লটারিতে এল চাপোর বাড়ি বিক্রি

মেক্সিকোর কুখ্যাত সিনালোয়া ড্রাগ কার্টেলের নেতা হোয়াকিন গুজমানকে (আকৃতি বেঁটে হওয়ায় তিনি ‘এল চাপো’ বা বেঁটে নামে পরিচিত) ১৯৯৩ সালে প্রথম গুয়াতেমালা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ এরপর তাকে মেক্সিকোতে পাঠানো হয়৷ সেখানে তাকে হত্যা ও মাদক পাচারের দায়ে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷ ২০০১ সালের জানুয়ারিতে তিনি লন্ড্রির গাড়িতে করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবেষ্টিত পুয়েন্টে গ্রান্ডে কারাগার থেকে পালিয়ে যান৷

২০০৪ সাল পর্যন্ত পালিয়ে ছিলেন এল চাপো৷ এরপর আবারও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল৷ ২০১৫ সালে তিনি আবারও পালাতে সক্ষম হন৷ সেবার জেলখানায় নিজের সেলের গোসলখানার নীচে টানেল তৈরি করেছিলেন তিনি৷ যদিও তাকে মেক্সিকোর সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবিশিষ্ট আলতিপ্লানো কারাগারে রাখা হয়েছিল৷

জেল থেকে পালাতে যে টানেলটি তৈরি করা হয়েছিল সেটি প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ছিল৷ টানেলের শেষ প্রান্তে একটি মোটর সাইকেল রাখা ছিল৷

এবার মাত্র ছয়মাস বাইরে থাকতে সমর্থ হয়েছিলেন এল চাপো৷ তারপর আবারও গ্রেপ্তার হন৷ কারণ তিনি হলিউড অভিনেতা শন পেনকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন৷ সেখানে এল চাপো মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন৷ বিশ্বের যে কারও চেয়ে তিনি সবচেয়ে বেশি হেরোইন, মেথামফেটামিন, কোকেন ও মারিজুয়ানা সরবরাহ করেছেন বলেও জানান৷

ঐ সাক্ষাৎকার প্রকাশের পর এল চাপোকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ তাকে সেখানে পাঠায় মেক্সিকো৷ ২০১৯ সালে হত্যা, মাদক পাচার ও অর্থ পাচারের দায়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়৷ এই সময় তিনি প্যারোল পাবেননা৷ সঙ্গে আরও ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷

যে কেউ চাইলে এখন এল চাপোর ছবিযুক্ত টি-শার্ট, ক্যাপসহ অন্যান্য জিনিস কিনতে পারেন৷

ফোর্বসের ২০০৯ সালের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ৭০১ নম্বরে ছিলেন এল চাপো৷ তাই ফ্যানদের কাছে বিক্রির জন্য তৈরি অনেক পণ্যে এই নম্বরটি ব্যবহার করা হয়৷

টাকিলা থেকে শুরু করে করোনার মাস্কেও এল চাপোর উপস্থিতি দেখা যায়৷ যারা এসব কেনেন তারা এই তথ্য মনে রাখতে চাননা যে, মেক্সিকোর রক্তাক্ত মাদক যুদ্ধের জন্য দায়ী ছিলেন এল চাপো৷ ঐ যুদ্ধের কারণে ২০০৬ সাল থেকে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন৷

এল চাপো পালিয়ে থাকতেন এমন এক বাড়ি বিক্রির জন্য বুধবার লটারির আয়োজন করেছিল মেক্সিকো সরকার৷ যিনি বাড়িটি কিনেছেন তার নাম প্রকাশ করা হয়নি৷