‘‘লুটেপুটে খেতেই দুর্নীতিবাজরা গাছ রক্ষা করতে চাইছেনা'' | পাঠক ভাবনা | DW | 16.01.2018
  1. Inhalt
  2. Navigation
  3. Weitere Inhalte
  4. Metanavigation
  5. Suche
  6. Choose from 30 Languages

মতামত

‘‘লুটেপুটে খেতেই দুর্নীতিবাজরা গাছ রক্ষা করতে চাইছেনা''

যশোর রোডের গাছ কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন ডয়চে ভেলের পাঠকরা৷ বাংলা বিভাগের ফেসবুক পাতায় এই বিষয়ে নানা মন্তব্য করেছেন তাঁরা৷

মোহাম্মদ আরাফাত লিখেছেন, ‘‘গাছগুলো কেটে ফেলা হবে৷ একটা দুটো নয়, দুই হাজার তিনশো বারোটি গাছ৷ গত কয়েকদিনে ফেসবুকে অনেক চিন্তাশীল বন্ধুদের এই গাছ কাটার বিষয়ে প্রতিবাদে সোচ্চার হতে দেখে আমি আশাবাদী হই৷''

ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ বেলায়াতে হোসেন বলেন, ‘‘যশোর রোডটি এশিয়ান হাইওয়ের অংশ৷ দিন দিন এর গুরুত্ব বাড়ছে৷ ভবিষ্যতে গুরুত্ব আরো বাড়বে৷ তাই এই সড়কটি সম্প্রসারণের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে৷ চার বছর পর এটাকে ফোর লেনের সড়কে পরিণত করার কাজ শুরু হবে৷ ভবিষ্যতে সিক্স লেনও হতে পারে৷ কোনোভাবেই গাছ রেখে সিক্স লেন করা সম্ভব নয়৷''

তবে ডয়চে ভেলের পাঠক, মঈন আহমেদ শতভাগ নিশ্চিত যে, গাছগুলি রেখেই ছয় লেনের রাস্তা তৈরি সম্ভব৷ তিনি বলেন, ‘‘এসব চোরের দল সরকারি কর্মকর্তারা লুটপাট করার জন্য এই মহামূল্যবান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত এই গাছগুলিকে টার্গেট করেছে৷ কারণ যশোর রোডে যে বৃহদাকারের গাছ আছে সেগুলোর বাজার মূল্য হাজার কোটি টাকা৷''  মঈন আহমেদের সঙ্গে একমত জলিলুর রহমান, সুয়েব রহমান ও তৌফিকুল ইসলাম৷ জলিলুর রহমান লিখেছেন, ‘‘আসল কথা এই গাছগুলো দুর্নীতিবাজরা লুটেপুটে খেতেই রক্ষা করতে চাইছেনা৷'' সুয়েব রহমানও মনে করছেন, গাছ কেটে বিক্রি করে টাকা বানাবেন সরকারি কর্মকর্তারা৷ তবে পাঁচ বছরের মধ্যে রাস্তা হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান তিনি৷ সৈয়দ কামরুল হাসান আজাদ লিখেছেন, ‘‘রাস্তা বিকল্প পথে ঘুরিয়ে নিলে ঠিকই সম্ভব৷ এ রাস্তাটা না হয় এমনই থাক৷ কিছু অর্থ না হয় খরচ হবে, তা তো গাছ কাটলেও হবে৷'' পাঠক নূর মোহাম্মদ রিপন কিন্তু  গাছ কাটার বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘কেনো পদ্মা সেতুর জন্য বড় বড় খাল ভরাট করে রাস্তা বানান, এই গাছগুলো না কেটে কি রাস্তা বানানোর বিকল্প ব্যবস্থা কি নাই? এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাহায্য চাওয়ার পরামর্শ তাঁর৷ তিনি মনে করেন, এতে নাকি হাজার হাজার বুদ্ধি ও ম্যাপ পাওয়া যাবে৷

 

তবে পাঠক সৌরভ  গাছ কাটার পরিবর্তে দেশের অর্থনীতি চাঙা করার পরামর্শ দিয়েছেন৷ কীভাবে তা সম্ভব সেকথাও জানিয়েছেন তিনি৷ সৌরভ লিখেছেন, ‘‘এসব সিক্স লেন-এর রাস্তা দরকার নাই৷ দেশ থেকে আগে দারিদ্রতা দূর করেন৷ দেশের অর্থনীতি চাঙা রাখতে পর্যটন খাতের উন্নতি করেন৷ পর্যটন শিল্পের উন্নতির জন্য আগে বাংলাদেশ এর নদীগুলোকে কাজে লাগান৷ আর পর্যটকদের ১০০ ভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন৷ বিদেশি পর্যটকদের বাংলাদেশে আনার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন৷ উদাহরণ স্বরুপ মালদ্বীপ এর কথা আমরা চিন্তা করতে পারি৷''

মাঝখানে গাছগুলো রেখে দুই পাশে তিন লেন করেও ছয় লেনের রাস্তা করা যায়, বলে মনে করেন পাঠক কাশেম৷ তাঁর পরামর্শ, বর্তমান রাস্তাটাকে পথচারীদের জন্য উন্মক্ত করে আরও কিছু ফুল জাতীয় গাছ লাগানো যেতে পারে৷

এদিকে পাঠক নারায়ণ বিশ্বাস কিন্তু গাছ কাটার পক্ষে মত জানিয়েছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘এসব গাছে কোন পাতা নাই, তাই পুরাতন গাছগুলি কেটে রাস্তা বানিয়ে নতুন গাছ লাগানোই সবচেয়ে ভালো বলে আমার মনে হয়৷''

মিজান খান দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি চান৷ তাঁর মতে, ‘‘যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য গাছ কাটা যেতে পারে৷ একটি দেশকে উন্নতর দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য উন্নত রাস্তার কোনো বিকল্প নেই৷''

সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার

সম্পাদনা: জাহিদুল হক

নির্বাচিত প্রতিবেদন