1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগের আশা দেখছি না’

৭ আগস্ট ২০১৮

বাংলাদেশের তরুণ গবেষক সামসাদ রাজ্জাক বিশ্বের অন্যতম সেরা এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন৷ তবে দেশে ফিরতে চাইলে তিনি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের সুযোগ পাবেন মনে বলে করছেন না৷ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করার কারণে৷

https://p.dw.com/p/32fiY
68th Lindau Nobel Laureate Meeting, Samsad Razzaque
ছবি: DW/M. Zahidul Haque

তরুণদের অনুপ্রাণিত করার স্বপ্ন দেখেন রাজ্জাক

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস অ্যাট অস্টিন'-এ ২০১৫ সাল থেকে পিএইচডি করছেন সামসাদ রাজ্জাক৷তার আগে বাংলাদেশের ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োটেকনোলজিতে মাস্টার্স করেছেন৷ এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগে লবণ সহিষ্ণু টমেটো, ধান ও হরকুচ নিয়ে গবেষণা করেছেন৷

যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা শেষে বাংলাদেশে ফেরার ইচ্ছে আছে তাঁর৷ তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করায় সরকারি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের সুযোগ পাবার আশা দেখছেন না তিনি৷ ‘‘বাংলাদেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে পলিসিতে রিক্রুট করে সেখানে আমি কোনো আশা দেখি না৷ আমি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি৷ ফলে কোনো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে গ্রহণ করবে কিনা, আমি জানিনা৷ আজকে আমি যদি ১০-২০টা ভালো পেপারও করি, আমি কিন্তু সেই আশাটা দেখিনা,'' হতাশা নিয়েই ডয়চে ভেলেকে জানান সামসাদ৷ তবে বাংলাদেশে যে গবেষণা ইনস্টিটিউটগুলো আছে, যেমন ব্রি, বিনা, অ্যাটমিক এনার্জি কমিশন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োটেকনোলজি (এনআইবি), সেসব জায়গায়ও কাজ করার আগ্রহ আছে তাঁর৷

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কারণে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ পাবার আশা দেখিনা - রাজ্জাক

তরুণ গবেষকদের মধ্যে নিজের অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দেয়ার মতো পর্যায়ে পৌঁছানোর স্বপ্ন দেখেন সামসাদ রাজ্জাক৷ সম্প্রতি তিনি জার্মানির লিন্ডাউ শহরে নোবেল বিজয়ীদের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন৷ প্রায় ৩৯ জন নোবেল বিজয়ী সেখানে অংশ নিয়েছিলেন৷ সারা বিশ্বের প্রায় ৬০০ তরুণ গবেষকও সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন৷ সামসাদ ছাড়াও বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাঃ ইশরাত রফিক ঈশিতা সম্মেলনে এসেছিলেন৷ লিন্ডাউয়ে সাক্ষাৎকারের সময় সামসাদ তাঁর দুজন শিক্ষকের কথা স্মরণ করেন৷ একজন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. অপর্ণা ইসলাম, অন্যজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রির অধ্যাপক ড. জেবা ইসলাম সেরাজ৷ ‘‘এই দু'জনের পৃষ্ঠপোষকতায় আজ আমি এখানে দাঁড়িয়ে৷ আমার সবসময় মনে হয়, আমারও এমন জায়গায় যাওয়া উচিত যেখানে আমি আমার জুনিয়রদের মোটিভেট করতে পারবো,'' বলেন তিনি৷

যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশে গবেষণা করতে গিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিশাল পার্থক্য উপলব্ধি করতে পেরেছেন৷ বাংলাদেশে গবেষণা খাতে তহবিলের বিপুল সংকট আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি৷ ‘‘বাংলাদেশে গবেষণার ক্ষেত্রে এক-দুই কোটি টাকাকে অনেক অর্থ মনে করা হয়৷ কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে সেটা কিছুই না৷ গবেষণা হচ্ছে এমন এক জায়গা, যেখানে অনেক অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়,'' বলেন সামসাদ৷ মৌলিক গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্র প্রচুর বিনিয়োগ করে বলে জানান তিনি৷ অথচ সামসাদ জানান, বাংলাদেশে বিজ্ঞান মন্ত্রণালয়ে ২০ লক্ষ টাকার ছোট্ট একটি প্রকল্প জমা দিলে পাওয়া যায় এক থেকে দুই লক্ষ টাকা৷ ‘‘আর এটা দিয়েই মন্ত্রণালয় মনে করে ২০ লক্ষ টাকার কাজ হয়ে যাবে,'' মন্তব্য তাঁর৷ আর ‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য বার্ষিক বরাদ্দ দেখলে আপনার হাসি পাবে,'' বলেন সামসাদ৷যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে তিনি যে গবেষণা করছেন সেখানে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন৷ যেমন অ্যান্টার্কটিকায় কি মানুষ স্বাভাবিকভাবে বসবাস করতে পারবে? সেটি করতে হলে মানুষের শরীরে কি কি পরিবর্তন আনতে হবে?পরিচিত কোনো গাছকে কি অ্যান্টার্কটিকায় জন্মানোর উপযোগী করা যায়?

সাক্ষাৎকার: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