1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘শিক্ষকদের উদাসীনতায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা খেলায় পিছিয়ে’

সমীর কুমার দে ঢাকা
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

মনিটরিংয়ে অভাব এবং শিক্ষকদের উদাসীনতার কারণেই খেলাধুলায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কায়সার আহমেদ৷

https://p.dw.com/p/3igRs
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কায়সার আহমেদছবি: Privat

ডয়চে ভেলে : মাদ্রাসাগুলোতে কি খেলাধুলার পর্যাপ্ত অবকাঠামো আছে? শিক্ষার্থীরা কি খেলাধুলার সুযোগ পায়?

অধ্যাপক কায়সার আহমেদ : অবশ্যই মাদ্রাসাগুলোতে খেলাধুলার পর্যাপ্ত অবকাঠামো আছে৷ একটা মাদ্রাসার অনুমোদন দেওয়ার আগে কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়৷ এর মধ্যে কতটুকু জমি লাগবে সেটার একটা বাধ্যবাধকতা আছে৷ সুতারাং জমির যে হিসাব তার মধ্যে ভবন করা হলে তাতে কতটুকু জমি লাগে, খেলার জন্য কতটুকু মাঠ থাকবে, সেটা কিন্তু আগেই চূড়ান্ত করা হয়৷ অনুমোদিত সকল মাদ্রাসায় খেলাধুলার অবকাঠামোগত ব্যবস্থা আছে৷ 

বিনোদনের জন্য সংস্কৃতি চর্চার কী ধরনের ব্যবস্থা আছে?

অ্যাকাডেমিক কার্যকলাপ শেষ করে সংস্কৃতি চর্চার ব্যবস্থা ঠিক ওই অর্থে নেই৷ কিন্তু আমাদের অধিদপ্তরের যে ক্যালেন্ডার আছে, সেখানে কিন্তু তাদের বাৎসরিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার ব্যবস্থার কথা বলা আছে৷ বছরের কোন সময় এটা হবে, সেটাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে৷ ইতিহাস, ঐতিহ্যের সঙ্গে মিল রেখে আমাদের জাতীয় দিবসগুলো কিন্তু পালন করা হয়৷

‘নির্দেশনা আছে, বছরে অন্তত একবার ক্রীড়া অনুষ্ঠান আয়োজন করতে হবে’

সরকার থেকে কি খেলাধুলার জন্য কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়?

সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হয় কিনা সেটা আমি বলতে পারবো না৷ তবে আমাদের অধিদপ্তর থেকে কী পরিমান বরাদ্দ দেওয়া হয়, সেটা আমি বলতে পারি৷ শিক্ষার্থীরা যখন ভর্তি হয় বা ফরম পূরণ করে, তখন ক্রীড়া ফি'র নামে একটা নির্দিষ্ট অর্থ নেওয়া হয়৷ এই অর্থ দিয়ে আমাদের অধিদপ্তরের উদ্যোগে দুটো ক্রীড়া অনুষ্ঠান হয়৷ একটা শীতকালীন ও আরেকটা গ্রীষ্মকালীন৷ এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রতিষ্ঠান থেকে উপজেলা, জেলা ও বিভাগ হয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিযোগিতা হয়৷ আমার বোর্ডে এই অর্থবছরের কথাই যদি বলি, আমরা ৩৫ লাখ টাকা রেখেছি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাঠ উন্নয়নের জন্য৷ এগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ি আমরা দেই৷ এর বাইরেও বোর্ড চেয়ারম্যানের নিজস্ব ফান্ড আছে, প্রয়োজন হলে সেখান থেকেও বরাদ্দ দেওয়া হয়৷ ক্রীড়া সামগ্রীর জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে বরাদ্দ দেই৷ সেখানেও ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ আছে৷  

মাদ্রাসাগুলোতে তো শরীর চর্চার শিক্ষকের পদ আছে, কিন্তু অধিকাংশ মাদ্রাসায় শিক্ষক নেই কেন?

এটা পুরোপুরি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা৷ এমন না যে, ওই শিক্ষক নিলে এমপিও হবে না৷ কোনো প্রতিষ্ঠান না নিয়ে থাকলে তারা অবহেলার কারণে নেয়নি৷ এই পদে শিক্ষক নিলে সঙ্গে সঙ্গে এমপিও হয়ে যায়৷

একজন শিক্ষার্থীর সুস্থভাবে বেড়ে উঠার জন্য তো খেলাধূলা বা বিনোদনের ব্যবস্থা থাকা উচিত, তাই না?

