1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শহর জুড়ে চাদর বিছিয়ে পিকনিক

৩ ডিসেম্বর ২০২১

ছোট-বড় সব বয়সের মানুষেরই পিকনিক করতে মজা লাগে৷ ঘাসের উপর চাদর বিছিয়ে সবাই মিলে খাবার খাওয়ার আনন্দই আলাদা! সুইজারল্যান্ডের দুই শিল্পী বিশাল চাদর তৈরি করে গোটা শহরের মানুষকে নিয়ে ‘বিগনিক’-এর মজা নিচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/43nFL
ছোট-বড় সব বয়সের মানুষেরই পিকনিক করতে মজা লাগে৷ ঘাসের উপর চাদর বিছিয়ে সবাই মিলে খাবার খাওয়ার আনন্দই আলাদা! সুইজারল্যান্ডের দুই শিল্পী বিশাল চাদর তৈরি করে গোটা শহরের মানুষকে নিয়ে ‘বিগনিক’-এর মজা নিচ্ছেন৷
ছবি: DW

শিল্পের খাতিরে বিশাল এক পিকনিকের চাদর তৈরি করা হয়েছে৷ ‘বিগনিক’ নামের প্রকল্পের আওতায় সুইজারল্যান্ডের উত্তর-পূর্বে সেন্ট গালেন জেলায় মানুষের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ সুইস কনসেপ্ট আর্টিস্ট হিসেবে ফ্রাংক ও পাট্রিক রিকলিন নামের দুই যমজ ভাইয়ের মাথায় এই আইডিয়া এসেছিল৷ প্রকল্পের প্রেরণার উৎস ব্যাখ্যা করে ফ্রাংক বলেন, ‘‘আসলে দাদি আমাদের এমন পিকনিকের্ প্রেরণা দিয়েছিলেন৷ তিনি সবসময় লাল-সাদা নক্সার চেকার্ড টেবিলক্লথের উপর রাতের খাবার পরিবেশন করতেন৷ আমাদের সেটা খুব ভালো লাগতো৷ গত দশ বছর ধরে সেই টেবিলক্লথের নতুন রূপ দেবার চেষ্টা করছি এবং প্রকৃতির কোলে, শহরের মাঝে পেতে দিচ্ছি৷’’

ভাই পাট্রিক রিকলিন এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য আরো ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘বিশেষ করে ‘বিগনিক’ প্রকল্পের প্রেক্ষাপটে আমরা সচেতনভাবে সীমা ভাঙতে চাই৷ শুধু দুটি গ্রীষ্মে নয়, দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে এই উদ্যোগ চালিয়ে যাবার পরিকল্পনা রয়েছে৷’’

২০১২ সালে ‘বিগনিক'-এর স্বপ্নের সূত্রপাত ঘটেছিল৷ জেলার সব মানুষের জন্য একটি করে চাদরের ব্যবস্থা করাই লক্ষ্য৷ সম্ভবত ২০৪০-এর দশকের শেষের মধ্যেই সেটা সম্ভব হবে৷ সেই চাদর তখন ১০০টি ফুটবল মাঠের সমান বড় হবে৷

১৯৯৯ সালে দুই যমজ ভাই ‘স্টুডিও ফর স্পেশাল ওয়ার্কস’ গড়ে তোলেন৷ তাঁরা একেবারে অভিনব আর্ট অ্যাকশনের জন্য বিখ্যাত৷ যেমন খোলা আকাশের নীচে ‘জিরো স্টার হোটেল’ তৈরি করে তাঁরা ভোগবিলাসের নতুন মাত্রা দিতে চেয়েছিলেন৷ সামাজিক আদানপ্রদানের লক্ষ্যে তাঁরা জুরিখ শহরে পানীয় জলের ফোয়ারা তৈরি করেন৷

বিগনিক : বিশাল চাদরে শহর জুড়ে পিকনিক

অতিকায় পিকনিকের চাদরও গভীর স্তরের এক কনসেপ্ট আর্ট৷ পাট্রিক রিকলিন মনে করেন, ‘‘আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে সরাসরি রাজনৈতিক বার্তা রাখছি না৷ কিন্তু নিজের একান্ত বৃত্ত ছেড়ে প্রকাশ্যে কাজ করলে অরাজনৈতিক থাকাও সম্ভব নয়৷ এই চাদরের উপর এমন অপ্রচলিত সমাবেশ সব সীমারেখা ভেঙে দিচ্ছে৷ সবাই সমান হয়ে উঠছে৷’’

শুধু ‘বিগনিক' নয়, সেই প্রকল্পের প্রস্তুতি পর্বেও সেন্ট গালেনের মানুষের অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ এত চাদর জোগাড় করতে দুই শিল্পী প্রায়ই স্থানীয় মানুষের বাসায় বেল বাজান৷ প্রায় সব সময়েই ভাগ্য ভালো থাকে, সবাই তাঁদের ভিতরে আসতে বলেন৷ এখনো পর্যন্ত তারা প্রায় ৩,০০০ চাদর সংগ্রহ করেছেন৷ প্রতি বছর সেই সংখ্যা বেড়ে চলেছে৷

স্কুল, স্টেশন এবং পথচারীদের জন্য নির্দিষ্ট এলাকায় সেই সব চাদর সেলাই করে জোড়া দেওয়া হয়৷ কেউ কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই কাজে হাত লাগান, বাকিরা পেশাদার দরজি৷ চারটি করে চাদর জুড়ে দুই দিকেই এক মিটার চল্লিশ সেন্টিমিটার মাপের বড় মডিউল তৈরি করা হয়৷ তারপর প্রতিটি কোণে আঠালো ভেলক্রো স্ট্রিপ লাগানো হয়৷ এভাবে সব টুকরো জুড়ে বিশাল অতিকায় এক চাদর সৃষ্টি হয়৷ সেই কর্মযজ্ঞের আওতায় স্থানীয় মানুষও পরস্পরের সান্নিধ্যে আসেন৷ ফ্রাংক বলেন, ‘‘নতুন এক সামাজিক ঐতিহ্য সৃষ্টি করাই বিগনিকের লক্ষ্য৷ কোনো এক সময় এই সৃষ্টিকর্ম সাংস্কৃতিক মূলধন হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বলে আমরা নিশ্চিত৷’’

জনপ্রিয় এই প্রকল্প সত্যি এক ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে৷

টেওডোরা মাভ্রোপুলোস/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান