1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সন্ত্রাসবাদ ঠেকাতে নতুন তৎপরতা ইউরোপের

১৪ নভেম্বর ২০২০

প্যারিস, নিস ও ভিয়েনায় হামলার পর সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায়  কী ভাবছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ব্রাসেলস থেকে জানাচ্ছেন ডয়চে ভেলের মাক্স জান্ডার৷

https://p.dw.com/p/3lIHo
Belgien Brüssel | Anti-Terror-Kampf | Ylva Johansson
ছবি: Virginia Mayo/AP Photo/picture alliance

পাঁচ বছর আগে আজকের দিনেই ইসলামিক স্টেটের সাথে সংশ্লিষ্ট বন্দুকধারীদের হামলায়  ১৩০ জন নিহত হন৷ আর আহত হন ছয়শোরও বেশি মানুষ৷ প্যারিস হামলার পাঁচ ঠিক পাঁচ বছরের পর এ দিনটিতে সন্ত্রাস দমন নিয়ে আলোচনায় বসলেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রীরা৷ প্রকাশ করলেন এ বিষয়ে একটি যুগ্মবিবৃতি৷

যদিও কথা ছিল ইইউ'র সার্বিক অভিবাসনও রাজনৈতিক আশ্রয়নীতি নিয়েই আলোচনা করবেন তারা, কিন্তু কথায় কথায় আলোচনার মোড় ঘুরে যায়৷ উঠে আসে ইউরোপে সশস্ত্র ইসলামিস্ট গোষ্ঠীদের নিয়ন্ত্রণেরপ্রসঙ্গ৷

বিবৃতিতে মন্ত্রীরা বলেন, ‘‘আমাদের ক্ষমতার সবটুকু ব্যবহার করে এই নৃশংস সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা একসাথে লড়ব৷'' জোর দেওয়া হয় ইন্টারনেটে ইসলামিস্টদের প্রোপাগাণ্ডা নজরদারি, সীমান্তে কড়াকড়ি বাড়ানো ও তথ্য ভাগাভাগি করে নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে৷

জার্মান অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী হর্স্ট জেহোফার এ বিবৃতিকে আশার আলো হিসাবে দেখছেন৷ তাঁর মতে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্যরাষ্ট্ররা একজোট হলে ইউরোপ ‘সুপার পাওয়ার' হতে পারবে৷

নজরদারিতে অনলাইন কথোপকথন

মন্ত্রীরা যে কয়টি পরিকল্পনার কথা বলেছেন, তার কয়েকটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে৷ এর মধ্যে অন্যতম হলো ব্যক্তিগত অনলাইন কথোপকথনে কর্তৃপক্ষের নজরদারির বিষয়টি৷

জার্মান মন্ত্রী জেহোফার নিরাপত্তার খাতির এই ধরনের নজরদারিতে সায় দিয়েছেন৷ সাম্প্রতিক সময়ে জানা গেছে যে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্যরাষ্ট্রগুলি ইতিমধ্যে হোয়াটস্যাপের মতো চ্যাটিং অ্যাপগুলির ওপর নজরদারি বাড়াতে চাইছে৷

কিন্তু এই চিন্তার বিরোধিতাও এর মধ্যে দেখা গেছে জার্মান রাজনৈতিক মহলে৷ জার্মান পাইরেট পার্টির প্যাট্রিক ব্রেয়ার, যিনি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য, বলেন, ‘‘কয়েকজন যারা এই প্রযুক্তির অপব্যবহার করছে, তাদের জন্য যারা প্রযুক্তির অপব্যবহার করছেন না, তাদেরও এই প্রযুক্তি থেকে আমরা বঞ্চিত করব কি না, সেটা ঠিক করতে হবে৷ নাকি আমরা বলব যে নিরাপদ কথোপকথনই আমাদের সমাজের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷''

জেহোফারের যুক্তি, ‘‘কোনো সন্ত্রাসী হামলার পরেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা, প্রশাসন ও রাজনীতিকদের সমালোচনা দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়৷ কিন্তু বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে হামলা ঠেকাতে যথাযথ ক্ষমতা দেওয়া হয় না৷''

প্রশ্নে অভিবাসননীতিও

এই বৈঠকে জেহোফার ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ক ইউরোপিয়ান কমিশনার ইলভা জোহানসন যদিও জোর দিয়ে বলেছেন যে, অভিবাসন ও সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে আলাদাভাবে চিন্তা করা উচিত, বিবৃতিতে ধরা পড়ছে একটু ভিন্ন মত৷

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আমাদের আধুনিক, বহুত্ববাদী ও উন্মুক্ত সমাজকে সংহত রাখতে সাম্যের প্রয়োজন৷ পাশাপাশি, সবাইকে এই ধারণার সাথে একাত্মবোধ করতে হবে৷ স্বচ্ছ অর্থায়নের মাধ্যমে বিভিন্ন জাতীয়, নাগরিক ও ধর্মীয় সংস্থার বিরূপ প্রভাব সীমিত করতে হবে৷''

কিন্তু ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের আরেক সদস্য, গ্রিন পার্টির এরিক মারকার্ডট এবিষয়ে সতর্ক করেন৷ তিনি মনে করেন, যে এবছর ভিয়েনায় ও ২০১৫ সালের প্যারিসের হামলায় অভিযুক্তরা ছিল ইইউ নাগরিক৷ ফলে, সন্ত্রাসবাদকে শুধু অভিবাসনের সাথে যুক্ত করতে বারণ করেন তিনি৷ তাঁর মতে, ‘‘ইসলামিস্ট ব়্যাডিকালাইডেশন একটি ইউরোপিয়ান সমস্যা৷ এই সমস্যাকে এখান থেকে কোথাও ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না৷''

তবে, এই সমস্যা মোকাবিলায় ‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নজরদারি ও অপরাধীকে শনাক্ত করবার পন্থাগুলো অব্যবহৃত থেকে যায়' বলেও জানান মারকার্ডট৷

মাক্স জানডার/এসএস