শীতে গরম গরম ১০ জার্মান স্যুপ

এই স্যুপ জার্মানির নিজস্ব না হলেও শরৎকালে প্রায় প্রতিটি জার্মান রেস্টুরেন্টের মেন্যুতেই মিষ্টিকুমড়ার স্যুপ পাওয়া যায়৷ স্বাস্থ্যকর এই স্যুপ ক্ষুধা মেটানোর জন্যও আদর্শ৷

দক্ষিণ জার্মানিতে, বিশেষ করে বাভারিয়া রাজ্যে এই স্যুপ বেশ বিখ্যাত৷ প্রতিবেশ দেশ অস্ট্রিয়া থেকে আসা এই স্যুপ আসলে প্যানকেকের টুকরো দিয়ে তৈরি করা হয়৷ স্বাদ বাড়ানোর জন্য স্যুপে রসুন পাতা, পার্সলি, পেপার এবং পছন্দমতো অন্য মশলাও যোগ করা যেতে পারে৷

শীতে শরীর গরম করে তোলার জন্য এই স্যুপ বেশ ভালো৷ সবজি এবং মাংস দিয়ে এর ঝোল তৈরি করা হয়৷ কেউ কেউ গাজর, দুধ, বাদাম, মাখন এবং ডিমও যোগ করেন এর সঙ্গে৷ অনেক অঞ্চলে শাক বা মাছ দিয়ে স্যুপ তৈরি করে তার মধ্যে ডাম্পলিংও দেয়া হয়৷ জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের মুখের স্বাদ ফেরাতে এই স্যুপের জুড়ি নেই৷

স্যুপের সঙ্গে বিয়ার! চোখ নিশ্চয়ই কপালে উঠবে আপনাদের৷ কিন্তু বিয়ার বলতে জার্মানরা পাগল৷ বাভারিয়ার রাজধানী মিউনিখ তো প্রতি বছর বিয়ারের বিশাল উৎসবই পালন করে থাকে৷ এই স্যুপে মাখনের মধ্যে পেঁয়াজ কুচি, টোস্ট করা ব্রেডের গুড়া দিয়ে তার সঙ্গে মাংসের সুরুয়া, বিয়ার, লবণ ও পেপার যোগ করা হয়৷ 

জার্মানির উত্তরে নর্ড রাইন-ভেস্টফালিয়া রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী স্যুপ এটি৷ রং দেখে কেউ কেউ আগ্রহ হারালেও শীতে সকালে শরীরের জন্য এই স্যুপ বেশ উপকারী৷ ফেব্রুয়ারি-মার্চে কার্নিভালের সময় এর চাহিদাও বাড়ে৷ কুচি করে কাটা সসেজ, বআর মটর দানা দিয়ে তৈরি এই স্যুপের সঙ্গে পরিবেশন করা হয় রুটির স্লাইস৷

জার্মান স্যুপ ইনস্টিটিউট এর মতে উত্তর জার্মানির হামবুর্গকে বলা যেতে পারে দেশটির ‘স্যুপ রাজধানী’৷ জার্মানির সবচেয়ে বড় বন্দরনগর হামবুর্গ৷ ফলে মাছের স্যুপ পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকাটাই সেখানে স্বাভাবিক৷ তেলাপিয়া থেকে শুরু করে চিংড়ি, ঝিনুক এমনকি সামুদ্রিক মাছও অবশ্য থাকে এই স্যুপে৷ এছাড়াও ঈল মাছের স্যুপ, প্লাম বা চেরি স্যুপের জন্যও বিখ্যাত হামবুর্গ৷

বার্লিনে অনেক মেন্যুতেই আলুর স্যুপ এক অপরিহার্য অংশ৷ অবশ্য বার্লিন এবং পাশের ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যে বার্লি স্যুপ, প্লাম স্যুপও বেশ জনপ্রিয়৷

এই স্যুপটি হাঙ্গেরিতে জনপ্রিয় বিফ গুলাশ হিসেবে ৷ মাংসের সস আলু বা নুডলসের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়৷ ধীরে ধীরে জার্মানিতেও এ স্যুপ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে৷ 

রসুনের স্যুপ শুনে অনেকে গন্ধের কথা চিন্তা করে নাক কুঁচকাতে পারেন৷ কিন্তু স্বাদের দিক থেকে এই স্যুপ অতুলনীয়৷ তবে এই স্যুপ তৈরিতে রসুনের কোয়া নয়, বরং রসুন গাছের পাতা ও ফুল ব্যবহার করা হয়৷ ঠাণ্ডা দূরে রাখতে সকাল সকাল এই স্যুপ বেশ কার্যকর হতে পারে৷

জার্মানরা অ্যাসপারাগাস এতোটাই পছন্দ করেন, যেকোনো উছিলায় মেন্যুতে এটাকে ঢুকিয়ে দিতে চান৷ ফলে স্যুপের মতো মজাদার খাবার থেকে অ্যাসপারাগাস বাদ পড়ার কোনো কারণই নেই৷ যদিও সাদা অ্যাসপারাগাস বাজারে আসে বসন্তে৷ কিন্তু অনেক জার্মানই স্যুপ খেতে এতোদিন অপেক্ষা না করে আগেই অ্যাসপারাগাস কিনে ক্রিম বানিয়ে তা দিয়ে স্যুপ তৈরি করেন৷ আর এই স্যুপের সঙ্গে খাওয়ার জন্য তাদের পছন্দ বোগাতি নামের এক ধরনের লম্বা রুটি৷