শরণার্থী সংকটের একেক দিন
ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে আফ্রিকার শরণার্থীদের আসা এখনও বন্ধ হয়নি৷ কিন্তু তুরস্ক হয়ে তথাকথিত ‘বলকান রুট’ ধরে প্রধানত সিরিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তানের হাজার হাজার শরণার্থী আসছেন পশ্চিম ইউরোপের দিকে৷
১৩ই জুলাই: কাঁটাতারের বেড়া
এদিন সার্বিয়ার সঙ্গে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া তৈরি করা শুরু করে হাঙ্গেরি৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে মোরাহালোম গ্রামের দৃশ্য৷ দু’টি দেশের মধ্যে প্রায় ১৭৫ কিলোমিটার সীমান্ত জুড়ে এই চার মিটার উঁচু বেড়া ইউরোপ অভিমুখী উদ্বাস্তুদের স্রোতের ধারাই পাল্টে দেয়৷
২৫শে আগস্ট: খোলা দরওয়াজা
এদিন জার্মানি ঘোষণা করে যে, সিরীয় উদ্বাস্তুরা জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করতে পারবেন, তা তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে দেশেই প্রথম পা দিন না কেন৷ ছবিতে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমেজিয়ের ফ্রিডলান্ড শরণার্থী আবাসে শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন৷
২রা সেপ্টেম্বর: একটি শিশুর মৃত্যু
তিন বছরের কিশোর আইলান কুর্দি-র লাশ সমুদ্রসৈকত থেকে কুড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এক আধাসামরিক পুলিশকর্মী৷ ঘটনাটি ঘটে তুরস্কের বোদ্রুম সৈকতাবাসের অদূরে৷ এই একটি ছবি সারা বিশ্বকে সচকিত, বিমূঢ়, শোকাগ্রস্ত করে৷
১২ই সেপ্টেম্বর: অকুল স্রোত
এই একটি দিনে মোট ৪,৩৩০ জন শরণার্থী হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করেন, যা কিনা একটা রেকর্ড৷ ড্রোন থেকে তোলা ছবিটিতে সার্বিয়া আর হাঙ্গেরির মধ্যে হর্গস সীমান্তকেন্দ্রে আটকে পড়া শরণার্থীদের দেখা যাচ্ছে৷ পরে হাঙ্গেরীয় পুলিশ সার্বিয়া সীমান্তে রশকে-র কাছে সৃষ্ট একটি ব্যারিকেড থেকে শরণার্থীদের হটানোর জন্য কাঁদানে গ্যাস ও জলের কামান ব্যবহার করে৷
১৩ই সেপ্টেম্বর: হাওয়া ঘুরছে
নীতি পরিবর্তন করে জার্মানি এ দিন অস্ট্রিয়ার সঙ্গে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ চালু করার কথা ঘোষণা করে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশও পরে আবার সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ চালু করে৷ ছবিতে জার্মান পুলিশ ফ্রাইলাসিং সীমান্ত পারাপার কেন্দ্রের কাছে একটি ভ্যান থেকে দু’জন কিশোরকে আটক করছে – এদের সম্ভবত মানুষ পাচারকারীরা জার্মানিতে এনেছে৷
১৫ই সেপ্টেম্বর: হাঙ্গেরি-র কড়া নীতি
এদিন হাঙ্গেরি ঘোষণা করে যে, এবার থেকে বেআইনি সীমান্ত পারাপারের জন্য তিন বছরের কারাদণ্ড হবে; সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার ক্ষতি করলে পাঁচ বছর৷ কাঁটাতারের বেড়ার সঙ্গে এই হুমকি যুক্ত হওয়াতে উদ্বাস্তুর স্রোত ধায় ক্রোয়েশিয়ার দিকে৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে ক্রোয়েশিয়ার তোভারনিক রেলওয়ে স্টেশনের একটি দৃশ্য৷
১৮ই সেপ্টেম্বর: পথের শেষ কোথায়?
উদ্বাস্তুদের তথাকথিত ‘বলকান রুটের’ এটুকু পরিবর্তন ঘটেছে যে, ক্রোয়েশিয়া এবার শরণার্থীদের হাঙ্গেরি সীমান্তে নিয়ে আসছে, যেখান থেকে তাদের অস্ট্রিয়া পাঠানো হচ্ছে৷ ছবিতে হাঙ্গেরি আর ক্রোয়েশিয়ার মধ্যে বেরেমেন্দ সীমান্ত পারাপার কেন্দ্রে একটি হাঙ্গেরীয় বাস উদ্বাস্তুদের নিয়ে যাচ্ছে৷
১৯শে সেপ্টেম্বর: অস্ট্রিয়া থেকে জার্মানি
ছবিতে উদ্বাস্তুরা অস্ট্রিয়ার সালৎসবুর্গ শহরের মুখ্য রেলওয়ে স্টেশনে জার্মানি অভিমুখী ট্রেনের অপেক্ষায় রয়েছেন৷ ইতিপূর্বে একবার দু’টি দেশের মধ্যে ট্রেনচলাচলও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল৷
২১শে সেপ্টেম্বর: গোড়ায় গলদ
তুরস্কের ইস্তানবুলের কাছে মোটরওয়ে দিয়ে পায়ে হেঁটে গ্রিক সীমান্তে অবস্থিত এদির্নে শহর অভিমুখে চলেছেন শত শত উদ্বাস্তু৷ প্রশ্ন উঠেছে: এই উদ্বাস্তু সংকটে তুরস্কের ভূমিকা কি? যদিও তুরস্ক এ যাবৎ দশ লক্ষ উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দিয়েছে৷