1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সমস্যার বর্জ্য আবার সমস্যা সমাধানেও

২১ আগস্ট ২০১০

বিশ্বের শরণার্থী শিবিরগুলোতে মনুষ্য বর্জ্য একটা সমস্যা৷ তবে এর একটা সম্ভাবনার দিক বাতলালেন জার্মানির গবেষকরা৷ তাঁরা বলছেন, বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন করে তা আবার ব্যবহার করা যেতে পারে শরণার্থী শিবিরগুলোতেই৷

https://p.dw.com/p/Osvz
শরণার্থী শিবিরে সমস্যার শেষ নেই (ফাইল ফটো)ছবি: GTZ / Karin Desmarowitz

এতে জ্বালানি খরচও অনেক বাঁচবে৷

সংঘাতপীড়িত বিশ্বের নানা প্রান্তে শরণার্থী শিবির আছে প্রায় ৩০০টি৷ এগুলোর দেখভাল করছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর৷ ঘরহারা ২৪ লাখ মানুষের বসতি এগুলো, অনেক সমস্যাকে সঙ্গী করে চলে দিনাতিপাত৷ বিদ্যুৎ আছে, তো পানি নেই৷ পানি আছে তো খাবার নেই৷ খাবার আছে তো নেই পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা৷ শরণার্থী শিবিরগুলোর এই সমস্যার সমাধানেরই একটা পথ দেখালেন ইউনিভার্সিটি অফ ভাইমারের গবেষক দল৷ দলের প্রধান একহার্ড ক্রাফট বললেন, ‘‘আমরা রান্নার কাজে বায়োগ্যাস ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি৷ উদ্বাস্তু জীবনের অন্ধকার আরো গাঢ় করে তুলেছে বিদ্যুতের অনুপস্থিতি৷ তাই বিদ্যুতের ব্যবস্থা যদি করা যায়, তবে তারা নিজেদের অনেকটা নিরাপদ ভাবতে পারবে৷''

শিবিরগুলোতে থাকা এক-তৃতীয়াংশকেই পর্যাপ্ত পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধা দেওয়া যাচ্ছে না- এ কথা বলছে ইউএনএইচসিআরের কর্মকর্তারাই৷ আর বিষয়টি যে নজরে আনা হচ্ছে না, সে কথাই বললেন ক্রাফট৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘শুধু খাওয়ার আর পানির ব্যবস্থার করতে বলেন সবাই৷ এর বাইরে পয়ঃনিষ্কাশনের সমস্যার কথা কেউ বলে না৷'' যে কথা কেউ বলেন নাম তাতেই মনোযোগ দিচ্ছেন ক্রাফট৷ তাঁর পরিকল্পনা সফল হলে জ্বালানি সমস্যার সমাধান করবে বর্জ্য৷ মানে এক সমস্যা দিয়ে আরেক সমস্যার সমাধান৷ যাবতীয় রোগ-বালাই ছড়ানোর অন্যতম কারণ মানব বর্জ্যের অব্যবস্থাপনা৷ আর বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট পরিকল্পনা সফল হলে তাতে রোগব্যাধি ছড়ানোর শঙ্কাও কমবে অনেক৷

জার্মানি বর্তমানে শরণার্থী শিবিরগুলোতে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসিয়ে দিচ্ছে৷ ক্রাফট বললেন, ‘‘আমি কথা বলেছি শরণার্থীদের সঙ্গে৷ তারা কাঠ সংগ্রহ করে তাদের রান্নার কাজটি করতে হয়৷ এটা বেশ কষ্টের৷'' ইউএনএইচসিআরের প্রতিটি শিবিরে প্রায় ২০ হাজারের মতো লোক থাকে৷ ক্রাফট হিসেব করে দেখেছেন, প্রতিটি শিবিরের জন্য ১০টি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট বসাতে হবে৷ মানব বর্জ্য থেকে যে মিথেন গ্যাস পাওয়া যাবে, তাই ব্যবহার হবে রান্নার কাজে৷ ক্রাফট প্রস্তাব দিয়েছেন, জার্মান সরকার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের সঙ্গে সঙ্গে যেন বায়োগ্যাস প্ল্যান্টও তাদের পরিকল্পনায় রাখে৷ যদিও এখন পর্যন্ত তাতে সাড়া মেলেনি৷ এক্ষেত্রে সমস্যা হলো, তহবিল৷

বায়োগ্যাস প্রকল্পের কথা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানেই ভাবা হচ্ছে৷ আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায়ও এই ধরনের কাজ করছেন সেখানকার মাসিন্দে মুলিরো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সিবিলিকে মাখানু৷ তিনি বলছেন, এই ধরনের কাজ বিশ্ব উষ্ণায়ন কমাতেও প্রভাব ফেলবে৷

তবে এই কাজে দুটি বিশেষ সমস্যা চিহ্নিত করেছেন ক্রাফট৷ প্রথমটি হল- যে ট্যাঙ্কে বর্জ্য ধরে রাখা হবে, গ্যাসের চাপে তা বিস্ফোরিত হতে পারে৷ এই সমস্যাটি কাটানো গেলেও এর পরের সমস্যাটি একটু ভিন্ন রকমের৷ তা হলো, মলমূত্র থেকে যে গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে, তা সবারই জানান৷ এখন সেই গ্যাস দিয়ে রান্না করতে সবাই সম্মত হবে কি না৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন