1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লিসবনে ইঁদুর তাড়াতে বিড়াল বাহিনী

২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

শহরে ইঁদুরের উপদ্রব হলে বিড়াল-বাহিনী কাজে লাগালে কেমন হয়? হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালাকে না পেয়ে লিসবন শহরের বেওয়ারিশ বিড়াল কাজে লাগিয়ে এমন প্রচেষ্টাই শুরু হয়েছে৷ শহরবাসীর মধ্যেও সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে৷

https://p.dw.com/p/3Y7KR
ছবি: picture-alliance/Bildagentur-online/Rossi

লিসবন শহরের বিড়াল প্রায় নিঃশব্দে নানা অপকর্ম করে বেড়ায়৷ এবার শহরের প্রায় ছয় কোটি ইঁদুর শায়েস্তা করতে সেই বিড়াল-বাহিনী কাজে লাগানো হচ্ছে৷ সেই লক্ষ্যে সবার আগে বিড়ালগুলিকে সঠিক জায়গায় নিয়ে যেতে হয়৷ আনা ডুয়ার্তে ও তাঁর পথঘাটের প্রাণী কল্যাণ সংগঠনের সহকর্মীরা বেওয়ারিস বিড়াল ধরে সেগুলির পুনর্বাসন করেন৷ স্ট্রিট অ্যানিম্যালস অ্যাসোসিয়েশনের আনা ডুয়ার্তে মনে করিয়ে দেন, ‘‘বিড়াল শিকারি প্রাণী৷ বিড়ালের গন্ধ পেলে ইঁদুর পালিয়ে যায়৷ আমরা বিড়ালের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করে ইঁদুর দূরে রাখছি৷’’

সেই লক্ষ্যে লিসবনে ‘বিড়াল পেট্রোলিং বাহিনী’ গড়ে তোলার উদ্যোগ ৷ তবে জংলি বিড়াল আকর্ষণ করতে হলে ধৈর্যের প্রয়োজন৷ কিন্তু সেই প্রচেষ্টা বিফল হওয়ায় প্রাণী সংরক্ষণকারীরা বিকল্প পথ বেছে নিচ্ছেন৷ পারলে গোটা কলোনি বন্দি করতে চান তাঁরা৷ আনা ডুয়ার্তে বলেন, ‘‘বিড়াল সহজেই বন্ধু খুঁজে নেয়৷ এই প্রাণী একইসঙ্গে ঘুমায়, খেলা করে৷ ফলে বিচ্ছিন্নভাবে না করে একসঙ্গে সব বিড়ালের পুনর্বাসন করা অনেক সহজ৷’’

ইঁদুর তাড়াতে বিড়াল সেনা

লিসবন শহরে বিড়ালের প্রায় হাজারখানেক কলোনি বা বসতি রয়েছে৷ বিষয়টি নিয়ে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে৷ কারো মতে, বিড়াল উপকারে আসে৷ অন্যদের কাছে বেওয়ারিশ বিড়াল বোঝা ছাড়া কিছুই নয়৷

মারিসা কারেশ্মা দোস রেইস ঠিক সেটাই প্রমাণ করতে চান৷ তিনি পৌর কর্তৃপক্ষের প্রাণী সংক্রান্ত কর্মকর্তা ও ‘ক্যাট পেট্রোল' প্রকল্পের সহ উদ্যোক্তা৷ তাঁর মতে, ‘‘বিড়াল ও মানুষের জন্য তো বটেই, এমনকি ইঁদুরের জন্যও এটা ভালো৷ কারণ এটা ইঁদুর নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রাকৃতিক পদ্ধতি৷ বিড়ালের ভয়ে ইঁদুর আর দেখা যায় না৷’’

একটি বিড়াল ধরা পড়েছে৷ সেটির চোখেমুখে আতঙ্ক৷ বিড়ালটি এখনো জানে না যে ভালোর জন্যই সেটিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ আনা ডুয়ার্তে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কোনো বসতি সম্পর্কে ক্ষোভ থাকলে বিড়ালের বিপদের আশঙ্কা রয়েছে৷ সেগুলিকে বিষ খাওয়ানো বা নিপীড়ন করা হতে পারে৷ কোনো পুরানো ভবন ভেঙে নতুন করে তৈরির সময় তাদের অন্য কোথাও চলে যেতে হয়৷’’

লিসবন শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি স্কুল এমনই একঝাঁক বিড়ালের নতুন কলোনি হয়ে উঠেছে৷ সারাক্ষণ বিড়াল ঘোরাফেরা করছে৷ সহকারী প্রিন্সিপাল ও শিক্ষিকা হিসেবে আঙ্গেলা লোপেস মনে করেন, এ ক্ষেত্রে সঠিক শিক্ষা অত্যন্ত জরুরি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মতে, প্রাণীদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ শেখাও জরুরি৷ আমরা ভালো নাগরিক সম্পর্কে অনেক কথা বলি৷ প্রাণী সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির এটা ভালো উপায়৷’’

আনা দুয়ার্তেও এ বিষয়ে সম্পূর্ণ একমত৷ ‘ক্যাট পেট্রোলিং’ এই উদ্যোগের সূচনা হতে পারে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মতে, এটা সূচনামাত্র৷ সমস্যার সমাধান করতে আমাদের আরও মানবিক ও পরিবেশবান্ধব সমাধানসূত্র চাই৷’’

পথিকৃৎ হিসেবে তাঁদের প্রতি বিপুল প্রত্যাশা রয়েছে৷ তা সত্ত্বেও লিসবনের ‘ক্যাট পেট্রোলিং' আপাতত তার কাজ করে চলেছে৷

নর্মান স্ট্রিগেল/এসবি