1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সংক্রমণ কমলেও সতর্কতা জরুরি

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ এখন গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। মৃত্যুহারও কমছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সবকিছুই খুলেছে। এই পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা৷

https://p.dw.com/p/40PTX
Bangladesch Dhaka | Coronakrise: Impfungen für Expats
ফাইল ফটোছবি: Mortuza Rashed/DW

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে করোনা চলে গেছে- এমন ভাবনা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ আরো কমেছে। সংক্রমণের হার এখন শতকরা ৫.৯৮ ভাগ, যা একদিন আগে ছিল ৬.৬৪ ভাগ। আর ছয়মাস আগে গত মার্চের ৯ তারিখে সংক্রমণ ছিল শতরা ৫ ভাগ, ১০ মার্চ ৫.৯৮, ১১ মার্চ ৫.৮২ এবং  ১২ মার্চ ৬.৬২ ভাগ। সেই হিসেবে করোনা সংক্রমণ এখন গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছেন ৫১ জন। এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৭ হাজার ১০৯ জন।

করোনায় সংক্রমণের হার শতকরা পাঁচ ভাগের নীচে নামলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যেতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানান৷

ডা. লেনিন চৌধুরী

বাংলাদেশে এখন স্কুল-কলে, অফিস-আদালতসহ প্রায় সব কিছুই খোলা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও খুলছে ভ্যাকসিন পাওয়া সাপেক্ষে। স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে সব কিছু খোলা হলেও সেই ব্যাপারে উদাসীনতা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হলেও এখন অধিকাংশ মানুষই আর ঘরের বাইরে মাস্ক পরছেন না। মাস্ক পরাতে বাধ্য করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো তৎপরতাও নেই। শিক্ষার্থীরা মাস্ক পরে সামাজিক দূরত্ব মেনে ক্লাস করলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে অভিভাবকদের ভিড় কোনোভাবেই সামলানো যাচ্ছে না। অভিভাবকদের অনেকে মাস্কও পরছেন না। বাজার, শপিংমল, হোটেল-রেস্তোঁরা, গণপরিবহণ কোথাও স্বাস্থ্যবিধি তেমন একটা মানা হচ্ছে না। এমনকি হাসপাতালেও স্বাস্থ্যবিধি উধাও। করোনা রোগীদের ওয়ার্ডে দর্শনার্থী ও বহিরাগতদের উপস্থিতি স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি রোগীর সঙ্গে স্বজনরা থাকছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ডা. এ এস এম আলমগীর

এদিকে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর করোনা চিকিৎসার যে সংকট ও অব্যবস্থপনা দেখা যায় তারও উন্নতি হয়নি। এখনো দেশের ২৩ জেলার হাসপাতালে কোনো আইসিইউ সুবিধা নেই। ১৬ জেলায় নেই কেন্দ্রীয় অক্সিজেন প্ল্যান্ট।

নতুন ১২ হাজার চিকিৎসক ,নার্স নিয়োগের প্রক্রিয়া এখনো চলছে।

জনস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, "ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ হয়েছে। তৃতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ বেশি হয়। বাংলাদেশে অক্টোবরের শেষে বা নভেম্বরের শুরুতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই ঢেউয়ের আগে যদি আমরা এভাবে স্বাস্থ্যবিধির প্রতি উদাসীন হই, তাহলে পরিন্থিতি খারাপ হবে।”

তার মতে, সবাই স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে উদাসীন হয়ে পড়েছে। সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দিক থেকেও স্বাস্থ্যবিধি মানানোর কোনো উদ্যোগ নেই, যা দুঃখজনক।

তার কথা, "সরকার ৮০ ভাগ নাগরিককে করোনার টিকা দেয়ার কথা বলছে। কিন্তু এখনো তার রোডম্যাপ পরিস্কার নয়। দ্রুত সবাইকে টিকা দিতে হবে।”

করোনার মতো মহামারি দুই থেকে ছয় বছর তার শক্তি বজায় রাখে, এরপর এর শক্তি কমে আসে বলে জানান আইইডিসিআর-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর। আর এই করোনা ভাইরাস বারবার তার রূপ পরিবর্তন করছে, ফলে এটা থেকে কবে বিশ্ব মুক্তি পাবে তা নিশ্চিত করে বলার সময় আসেনি বলেও মনে করেন তিনি৷ তিনি বলেন, বারবার রূপ পরির্তনের কারণেই একটার পর একটা ওয়েভ আসছে।

ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, " তবে করোনা মহামারির মধ্যেও যেটা স্বস্তিদায়ক, তা হলো, এক বছরের মধ্যে এর টিকা আবিস্কার হয়েছে। বাংলাদেশে আড়াই কোটি মানুষ প্রথম ডোজ পেয়েছে। ”

তার মতে, সংক্রমণ কমলেও এখানো শতকরা পাঁচ ভাগের নীচে নামেনি। পাঁচ ভাগের নীচে নামলে সহনীয় বলা যায়। তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা তো আছেই। তাই স্বাস্থ্যবিধি সবাইকে মানতে হবে। ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারীদের ভ্যাকসিন দিয়েই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার নিয়ম বলে জানান তিনি।

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য