শোকে বিহ্বল মস্কোর মানুষ
৩০ মার্চ ২০১০রাজধানী মস্কোতে সকল সরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা আজ উড়েছে অর্ধনমিত অবস্থায়, নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা এবং আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাতেই এই কর্মসুচি৷সরকারি-বেসরকারি রেডিও ও টেলিভিশনে নিয়মিত সকল আনন্দানুষ্ঠান প্রচার বন্ধ রাখা হয়েছে, প্রচার বন্ধ ছিল বিজ্ঞাপনেরও৷ গির্জাগুলো আয়োজন করেছিল বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের৷ চারিদিকে মানুষ শোকে বিহ্বল৷
সোমবার শোকের এই দিনের প্রথমভাগে জোড়া বোমা হামলা হয় যেখানে, সেখানে নিহতদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ৷ ছয় বছরের মধ্যে প্রথম এত বড় ধরণের হামলা হল৷ এর পেছনে যারা রয়েছে, তিনি সেই সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করার জন্য কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন৷ বলেছেন, এটা একটা কাপুরুষিত হামলা৷ এ ধরণের আর কোন সন্ত্রাসী হামলা যেন না ঘটে, তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভ৷ এরপরই তিনি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক বিবৃতি দিয়েছেন৷ সেখানে স্পষ্ট ভাষায় তিনি বলেছেন, সন্ত্রাসী ঘটনার সুষ্ঠু মোকাবিলায় সন্ত্রাস বিরোধী আইন সংশোধন করা হচ্ছে৷
রুশ প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুটিন মস্কোর বিস্ফোরণেরকান্ডের সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের সমূলে উৎখাত করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন৷
ইতিমধ্যেই সোমবারের এই জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে এমন সন্দেহভাজন দুই মহিলা এবং এক পুরুষকে খুঁজছে নিরাপত্তা বাহিনী৷ পুলিশের সন্দেহ এই হামলার পিছনে রয়েছে উত্তর ককেশাসের ইসলামী চরমপন্থি দলগুলো৷ অবশ্য রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ মনে করছেন, মস্কোর মেট্রো স্টেশনে সোমবারের দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে থাকা জঙ্গিদের সহায়তা থাকতে পারে৷ লাভরভ সরাসরি আল-কায়েদা জঙ্গি গোষ্ঠার নাম উল্লেখ করেননি৷ তবে তিনি বলেন, আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে সক্রিয় জঙ্গিদের সঙ্গে বোমা হামলাকারীদের যোগ থাকতে পারে৷
লাভরভকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এ ঘটনার পিছনে কি অন্য কোন দেশের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে? এর জবাবটা অবশ্য তিনি দিয়েছেন বেশ কৌশলেই৷ বলেছেন, এ বিষয়টি আমি একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছি না৷ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আফগান-পাকিস্তান সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে সন্ত্রাসীদের শক্ত ঘাঁটি আছে৷ ওখানে অনেক লোকই হামলার ছক কষতে ব্যস্ত রয়েছে৷ এটা শুধু আফগানিস্তানেই ঘটছে এমন নয়, কখনও কখনও তার চিহ্নরেখা পৌঁছে যাচ্ছে ককেশাস অঞ্চল পর্যন্ত৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক