকট ভয়াবহ হয়ে উঠেছে৷ হাজার হাজার মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে যাচ্ছে৷  আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাটিকে গণহত্যাতুল্য বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ নিকট অতীতের রুয়ান্ডা, দারফুর, বসনিয়া ও কসোভোয় সংঘটিত গণহত্যার সব বৈশিষ্ট্য এখানে দৃশ্যমান৷

এদিকে বৃহস্পতিবার  বাংলাদেশের পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত মিয়ো মিন্ট থান্টকে তলব করে জানানো হয়, ‘‘রাখাইন রাজ্যে গত ৯ অক্টেবর থেকে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়ণের ঘটনায় মিয়ানমারের ৫০ হাজার রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে৷ তাদের অবশ্যই ফেরৎ নিতে হবে৷’’

পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সংবাদ মাধ্যমেকে জানিয়েছেন, ‘‘আং সান সু চি রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা বলতে একজন বিশেষ দূত পাঠাচ্ছেন বাংলাদেশে৷ রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা মূল্যায়নের জন্য এ দূত পাঠাচ্ছেন সু চি৷’’

‘‘এই আবেদন রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলবে’’

দ্য রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিচার্স ইউনিট (রামরু)-এর সমন্বয়ক অধ্যাপক সি আর আবরার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শান্তিতে নোবেলজয়ী ১৩ জনসহ বিশ্বের অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তির এই আবেদন রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলবে৷ রোহিঙ্গাদের ওপর এই নির্যাতন নতুন নয়৷ মিয়ানমারে তারা হত্যা, নির্যাতন এবং ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন৷ তাদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে৷ আগে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা ছিল৷ পরে পর্যায়ক্রমে তা তুলে নেয়া হয়৷ আমি মনে করি, এই সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে মিয়ানমারের ওপর আবারো আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এবং অবরোধ আরোপ করা উচিত৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সরকার বলেছে, সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ৫০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে হবে মিয়ানমারকে৷ এটা বাংলাদেশের যৌক্তিক দাবি, কারণ, বাংলাদেশ মনে করে, এরা বাংলাদেশের নাগরিক নয়৷ তবে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি হতে হবে সম্মানজনক৷ কোনোভাবেই তাদের যেন নতুন করে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়া না হয়৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দেখভালের দায়িত্ব নেয়া৷’’

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে নীচে মন্তব্যের ঘরে লিখুন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য