অবশ্যই৷ শুধু লেখাপড়া তো জীবনের একটা অংশ৷ জীবনকে সুন্দর করার জন্য বিনোদন, শরীর চর্চা, খেলাধুলা এর কোন বিকল্পই নেই৷

খেলাধুলার জন্য শিার্থীদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়?

একটা প্রতিষ্ঠান শুরু ও শেষ হওয়ার একটা সময় তো নির্দিষ্ট করা আছে৷ এর মাঝখানে একটা টাইম আছে, যেটা আমি-আপনিও ভোগ করে এসেছি৷ এই সময়ে আমরা যতটুকু খেলাধুলা করেছি, স্কুল ছুটি হওয়ার পর আমরা কিন্তু শরীর চর্চা শিক্ষকের তত্বাবধানে টিম করে খেলাধুলা করেছি৷ এখনো হয়তো আছে৷ তবে না থাকলে থাকা উচিত৷

সাধারণ স্কুল-কলেজে বাৎসরিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা হয়৷ মাদ্রাসায় কি এমন কিছু হয়?

আমার নিজের জায়গাতে, আমরা পারিবারিকভাবে একটা মাদ্রাসা করেছি৷ সেটাতে আমি দেখি, বছরে শুরুর দিকে জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি মাসে তারা বাৎসরিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানটা করে৷ অধিদপ্তরেরও নির্দেশনা আছে, বছরে অন্তত একবার ক্রীড়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে৷

খেলাধুলার ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে সবসময় স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরা ভালো করে৷ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে কেন?

মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও আছে৷ তবে আমি আপনার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত যে, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা একটু পিছিয়ে আছে৷ মনিটরিংয়ের অভাব বা শিক্ষকদের উদাসীনতার কারণেই এটা হয়েছে৷

ধর্মীয় দিক থেকে খেলাধুলায় কোনো বাধা আছে কি?

কোনো অভিযোগ আকারে আমরা এমন কিছু পাইনি৷ কোনো প্রতিষ্ঠান থেকেও আমাদের কাছে এ ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি৷ এমনকি কোনো অভিভাবকও আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি যে, তার ছেলে খেলাধুলা করতে চায়, কিন্তু প্রতিষ্ঠান সেই সুযোগ দিচ্ছে না৷ আমার পক্ষে প্রতিটা মাদ্রাসা দেখা সম্ভব না৷ তবে আমি যখন বাড়িতে যাই তখন কিন্তু দেখি, আমার মাদ্রাসায় মাঠে ছাত্ররা হয় ফুটবল বা ক্রিকেট খেলছে৷

মাদ্রাসায় খেলাধুলা বা বিনোদন নিয়ে আপনাদের কোনো পরিকল্পনা আছে?

পরিকল্পনা বলতে চাই না, আমার একটা সাজেশন আছে৷ সেটা হলো, শরীর চর্চার শিক্ষককে অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে নিয়ে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন প্রতিষ্ঠানের মাঠে খেলাধুলার ব্যবস্থা করতে হবে৷ অধিকাংশ বলছি, এই কারণে যে, অনেক শিক্ষার্থী শারীরিকভাবে খেলাধুলার জন্য বা মাঠে দৌড়-ঝাঁপ করার জন্য ফিট না-ও থাকতে পারে৷ এটা নিশ্চিত করতে হবে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের৷

আপনি তো অনুমোদিত মাদ্রাসার কথা বললেন৷ অধিকাংশ বেসরকারি মাদ্রাসায় খেলাধুলার কোনো ব্যবস্থাই নেই৷ বোর্ডের এক্ষেত্রে কিছু করণীয় আছে কি?

অনুমোদিত মাদ্রাসাগুলোকেই আমাদের পক্ষে মনিটরিং করা সম্ভব৷ যে প্রতিষ্ঠানকে আমরা অনুমোদন দেইনি তার কোনো পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই৷ সে কী করছে আমরা জানি না৷ ১৫ হাজার মাদ্রাসাকে আমাদের মনিটরিং করতে হয়৷ তার বাইরে গিয়ে ওইগুলো মনিটরিং করতে পারলে হয়ত ভালো হতো৷ কিন্তু সেটা বোধহয় সম্ভব না৷

গতবছর জুনের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য