1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সম্পর্ক ভয়াবহ, ভারতের সঙ্গে ক্রিকেট নয়: ইমরান

১৮ আগস্ট ২০২০

ভারত-পাক সম্পর্কে 'ভয়াবহ আবহাওয়া' তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতি দুই দেশের মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচের প্রশ্নই ওঠে না। বললেন ইমরান।

https://p.dw.com/p/3h7N1

ভারতের মোদী সরকারকে ফের একবার আক্রমণ করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। জানিয়ে দিলেন, মোদী সরকারের আমলে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে দুই দেশের মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করা অসম্ভব। ইমরানের ভাষায়, দুই দেশের মধ্যে 'ভয়াবহ আবহাওয়া' তৈরি হয়ে আছে।

সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ইমরান। সেখানেই উঠে আসে ক্রিকেটের প্রসঙ্গ। ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট শেষ হয়েছে ২০১২ সালে। আর টেস্ট ম্যাচ হয়েছে ২০০৮ সালে। মুম্বইয়ে ২৬/১১ হামলার পর ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও সিরিজ খেলতে চায়নি। ব্যতিক্রম হয়েছিল কেবল একবারই। ২০১২ সালে। ওয়ান ডে খেলা হয়েছিল। তবে দুই দেশেই বহু সময়ে ফের দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে কোনও কোনও পক্ষ। ভারত বার বারই বলেছে, ২৬/১১ হামলার দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তারা পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেটে অংশ নিতে রাজি নয়। এ বার ইমরানও জানিয়ে দিলেন কূটনীতির এই 'ভয়াবহ আবহে' দুই দেশের মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করার প্রশ্নই ওঠে না।

ভয়াবহ আবহ বলতে ইমরান ঠিক কী বোঝাতে চাইছেন? ২৬/১১ হামলার সময়ে দিল্লির মসনদে নরেন্দ্র মোদী ছিলেন না। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না ইমরান। সে সময় দুই দেশের মধ্যে 'ডশিয়র' দেওয়া নেওয়াও হয়েছে। প্রায় যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে ভারত-পাক সম্পর্কের বরফ খানিকটা গলেছিল। নওয়াজ শরিফ মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। শরিফ এবং মোদীর মধ্যে স্বাভাবিকের চেয়ে খানিক বেশিই সৌজন্য বিনিময় হয়েছিল। শরিফের জন্মদিনে অতর্কিতে ইসলামাবাদ পৌঁছে গিয়েছিলেন মোদী। কিন্তু সেই পরিস্থিতি বেশি দিন স্থায়ী হয়নি।

নরেন্দ্র মোদীর প্রথম পর্বের শেষ দিকে পুলওয়ামার ঘটনা ঘটে। জবাবে পাকিস্তানে গিয়ে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে ভারত। ইমরান ততদিনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়ে গিয়েছেন। সার্জিকাল স্ট্রাইকের পর ফের দুই দেশের মধ্যে কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেই আগুন আর নেভেনি। মোদীর দ্বিতীয় দফায় কাশ্মীর থেকে বিশেষ আইন প্রত্যাহার হয়েছে। যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সরব হয়েছে পাকিস্তান। চীন এবং পাকিস্তান প্রকাশ্যে ভারত বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। সম্প্রতি সম্পূর্ণ কাশ্মীর এবং গুজরাতের কিছু অংশ তাদের বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। ইমরান খান একটি রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করেছেন, যেখানে এই দাবি করা হয়েছে।

ভারত তার কড়া জবাব দিয়েছে। কাশ্মীরের সমস্ত সমস্যার জন্য একাধিকবার ভারত একমাত্র পাকিস্তানকেই দায়ী করেছে। দিল্লির পাকিস্তান দূতাবাস কিছু কর্মীকে গুপ্তচর বলে দাবি করেছে ভারত। পাকিস্তানও ইসলামাবাদেও ভারতের দূতাবাসের দুই কর্মী এক দিনের জন্য বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিলেন। আইএসআই তাঁদের অপহরণ করেছিল বলে ভারতের অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে গিয়ে পৌঁছেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে ভারত ক্রীড়া এবং বিনোদনের সমস্ত সম্পর্ক বন্ধ করে দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ইমরানের দুই দেশের খেলা বিষয়ক মন্তব্যে আসলে সেই রাজনৈতিক টানাপোড়েনের চেহারাটিই স্পষ্ট হয়েছে। ইমরান অবস্য বলেছেন, ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বরাবরই 'হাই ভোলটেজ'। ১৯৭৯ এবং ১৯৮৭ সালে ভারতে খেলতে যাওয়ার স্মৃতি রোমন্থন করেছেন ইমরান। তাঁর বক্তব্য, সে সময়েও দুই দেশের মধ্যে খেলার অনুকূল পরিস্থিতি ছিল। কিন্তু এখন সেই আবহাওয়া নেই।

এসজি/জিএইচ (এনডিটিভি)