1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সমুদ্র থেকে ধাতু উদ্ধারের উদ্যোগ

১১ মে ২০২২

প্রযুক্তির উন্নতি, বেড়ে চলা চাহিদা এমনকি পরিবেশ সংরক্ষণের তাগিদও কাঁচামালের অভাব প্রকট করে তুলছে৷ ফলে খোঁজ চলছে খনিজ পদার্থের বিকল্প উৎসের৷ সমুদ্রের তলদেশ থেকে খনিজ উত্তোলনের কথা ভাবা হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/4B6sX
Erde aus dem Weltall
প্রতীকী ছবিছবি: NASA/ZUMA/picture alliance

কোবাল্ট, তামা ও নিকেল ‘ট্রানজিশন মেটাল' হিসেবে পরিচিত৷ আমাদের চারিপাশে থাকলেও সেগুলিকে বিরল উপাদান হিসেবে গণ্য করা হয়৷ এমন উপাদান ব্যাটারি, স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ইলেকট্রিক গাড়ি, ফটোভোল্টাইক সিস্টেম এবং অন্য ধরনের পাওয়ার স্টোরেজ হিসেবে কাজে লাগে ৷

খনিতে তামা, কোবাল্ট ও নিকেলের পরিমাণ অত্যন্ত সীমিত৷ অদূর ভবিষ্যতে সেগুলির জোগান শেষ হয়ে যাবে৷ বিশেষ করে কোবাল্টের আকাল অনিবার্য৷ ২০২৬ সালের মধ্যে এর চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ কংগো ও অস্ট্রেলিয়ায় কোবাল্টের সবচেয়ে বড় ভাণ্ডার রয়েছে৷ প্রায়ই খনির পরিবেশ শ্রমিকদের জন্য অসহনীয় হয়৷

সমুদ্রের নীচে পলিমেটালিক নডিউল হয়তো সমস্যার কিছুটা সমাধান করতে পারে৷ সেগুলির মধ্যে আনুমানিক ২৭ কোটি টন নিকেল লুকিয়ে রয়েছে৷ সেইসঙ্গে ২৩ কোটি টন তামা এবং ৫ কোটি টন কোবাল্ট৷

সমুদ্রতলে ৩,৫০০ থেকে ৬,৫০০ মিটার গভীরে বিশাল এলাকা জুড়ে সেই নডিউলগুলি ছড়িয়ে রয়েছে৷ সেই পরিবেশ এখনো মানুষের অগোচরে থেকে গেছে৷ পলিমেটালিক নডিউল খুব ধীরে গড়ে ওঠে৷ তার জন্য প্রয়োজন অক্সিজেন ও সুমেরু অঞ্চলের গভীর স্রোত৷

সমুদ্রের গভীরে ধাতু সন্ধান

নডিউল গড়ে ওঠার প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল৷ সহজে বলতে গেলে শামুকের খোলস বা হাঙরের দাঁতের ক্ষুদ্র টুকরোর মতো জৈব কণা দিয়ে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ লাখ লাখ বছর ধরে সমুদ্রের পানি ধাতব যৌগ দ্রবীভূত করে৷ প্রতি দশ লাখ বছরে জৈব কণার উপর এক সেন্টিমিটার প্রলেপ যুক্ত হয়৷ তরপর আলু বা ফুলকপির মাথার মতো আকার সৃষ্টি হয়৷ ‘মাইনিং ইমপ্যাক্ট' প্রকল্পের মাটিয়াস হেকেল বলেন, ‘‘১৮৭৪ সালে চ্যালেঞ্জার অভিযানে প্রথমবার ধাতব নডিউল আবিষ্কৃত হয়৷ অর্থাৎ অনেক সময় আগে এর অস্তিত্ব জানা গিয়েছিল৷ সে সময়ে সমুদ্রতলের নমুনা সংগ্রহের যন্ত্রপাতি দিয়ে কয়েকটি নডিউল তোলা হয়েছিল৷ সত্তরের দশকে অর্থনৈতিক কারণে আবার আগ্রহ জেগে ওঠে৷ মানুষ সেগুলির মধ্যে ধাতুর সন্ধান পায়৷ তখন থেকেই আরও অভিযান শুরু হয়৷''

অর্থাৎ শুধু বিজ্ঞানীরাই পলিমেটালিক নডিউলে আগ্রহী নন৷ বেশ কয়েকটি কোম্পানিও সেই ধাতু উদ্ধার করে কাজে লাগাতে চায়৷

গভীর সমুদ্রে খননের প্রবক্তাদের মতে, সমুদ্রের নীচ থেকে নডিইউল বার করা প্রথাগত খননকার্যের তুলনায় অনেক বেশি টেকসই পদ্ধতি৷ কারণ সেখানে কোনো জঙ্গল ধ্বংস করতে হয় না এবং মাটিও খুঁড়তে হয় না৷ শিশু শ্রম ও টক্সিক ধোঁয়ারও কোনো আশঙ্কা নেই৷ সমুদ্রতল থেকে নডিউল সংগ্রহ করলেই চলে৷

অন্তত কাগজে কলমে সেটাই হলো প্রক্রিয়া৷ কিন্তু গভীর সমুদ্রে তীব্র চাপ ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য অন্যতম সমস্যা৷ এখনো পর্যন্ত কোনো যন্ত্র সমুদ্রতল থেকে বাণিজ্যিক আকারে নডিউল উদ্ধার করতে পারে না৷

ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের মতো দেখতে যন্ত্র নিয়ে বর্তমানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে৷ আরও কিছু প্রোটোটাইপ তৈরি করা হচ্ছে৷

সামুদ্রিক প্রাণিজগতের উপর সেই প্রযুক্তির প্রভাব আপাতত সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ৷ কারণ ভবিষ্যতে যন্ত্র সমুদ্রতল থেকে শুধু নডিউল শুষে নেবে না৷

ল্যুডিয়া মায়ার/এসবি