1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‌সমাজ, দেশের কথা ভাবতে হবে

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২ মার্চ ২০১৮

পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষার মান নিম্নগামী৷ রাজ্য বিধানসভায় এই মন্তব্য করে হইচই ফেলেছেন শাসকদলের বিধায়ক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা দপ্তরের প্রাক্তন মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়৷ কেন বললেন ঐ ‌কথা, জানালেন ডয়চে ভেলেকে৷

https://p.dw.com/p/2tZgx
Indien Murbad Unterricht zu Menstruations Mythen
ছবি: Thomson Reuters Foundation/R. Srivastava

পশ্চিমবঙ্গে উচ্চশিক্ষার মান ক্রমশই পড়ছে৷ পড়ে যাচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান৷ শিক্ষার উৎকর্ষ সাধনের যে উদ্যোগ, তার কোনো ফল তিনি দেখতে পাচ্ছেন না৷ সদ্য রাজ্য বিধানসভায় এই মন্তব্য করে রীতিমত সাড়া ফেলছেন দক্ষিণ বর্ধমান কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়৷ বর্ষীয়াণ এই শিক্ষাবিদ-রাজনীতিক এক সময় পশ্চিমবঙ্গের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ছিলেন৷ তিনি সরাসরি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করছেন মানে এক অর্থে সরকারের বিরুদ্ধে যাচ্ছেন৷ ফলে শোরগোল হয়৷ সংবাদ মাধ্যম বিধানভার বাইরে তাঁকে জিজ্ঞেস করে, শিক্ষার এই বেহাল অবস্থার দায় কার?‌ জবাবে, রবিরঞ্জনবাবু রবীন্দ্রনাথের লেখা থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘‌এ আমার, এ তোমার পাপ‌!'' এতে সন্দেহ আরও জোরদার হয়, যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকেও সমানভাবে অভিযুক্ত করছেন‌ তাঁর এক প্রাক্তন মন্ত্রী৷

রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়

কিন্তু ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক দীর্ঘ, একান্ত সাক্ষাৎকারে রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় যা বললেন, তাতে স্পষ্ট হলো যে কোনো ব্যক্তিগত হতাশার জায়গা থেকে, বা নির্দিষ্ট কারও দিকে অভিযোগের আঙুল তুলতে, এমনকি বিষয়টা নিয়ে হঠাৎই সংবাদমাধ্যমের নজর কাড়তেও তিনি কথাটা বলেননি৷ বরং এক সৎ, আন্তরিক এবং বস্তুনিষ্ঠ পর্যালোচনার চেষ্টা করেছেন আজকের উচ্চশিক্ষা পরিস্থিতির, যেটা অত্যন্ত দরকার ছিল৷ খুব জরুরি ছিল এভাবেই সোজা কথাটা সোজাভাবে বলা যে, শিক্ষার মান পড়ে যাচ্ছে৷ এবং এই পতনের শুরু কিন্তু সেই সত্তরের দশকে, যখন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তির মাথা ভেঙে দিয়েছিল নকশালরা, ডয়চে ভেলেকে বললেন রবিরঞ্জনবাবু৷ তাঁর আক্ষেপ, ৩৪ বছরের শাসনে বামফ্রন্ট সরকারও এমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, যাতে উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়ন হতে পারে৷ তারই ফল ভুগতে হচ্ছে আজকে এসে৷ অধ্যাপক, বা শিক্ষকদের মধ্যেও যে উৎকর্ষের অভাব, তারও ওটাই কারণ৷

কিন্তু কীভাবে এই পরিস্থিতির বদল ঘটতে পারে?‌ প্রাক্তন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা মন্ত্রীর বক্তব্য, সবাইকে চেষ্টা করতে হবে, কারণ এই দায় কারও একার নয়৷ যেমন সরকার একা শিক্ষার মানোন্নয়নে কিছু করতে পারে না, যদি না ছাত্র-শিক্ষক মিলে হাত লাগায়৷ বর্তমান সরকার শিক্ষক-অধ্যাপকদের বেতন অনেকটা বাড়িয়ে প্রায় প্রশাসনিক কর্তা, আমলাদের সমতুল করেছে, দাবি করলেন তৃণমূল বিধায়ক৷ কিন্তু তার প্রশ্ন, যদি মেধাবী ছেলে-মেয়েদের শিক্ষকতা, অধ্যাপনায় আকৃষ্ট না করা যায়, তা হলে সরকার কী করতে পারে?‌

ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে সমস্যার একেবারে মৌলিক স্তরে পৌঁছতে চাইলেন রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়৷ বললেন, শিক্ষা নয় জ্ঞানের ওপর জোর দিতে হবে৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলকে, তার শংসাপত্রে সেই জ্ঞানের কথাই বলা আছে৷ ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা, দু'‌পক্ষকেই সেই জ্ঞানের সন্ধানে ব্রতী হতে হবে৷ এক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমেরও দায়িত্ব আছে৷ শুধুই খারাপ খবর নয়, জীবনের ভালো ঘটনা, ইতিবাচক ঘটনাগুলো তুলে ধরার দায়িত্ব৷ সাংবাদিকদেরও সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে৷ যেমন উল্লাস নয়, আনন্দের খোঁজ করতে হবে ছাত্র-ছাত্রীদের৷ বললেন রবিরঞ্জনবাবু৷

তবে তাঁর এই আক্ষেপ সম্ভবত অশ্রুতই থেকে গেল৷ কারণ সেইদিনই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ডিজে এনে, উচ্চগ্রামে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে প্রাক দোলযাত্রার উৎসব হয়েছে৷ আনন্দ নয়, উল্লাস হয়েছে!‌

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য