1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সবল বুলবুলকে দুর্বল করেছে সুন্দরবন

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১০ নভেম্বর ২০১৯

বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আঘাত হানলেও এর তীব্রতা আশঙ্কার চেয়ে কম ছিল৷ দক্ষিণে সুন্দরবন দিয়ে প্রবেশ করায় তা আরো দুর্বল হয়ে যায়৷ বিশ্লেষকরা বলছেন, সুন্দরবনই বারবার বাংলাদেশকে বুক পেতে রক্ষা করছে৷

https://p.dw.com/p/3Sn5e
Bangladesch Zyklon Bulbul
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman

ঘূর্ণিঝড় বুলবুল সুন্দরবন ও সংলগ্ন এলাকায় আঘাত করে শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে৷ এরপরই তার তীব্রতা কমে যায়৷ ধীরে ধীরে এটি সাইক্লোন থেকে গভীর স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়৷ তবে এর আগে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা আরো একটু কমে৷ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘‘সুন্দরবন বারবারই বাংলাদেশকে ঘূর্ণিঝড় থেকে ঢাল হয়ে রক্ষা করছে৷ আর উপকূলীয় এলকার সবুজ বেষ্টনীও এই সময় কাজ করে৷''

তিনি বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত হানে পশ্চিমবঙ্গ এবং খুলনা হয়ে, সুন্দরবনের ওপর দিয়ে৷ তার গতিবেগ ছিলো ঘন্টায় ৯০ থেকে দমকা হাওয়ায় ১২০ কিলোমিটার৷ তখন এটা ছিলো প্রবল ঘুর্ণিঝড়৷ কিন্তু স্থলভাগে সুন্দরবনের গাছপালায় বাধা পেয়ে এটা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়৷ বাতাসের গতিবেগ কমে গিয়ে ৬০ থেকে দমকায় ৮০ কিলোমিটার হয়৷''

এ কে এম রুহুল কুদ্দুস

তাঁর মতে, ‘‘সুন্দরবনের গাছপালা ঘুর্ণিঝড়কে প্রতিরোধ করায় সেটা দুর্বল হয়ে পড়ে৷''

এবারের ঘূর্ণিঝড়ে সুন্দরবনের গাছপালার কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে তা এখনও নির্ণয় হয়নি৷ তবে জলোচ্ছ্বাস না হওয়ায় বন্য প্রাণীর তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে বন বিভাগ৷ ওই অঞ্চলে বিভিন্ন স্থাপনার বড় ধরনের কোনো ক্ষতির খবরও পাওয়া যায়নি৷ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশিরুল আল মামুন বলেন, ‘‘সুন্দরবন বরাবরের মত এবারও ঘূর্ণিঝড়ে  আমাদের রক্ষা করেছে৷ সিডরে সুন্দরবনের অনেক ক্ষতি হয়েছিল৷ তবে ১২ বছরে প্রাকৃতিকভাবে সুন্দরবন আবার তার আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে৷ আসলে সুন্দরবন আমাদের প্রাকৃতিক ঢাল৷ তাকে বিরক্ত না করলেও সে সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠে, সুরক্ষা দেয়৷ সেখানোতো গাছ লাগাতে হয়না৷ ওটা একটা প্রাকৃতিক সিস্টেম৷ একটু ভালো ব্যবস্থাপনা হলেই সে শতাব্দির পর শাতাব্দি এভাবেই টিকে থাকবে৷''

ডা. মো এনামুর রহমান

এদিকে ঘূর্ণিঝড় এখন নিম্নচাপে রূপান্তরিত হয়ে দক্ষিণের পটুয়াখালি অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে৷ সতর্কতা সংকেত তিনে নামিয়ে আনা হয়েছে৷ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে আগামীকাল (সোমবার) দেশের আবহাওয়া পরিস্থতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে আসবে৷

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো এনামুর রহমান বলেন ,‘‘যে পরিমান ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ছিলো তা হয়নি৷ পূর্ব প্রস্তুতি এবং ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়ায় ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে৷ আমরা এখন তথ্য সংগ্রহ করছি৷ পূর্ণ চিত্র পেতে কয়েকদিন সময় লাগবে৷ তবে প্রাথামিকভাবে এটা বলা যায় যে বিপদ কেটে গেছে৷ আর এজন্য সুন্দরবন আমাদের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করেছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমরা সুন্দরবনকে বাঁচাতে এবং এটা যাতে আর কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করব৷ এই বনের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে, বন উজাড় করা হচ্ছে৷ নানাভাবে বনের ক্ষতি করা হচ্ছে৷ এটা বন্ধ করে সুন্দরবনকে সুরক্ষা দিতে হবে৷''

প্রসঙ্গত, ২০০৭ এবং ২০০৯ সালে সিডর ও আইলার প্রাথমিক আঘাত সামাল দিয়েছিল সুন্দরবন৷ যাার কারণে সম্ভাব্য বিপুল প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে যায় বাংলাদেশ৷ দেশের দক্ষিণে ৬ হাজার বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবন এভাবে বারবারই এই জনপদকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান