পাঠক বিলাল হোসেন কোরেশির মতে, ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে শিশুদের হাতে স্মার্টফোন না দেয়াই উত্তম৷ আর আমজাদ হোসেন বলছেন, শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার দাবি নিঃসন্দেহে একটি অর্থপূর্ণ চিন্তা, যা অন্যান্য দেশও অনুসরণ করতে পারে৷ পাঠক আলী আকবরও এই দাবিকে সমর্থন করেছেন এবং এতে খুব ভালো হবে বলে তাঁর ধারনা৷
পাঠক ফরিদ আহমেদ ইমন লিখেছেন, বাংলাদেশে এই নিয়ম হলে খুব ভালো হবে৷ কামরুন নাহারও ইমনকে সমর্থন করেছেন৷
-
জার্মানিতে শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব
৯০ ভাগ শিশু স্মার্টফোন ব্যবহার করে
জার্মানিতে ১৩ বছর বয়সি শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ শিশুই স্মার্টফোন ব্যবহার করে৷ আর তার ভীষণ ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে শিশুদের শরীর ও মনে৷ জার্মানিতে ১৪ বছরের কমবয়সি শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব করেছেন ইন্টারনেট বিষয়ক সরকারি উপদেষ্টা ইউলিয়া ফন ভাইলার৷
-
জার্মানিতে শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব
সহিংসতার ছবি
ইউলিয়া ফন ভাইলার জানান, মাত্র ৯ বছর বয়সেই শিশুরা ইন্টারনেটে সহিংসতার ছবি দেখে৷ তাই তিনি স্মার্টফোন দেখার ক্ষেত্রে শিশুদের যেন বয়সসীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়, অর্থাৎ বয়স ১৪ পূর্ণ হলে যেন তারা স্মার্টফোন ব্যবহারের অনুমতি পায়, সেই প্রস্তাব করেছেন৷
-
জার্মানিতে শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব
পর্ণ দেখা
৯ থেকে ১১ বছর বয়সিদের মধ্যে সহিংসতা ও পর্নো ছবি দেখার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে৷ এমনকি সববয়সিদের মধ্যে ভিডিও তৈরি করে ইন্টারনেটে ছাড়া হচ্ছে৷ জার্মান পুলিশ বলছে, এ ধরনের ভিডিওর মাধ্যমে হয়রানির শিকার হওয়া শিশুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে৷
-
জার্মানিতে শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব
বেশি খেলাধুলা করা উচিত
আজ আর কারো অজানা নয় যে স্মার্টফোন ব্যবহার শিশুদের মনোযোগে ব্যঘাত ঘটায়, এতে স্কুলের ফলাফলও খারাপ হয়৷ খেলাধুলা না করা বা কম করার কারণে আজকের শিশুরা নানা অসুখ ও অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছে বলে জার্মানির শিশু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন৷
-
জার্মানিতে শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব
ডাক্তারদের পরামর্শ
বন্ধুদের মধ্যে মোবাইলে মেসেজ না পাঠিয়ে নিজেদের মধ্যে দেখা করা উচিত৷ সরাসরি ভাবের আদান-প্রদান, খেলাধুলা ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকাই শিশুদের সুস্থ রাখে বলে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷
-
জার্মানিতে শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব
স্মার্টফোন , ল্যাপটপ বহারের নিয়ম
জার্মানির পরিবার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া পরামর্শদাতা কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন৷ এগুলো হচ্ছে, পাঁচ বছর পর্যন্ত দিনে আধ ঘণ্টা আর ছয় থেকে ৯ বছর বয়সিরা দিনে একবার একঘণ্টা করে স্মার্টফোন ব্যবহারের অনুমতি পাবে৷ আর দশ বছরের বেশি যাদের বয়স, তারা সপ্তাহে নয় ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারে৷ তবে যে শিশু তিনদিনে নয় ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করবে, তার ফোন সপ্তাহের বাকি দিনগুলো পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হবে৷
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার
শামসুল হুদা নিশ্চিত যে, এতে খুব ভালো হবে৷ কিন্তু তিনি ভাবছেন একটু অন্যরকম করে, অর্থাৎ তাঁর মন্তব্য এরকম, ‘‘যে হারে তারবিহীন প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ঘটছে, তাতে নতুন নতুন সমস্যা দেখা দিবে৷ আরঅ্যান্ডডি (গবেষকরা) আমাদের নতুন প্রযুক্তির সংবাদ দেয় ঠিকই, কিন্তু খারাপ দিকগুলোর কথা কিছুই জানায় না৷''
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: জাহিদুল হক
-
ওরা ইন্টারনেটে যা দেখে
অতিরিক্ত ইন্টারনেট টিন-এজারদের নিঃসঙ্গ করে তোলে
সম্প্রতি ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সি ২,৪০০ কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে একটি জরিপ করা হয়েছিলো৷ যারা দিনের ৬ ঘণ্টাই কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল বা ট্যাবলেটের সামনে বসে সময় কাটায়, তাদের সমবয়সি বা বন্ধুবান্ধবদের সাথে মেশার তেমন কোনো আগ্রহ নেই৷ কারণ সামনে থাকা যন্ত্রটিই তাদের বড় বন্ধু ৷
-
ওরা ইন্টারনেটে যা দেখে
কম্পিউটার গেম
যখন মানুষের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার সবচেয়ে ভালো সময় ঠিক সেসময়ই যদি তারা দিনের এতটা সময় কম্পিউটার গেম বা যৌন বিষয়ক ওয়েবসাইট নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটায় তাহলে কারো সাথে বন্ধুত্ব হওয়া খুব কঠিন৷ এ কথা বলেন গবেষক টিমের প্রধান ডা.মানফ্রেড বয়টেল৷
-
ওরা ইন্টারনেটে যা দেখে
নেশা
যাদের নিয়ে গবেষণা করা হয়, তাদের মধ্যে শতকরা ৩.৪ শতাংশই ইন্টারনেটে নেশাগ্রস্ত৷ অর্থাৎ তারা দিনে ৬ ঘণ্টার বেশি অনলাইনে থাকে, অন্য কিছুর প্রতি তাদের কোনো আগ্রহ নেই৷ ১৩.৮ শতাংশ কিশোর-কিশোরীদের নেশা না হলেও তারাও ইন্টারনেটের প্রতি খুবই আগ্রহী৷ সময়ের দিক থেকে ছেলেমেয়ে সমানভাবেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে৷
-
ওরা ইন্টারনেটে যা দেখে
ছেলে-মেয়ের পার্থক্য
সময়ের দিক থেকে পার্থক্য না থাকলেও ছেলে এবং মেয়েদের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে৷ যেমন মেয়েরা বেশি সময় কাটায় সামাজিক যোগাযোগ এবং অনলাইন শপিং-এ, আরা ছেলেরা বেশি সময় খরচ করে কম্পিউটার গেম এ, এবং যৌনআনন্দে৷
-
ওরা ইন্টারনেটে যা দেখে
বন্ধু চাই
যেসব টিন-এজ বা কিশোর-কিশোরীরা সমাজে ভালোভাবে মেলামেশা করতে পারেনা, তারা এমন অনলাইন কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকে যেগুলোতে সামাজিক যোগাযোগ কম হয়৷ এ তথ্য জানান ড.বয়টেল তাঁদের ক্লিনিকের আউটডোর পেশেন্ট হিসেবে আসা কম্পিউটারে ‘নেশা’ টিন-এজারদের সম্পর্কে৷
-
ওরা ইন্টারনেটে যা দেখে
সামাজিকভাবে মেলামেশার পরামর্শ
এরকম ছেলে-মেয়েদের বাবা-মা এবং শিক্ষকদের প্রতি ডা.মানফ্রেড বয়টেলের পরামর্শ, টিন-এজারদের প্রযুক্তির উন্নয়ন ব্যবহারের পাশাপাশি সামাজিকভাবে মেলামেশার বিষয়টির দিকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া এবং লক্ষ্য রাখা উচিত৷
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার