1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আমরা আজও শিশুবান্ধব হতে পারিনি

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৪ জানুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশের ঝিনাইদহে তিন শিশুকে হত্যার নৃশংস ঘটনা আবারো মানুষকে নাড়া দিয়েছে৷ প্রশ্ন উঠেছে শিশুর প্রতি আমাদের মানসিকতা নিয়ে৷ বিশ্লেষকরা বলছেন, শিশুর প্রতি মানসিকতার পরিবর্তন না হলে এমন নৃশংসতা কখনোই কমবে না৷

https://p.dw.com/p/1HXgz
UN Millenniumsziele Kind in einem Slum in Bangladesch
ছবি: UN Photo/Kibae Park

ঝিনাইদহের শৈলকুপার কবিরপুর গ্রামে পারিবারিক বিরোধের জের হিসেবে শিশু আমিন হোসেন (৬), শিবলু হোসেন (১০) ও মাহিম হোসেনকে (১২) ঘরের মধ্যে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া যায় রবিরবার৷ এদের মধ্যে আমিন এবং শিবলু সহদর৷ এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করা হচ্ছে তাদেরই আপন চাচা ইকবাল হেসেনকে৷

শৈলকুপা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমদাদ হোসেনের জানান, ‘‘পারিবারিক কলহের কারণে প্রতিশোধ নিতেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে৷''

তিনি জানান, ‘‘ইকবাল হোসেন তার ভাই দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে কলহের জের ধরে ঘরে ঢুকে প্রথমে তিনটি শিশুকে মারধর করে৷ ঐ সময় ঘরের অন্যান্য লোকজন পাশের বাড়িতে ছিলেন৷ এক পর্যায়ে ঘরের মধ্যে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারের গ্যাস ছেড়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে দরজায় তালা বন্ধ করে দেন ইকবাল৷ সেই আগুনে পুড়েই নিহত হয় তিনটি শিশু৷ এই ঘটনায় ঝিনাইদহসহ সারা দেশের মানুষ স্তম্ভিত৷

এর আগেও বাংলাদেশের সিলেটে শিশু রাজন এবং খুলনায় রাকিব হত্যার ঘটনা দেশের মানুষকে আলোড়িত করেছিল৷ অথচ এরপরও থামছে না শিশুর প্রতি সহিংসতা

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত এক হাজার ৭৩০টি শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে বাংলাদেশে৷

র‌্যাব-এর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালে তিন মাস মিলিয়ে সারা দেশে শতাধিক শিশু হত্যার শিকার হয়েছে৷ এর মধ্যে ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে ৩৫, সেপ্টেম্বরে ৪০ এবং অক্টোবর মাসে ২৫ জন শিশু হত্যার তথ্য জানায় র‌্যাব৷ এই শিশুরা মূলত পারিবারিক কলহ, মুক্তিপন আদায় এবং চুরিসহ নানা অপবাদে হত্যার শিকার হয়৷

বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোটে এলিনা খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা আমাদের দীর্ঘ দিনের পর্যবেক্ষণে দেখেছি যে, শিশুর প্রতি আমাদের মানসিকতায় কোনো পরিবর্তন আসেনি৷ আমরা এখনও শিশুবান্ধব হয়ে উঠতে পারিনি৷ পরিবার বা পরিবারের বাইরে – দু'জায়গাতেই এক অবস্থা৷''

এলিনা খান

তিনি বলেন, ‘‘শিশুরা অসহায়৷ তারা প্রতিবাদ করতে পারে না৷ একই সঙ্গে তারা প্রলোভনের ফাঁদেও পা দেয় সহজে৷ এছাড়া বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন মানুষ তাদের শিকারে পরিণত করে৷ শিশুরা যার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত না, সে সব বিষয়েও জড়িয়ে পড়ে৷ তাদের হত্যা করে বা নির্যাতন করে সুবিধা নিতে চায় অপরাধীরা৷''

এলিনা খান বলেন, ‘‘দেশে শিশু নির্যাতনবিরোধী কঠোর আইন আছে৷ কিন্তু মানসিকতার পরিবর্তন না হলে এই আইনে কাজ হবে না৷ এর জন্য প্রয়োজন ব্যাপক প্রচারণা এবং সামাজিক আন্দোলন৷''

তাঁর কথায়, ‘‘শিশুর প্রতি কেমন আচরণ করতে হবে, তাদের সঙ্গে কিভাবে কথা বলতে হবে – এটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পড়াতে হবে৷ এর চর্চা করতে হবে৷ এ সংক্রান্ত নীতিমালা ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে সংবাদমাধ্যমে৷''

আমাদের শিশুবান্ধব না হয়ে ওঠার মূল কারণ কী বলে আপনার মনে হয়? জানান নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান