1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সমুদ্রের উপর ট্রেকিংয়ের অভিনব অভিজ্ঞতা

১ আগস্ট ২০১৯

পাহাড়ে ট্রেকিংয়ের অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে৷ কিন্তু সমুদ্রে ট্রেকিং কি সম্ভব? সিট্রেকিং নামের ক্রীড়ার আওতায় এমন অসাধারণ অভিজ্ঞতার স্বাদ পাওয়া সম্ভব৷ প্রয়োজন শুধু উপযুক্ত সাজসরঞ্জাম ও উচ্চ মানের প্রশিক্ষণ৷

https://p.dw.com/p/3N7Xo
Japan freitauchende Fischerinnen "Ama"
ছবি: Getty Images/AFP/M. Bureau

নির্জন সমুদ্রতট ও খাঁড়ি, পানির নীচে অসাধারণ নিসর্গ৷ সিট্রেকাররা বেশ কয়েক দিন ধরে উপকূল বরাবর বিচরণ করেন৷ কখনো পানির নীচে, কখনো উপরে তাঁদের দেখা যায়৷ সিট্রেকার হিসেবে ব্যার্নহার্ড ভাখে বলেন, ‘‘ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে প্রস্থ ও গভীরতার বিচারে মহাসাগর একেবারে অন্তহীন৷ মানুষ কখনোই এই এলাকা জয় করতে পারবে না৷ ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকার কারণেই আমি এর আকর্ষণে বার বার বেরিয়ে পড়ি৷ এটাই আমার কাছে চরম মুক্তির স্বাদ৷''

ব্যার্নহার্ড ভাখে সিট্রেকিং-এর ক্ষেত্রে অগ্রদূত হিসেবে পরিচিত৷ প্রায় ২০ বছর আগে তিনি থাইল্যান্ডে সাঁতার কেটে এক দ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে পৌঁছেছিলেন৷ আজ একাধিক কর্মশালায় তিনি নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন৷ যেমন ক্রোয়েশিয়ার স্রেস দ্বীপে তিনি ডুবুরি নিকোলাই লিন্ডার-এর সঙ্গে মিলে ৪ জন শিক্ষার্থীকে এই ক্রীড়ার মৌলিক বিষয়গুলি বুঝিয়ে বলছেন৷ তাঁদের প্রত্যেকেরই জলক্রীড়ার ক্ষেত্রে কিছু অভিজ্ঞতা রয়েছে, সিট্রেকিং শেখার জন্য যা জরুরি৷ ব্যার্নহার্ড ভাখে মনে করেন, ‘‘এমন এক ওয়ার্কশপ সিট্রেকিং-এর একাধিক বিষয় তুলে ধরে৷ যেমন যাত্রাপথ পরিকল্পনা করতে হয়, প্রয়োজনীয় সাজসরঞ্জামের ব্যবস্থা করতে হয়৷ তারপর পানির উপর কসরতও রয়েছে, যা সাঁতার কাটার তুলনায় একেবারে ভিন্ন৷ এমনকি ডুবুরিদের নড়াচড়ার সঙ্গেও তার মিল নেই৷ প্রস্থ ও গভীরতার মধ্যে সমন্বয় করে একেবারে নিজস্ব এই মুভমেন্ট সৃষ্টি করা হয়েছে৷''

সমুদ্রে বেড়ানোর নতুন উপায় সিট্রেকিং

ব্যার্নহার্ড ভাখে নিজেই সিট্রেকিং-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম তৈরি করেছেন৷ সেটি আসলে পানি নিরোধক এক পোশাক ও পিঠে ঝোলানোর রাকস্যাকের সংমিশ্রণ৷ সিট্রেকার তার মধ্যেই যাবতীয় প্রয়োজনীয় সাজসরঞ্জাম ভরে নিতে পারেন৷ খাদ্য, পানি, জামাকাপড় ও স্লিপিং ব্যাগ ইত্যাদি৷ ঠিকমতো ভরার পর পাম্পের সাহায্যে বাতাস ভরে রাকস্যাকটি এমন আকার নেয়, যাতে সাঁতারের সময় পানিতে সেটি বোঝা না হয়ে ওঠে৷

তিন দিনের কর্মশালায় স্বল্প দূরত্বের এক যাত্রায় বেরোতে হয়৷ কিছুটা দূরে অবস্থিত একটি সমুদ্রসৈকতে পৌঁছতে হবে৷ তারপর খোলা আকাশের নীচে রাত্রিবাস৷ ব্যার্নহার্ড ভাখে বলেন, ‘‘আসলে সব জায়গায়ই সিট্রেকিং করা সম্ভব৷ আমাদের কাছে বন্য উপকূল অঞ্চল আকর্ষণীয় লক্ষ্য, কারণ এমন সব জায়গায় প্রকৃতি উপভোগ করা অসাধারণ অভিজ্ঞতা৷ এমন জনহীন দ্বীপ, যেখানে কেউ যায় না৷ সেখানে রাত কাটিয়ে পরের দিন প্রবাল প্রাচীর ছুঁয়ে দেখার রোমাঞ্চই আলাদা৷''

ক্রোয়েশিয়ায় কর্মশালার অংশগ্রহণকারীরা সাঁতার কেটে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে একটি খাঁড়িতে পৌঁছেছেন৷ একমাত্র জলপথেই সেখানে যাওয়া সম্ভব৷ সেখানে পৌঁছতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে৷ বৃষ্টি থামতেই তাঁরা তাঁবু খাটিয়ে আগুন জ্বালানোর ব্যবস্থা করে ফেললেন৷ ব্যার্নহার্ড ভাখে মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘সিট্রেকিং কোনো ইভেন্ট ক্রীড়া নয়, এটি আসলে নেচার স্পোর্টস৷ অর্থাৎ প্রকৃতিকে কিছু একটা ফেরত দেওয়া হয়৷ প্রকৃতির কোলে টিকে থাকা, সেখানে উপস্থিত থাকাই বিশাল এক প্রাপ্তি৷''

পরের দিন আবহাওয়া আরও খারাপ হয়ে পড়লো৷ ঢেউ ঠেলে ফিরে যেতে বাড়তি শক্তি প্রয়োগ করতে হলো৷ তা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত সবাই সন্তুষ্ট৷

প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড়ভাবে একাত্ম হওয়ার অভিজ্ঞতার পর সভ্য জগতের ছোট ছোট বিষয়গুলি যেন আরও ভালোভাবে উপভোগ করা যায়৷

ফিলিপ ক্রেচমার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য