1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ষাট গম্বুজ মসজিদের ভার্চুয়াল ভ্রমণের সুযোগ

১৫ নভেম্বর ২০২১

দূরের কোনো ঐতিহাসিক নিদর্শন অথবা হারিয়ে যাওয়া অতীতের কোনো স্থাপনা কি জীবন্ত করে তোলা যায়? বাংলাদেশের এক ভার্চুয়াল মিউজিয়াম আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করে ঠিক সেই উদ্যোগ নিচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/42zYo
Bangladesch Historische Bauwerke |
ছবি: DW/M. Mamun

বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার ষাট গম্বুজ মসজিদ তুঘলকি নির্মাণশৈলির অপূর্ব নিদর্শন৷ সেই মসজিদের অন্ধকার অলিগলি ঘুরে দেখতে এখন আর সশরীরে হাজির থাকার প্রয়োজন নেই৷ ভার্চুয়াল রিয়ালিটি প্রযুক্তির কল্যাণে যে কেউ সেখানে ঢুঁ মারতে পারে৷ ভার্চুয়াল মিউজিয়াম বাংলাদেশ উদ্যোগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশেক এ ইলাহী অনি সেই ওয়েবসাইটের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘ল্যান্ডিং পেজেই আমরা দেখতে পাবো যে বেশ কয়েকটা জায়গা নির্দিষ্ট করা আছে, যেখানে আমি টেলিপোর্ট করে যেতে পারবো৷ ধরা যাক ষাট গম্বুজ মসজিদে যেতে চাই, সেখানে টেলিপোর্ট করে যাবো৷ ওখানে সিলেক্ট করবো৷ নির্দিষ্ট জায়গায় টেলিপোর্ট করে গেলেই সাথে সাথে ষাট গম্বুজ মসজিদে ঢুকে যাবো এবং পুরো জায়গা ঘুরে ঘুরে দেখতে পারবো৷ সেখানেও হ্যান্ড কনট্রোলারের সাহায্যে টেলিপোর্ট করে করে বাইরে, ভিতরে সবকিছুই দেখতে পারবো৷ এমনকি ষাট গম্বুজের ছাদে উঠেও দেখতে পারবো পুরো ব্যাপারটা কেমন৷''

বাংলাদেশের ভার্চুয়াল মিউজিয়াম

বাংলাদেশের প্রথম ভারচুয়াল মিউজিয়াম হিসেবে সম্প্রতি এই উদ্যোগ যথেষ্ট মনোযোগ আকর্ষণ করেছে৷ দেশের ঐতিহ্যের নিদর্শনগুলির বেহাল অবস্থা দেখে ডেভেলপারদের মনে এই আইডিয়া আসে৷ ভার্চুয়াল মিউজিয়াম বাংলাদেশ উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী ও ডেভেলপার আহমেদ জামান সঞ্জীব বলেন, ‘‘ভার্চুয়াল মিউজিয়াম বাংলাদেশের আইডিয়াটা আসে ২০১৭ সালে, পানাম সিটিতে বেড়াতে গিয়ে৷ পানাম সিটিটার অবস্থা আসলে তখন অনেকটাই খারাপ ছিল৷ সেখানে ঘুরতে গিয়ে মনে হলো যে এইটা তো আর খুব বেশিদিন ধরে রাখা যাবে না৷ এটার জন্য কোনোভাবে আমরা কি কিছু করতে পারি? তখন মনে হলো যে হ্যাঁ, হয়তো একটা উপায় আছে৷ এটা ভিআর-এ ডিজিটাল রেস্টোরেশন করা যায়৷ তখন ভিআর টেকনোলজিটা একদম নতুন ছিল৷''

একদল সফটওয়্যার ডেভেলপারর সেই যাত্রা মোটেই সহজ ছিল না৷ তারা বিশাল পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করে, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে শলাপরামর্শ করে অবশেষে একটি সিমুলেশন সৃষ্টি করতে সক্ষম হন৷ আহমেদ জামান সঞ্জীব বলেন, ‘‘ছয়শ বছর আগে যখন ষাট গম্বুজ মসজিদটি তৈরি হয়েছিল, তখন সেটা আসলে কী রকম ছিল? আমাদের মূল লক্ষ্য থাকে সেটাকে বের করে আনা৷ এই জায়গায় আসলে প্রথম আমাদের চ্যালেঞ্জ যেটা হয়, সেটা হলো ডাটা বা তথ্য৷ আমরা প্রথমে যত বেশি সম্ভব ডাটা কালেকশন করি৷ তারপর সেই ডাটা সাজানো হয়, বাদ দেওয়া হয় এবং একেবারে আসল ডাটা আমরা রাখি৷ সেই ডাটা থেকে আমরা একটা সিমুলেশন করি৷ সিমুলেশনটা করার পর আমরা একটা লুক বা চেহারা পেয়ে যাই, যে জিনিসটা এ রকম৷ সেখানে থ্রিডি মডেলিং ও ডাটা স্ক্যানিংয়ের বিষয় জড়িত থাকে৷ তারপর আমরা দেশের ইতিহাসবিদ, স্থপতি ও বিশেষজ্ঞদের দেখাই৷ জিনিসটা দেখার পর তারা মতামত দেন৷ আমরা সেটিকে আরো একটি ফাইন টিউনিং করার পর একটা চেহারা স্পষ্ট হয়ে যায়৷ এই প্রক্রিয়ায় আমরা এখন কাজটা করছি৷

এই ভারচুয়াল মিউজিয়ামের বিটা ভার্সন বা প্রাথমিক খসড়া এরই মধ্যে প্রস্তুত হয়ে গেছে৷ ২০২২ সালে সেটির উদ্বোধন হওয়ার কথা৷ আশেক এ ইলাহী অনি বলেন, ‘‘এটা একটা অসাধারণ অভিজ্ঞতা এবং আমরা মনে করি যে আমরা ভারচুয়াল রিয়ালিটির মাধ্যমে আমরা অনেকটা কাছাকাছি নিয়ে যেতে পেরেছি, এখনো হয়ত পুরোপুরি শতভাগ সফল হইনি, কিন্তু আমরা সেই মান অর্জন করার আশা রাখি৷

বাংলাদেশের ভার্চুয়াল মিউজিয়ামে ইতিহাস জীবন্ত করে তোলা হচ্ছে৷ ফলে মানুষ কয়েক'শো বছর আগে ফিরে গিয়ে অতীতের স্বাদ নিতে পারেন৷

যুবায়ের আহমেদ/এসবি