1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সংক্রমণ বাড়ছে, পরীক্ষা কমছে!

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৯ জুলাই ২০২০

বাংলাদেশে করোনায় দৈনিক মৃত্যু আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে৷ চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা বলছেন, ধীরে ধীরে মৃত্যুর সংখ্যা আরো কমবে৷ কিন্তু টেস্ট কমে যাওয়ায় সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে৷

https://p.dw.com/p/3fZ3g
বাংলাদেশে করোনায় দৈনিক মৃত্যু আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে৷ চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা বলছেন, ধীরে ধীরে মৃত্যুর সংখ্যা আরো কমবে৷ কিন্তু টেস্ট কমে যাওয়ায় সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে৷
ছবি: Reuters/M. Ponir Hussain

বাংলাদেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে৷ প্রথম মৃত্যু ঘটে ১৮ মার্চ৷ এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যুবরণ করেছেন দুই হাজার ৪৫৯ জন৷ যার অর্ধেকই ঘটেছে জুন মাসে৷ ৩০ জুন এক দিনে সর্বোচ্চ ৬৪ জন মারা যান৷ জুন মাসে গড়ে প্রতিদিন মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৩ জনেরও বেশি৷

বাংলাদেশে জুলাই মাসের প্রথম ১৮ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৩৭ জন, অর্থাৎ গড়ে ৪২ জন প্রতিদিন৷ তবে গত এক সপ্তাহে (১২ থেকে ১৮ জুলাই) মারা গেছেন ২৭৬ জন৷ সে হিসেবে প্রতিদিন গড়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৯ জন৷

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশে করোনার বিশাল পিক বললে যা বুঝায় তা হওয়ার লক্ষণ নেই৷ আমার বিবেচনায় মৃত্যু এখন একটি স্থিতিশীল অবস্থায় আছে৷ এরপর হয়তো কমতে শুরু করবে৷’’

ড. বিজন কুমার শীল

তার মতে, করোনায় বাংলাদেশে হাজার হাজার মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি৷ আর ঘটার আশঙ্কাও নাই৷ কারণ এরই মধ্যে অনেকের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি৷ যেসব পরিবারে কোনো একজন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে অন্য সদস্যদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে৷ কোনো বড় গবেষণা ছাড়া বলা সম্ভব নয় যে কত ভাগ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে৷ তবে আমরা দেখেছি একজন আক্রান্ত হলে পরিবারের বাকি পাঁচ জনের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে৷ আবার অনেকে আছেন করোনায় আক্রান্ত হলেও সামান্য লক্ষণ প্রকাশের পর তারা এমনিতেই ভালো হয়ে গেছেন৷’’

মৃত্যু কমার বিষয়টি সবাই মানলেও প্রশ্ন উঠছে টেস্ট এবং শনাক্তের সংখ্যা নিয়ে৷ পরীক্ষা আগের তুলনায় কমেছে৷ অন্যদিকে সংক্রমণের হার বাড়ছে৷ গত মাসে যেখানে গড়ে ২০ হাজার টেস্ট হয়েছে, এখন তা ১১-১২ হাজারে নেমে এসেছে৷ আর সংক্রমণের হার এই মাসে টেস্টের ২৫ ভাগে পৌঁছেছে৷ গত মাসে যেখানে ছিলো ২০-২২ ভাগ৷

চিকিৎসকরা মনে করছেন, মানুষ সচেতন হওয়ায় এবং চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে ধারণা তৈরি হওয়ায় মৃত্যুর হার কমেছে৷ কিন্তু সংক্রমণ আগের চেয়েও দ্রুত গতিতে বাড়ছে৷ এক্ষেত্রে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো গেলে পরিস্থিতি সম্পর্কে আরো ভালো ধারণা পাওয়া যেত৷

ডা. জাহিদুর রহমান খান

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান খান বলেন, ‘‘আমাদের ল্যাবে প্রতিদিন যে নমুনা টেস্ট করি তার ৩০ ভাগই পজেটিভ আসে৷ ফলে সংক্রমণ বাড়ছে৷ মৃত্যু হার কমার কারণ এই নয় যে সংক্রমণ কমছে৷ মুত্যু কমার কারণ মানুষের সচেতনতা ও চিকিৎসা আগের চেয়ে সহজ হওয়া৷’’

তিনি বলেন, ‘‘ফি নির্ধারণ করায় টেস্ট কিছুটা কমেছে৷ আর ভুয়া টেস্টের একটার পর একটা ঘটনা ধরা পড়ায় মানুষ করোনা টেস্টের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে৷ সব মিলিয়েই টেস্ট কমছে৷’’

অথচ বাংলাদেশের ৭০টি ল্যাবে এখন প্রতিদিন ২০ হাজারেরও বেশি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব৷ নেই কিট সংকটও৷ তারপরও টেস্ট অর্ধেকে নেমে এসেছে৷ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে দ্বিতীয়বার টেস্টকেও৷

জাহিদুর রহমান এর মতে, টেস্ট বাড়িয়ে তারপর যদি দেখা যায় সংক্রমণ ধারাবাহিকভাবে কমছে তাহলে বলা যাবে করোনার প্রাদুর্ভাব কমে আসছে৷ তার আগে নয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান