1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সরকারের দেয়া তথ্য বিশ্বাস করা কঠিন

৪ মে ২০২০

ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, মৃতের সংখ্যা ১৭৭, সুস্থ হয়ে ফেরার সংখ্যাও ১৭৭, অথচ আগের দিন (রোববার) প্রেসব্রিফিংয়ে মৃতের সংখ্যা ১৭৭ বলা হলেও রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া মানুষের সংখ্যা বলা হয়েছিল এক হাজার ৬৩৷ 

https://p.dw.com/p/3bjuI
ছবি: corona.gov.bd

এটা করোনা সংকট মোকাবিলায় সমন্বয়হীনতার একটা দৃষ্টান্ত মাত্র৷ এমন দৃষ্টান্ত আরো অনেক দেয়া যাবে৷ 

অবশ্য বিষয়টাকে অন্যভাবেও দেখা যেতে পারে৷

 মনে হতেই পারে যে, দায়িত্বশীলদের অনেকে সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের সুনজরে থাকার খুব চেষ্টা করছেন, কিন্তু জাতীয় দুর্যোগ গুরুত্ব দিয়ে মোকাবেলার চেষ্টা ঠিক সেভাবে তারা করছেন না৷ তাদের কাছে মনে হয় ‘চাকরি বাঁচানো’ এবং ব্যক্তিগত উন্নতির ধারা অব্যাহত রাখাই ‘ফরজ’৷

এই প্রবণতা নতুন কিছু নয়৷ 

তবে মারণব্যাধি মোকাবিলা করার সময়ও প্রশাসনকে পুরনো এই ব্যাধি থেকে মুক্ত রাখতে না পারা সরকারের জন্য খুব বড় ব্যর্থতা৷ 

মূলত এ কারণেই বাংলাদেশের মানুষ বেশি ভুগছে৷ হ্যাঁ, করোনা সংকটেও ভোগান্তির মূল কারণ এটাই৷ ‘দায়িত্বশীলরা’ সব কাজ সততা নিয়ে, গুরুত্ব দিয়ে করলে দেশে ‘‘লকডাউন আছে এবং লোকজন নেই’’-এর মতো অদ্ভুত পরিস্থিতি কখনোই তৈরি হতো না৷

যেসব দেশ করোনা সংকট মোকাবেলায় খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেয়নি, তাদের জন্য সংকট ভয়াবহ হয়ে উঠেছে৷ যুক্তরাষ্ট্র, ইটালি, স্পেন, ব্রিটেন, ইরান ইত্যাদি তার প্রমাণ৷ দেরিতে সক্রিয় হওয়া দেশগুলোর  স্বাস্থ্যব্যবস্থাও উন্নত না হলে তো আরো মুশকিল৷ 

আর বাস্তবতা হলো, করোনা সংকটকে বাংলাদেশ কার্যত অনেক দেরিতেই গুরুত্ব দিয়েছে এবং এ দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা অর্থনীতির চেয়েও অনেক বেশি দুর্বল৷ সুতরাং লড়াইটা যে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইরানের চেয়ে অনেক কঠিন হবে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ মৃতের সংখ্যা এখনো কম, সংক্রমণের হার খুব বেশি নয়- ইত্যাদি বলে যারা এখনো তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছেন অচিরেই তারা লজ্জায় মুখ লুকালে খুব অবাক হবো না৷

কার্যকর উদ্যোগের পাশাপাশি তথ্য পরিবেশনে স্বচ্ছতা, বিশ্বাসযোগ্যতা না বাড়ালে সংকট বাড়তেই থাকবে৷

এ আশঙ্কা আরো বাড়িয়েছে সুস্থ হয়ে ফেরা রোগীর সংখ্যা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য৷ রবিবার অধিদপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে, নতুন ক্লিনিক্যাল মানেজমেন্ট কমিটির গাইডলাইন অনুযায়ী, এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে ফেরা রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৬৩৷

Ashish Chakraborty
আশীষ চক্রবর্ত্তী, ডয়চে ভেলেছবি: DW/T. Mehedi

সংখ্যাটি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় অনেকের মনে সংশয় দেখা দিয়েছে৷ বিশ্বাস করতে পারছেন না অনেকেই৷ গণমাধ্যমে অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে এর একটা ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে৷ বলা হচ্ছে, অল্প সময়ের ব্রিফিংয়ে সব তথ্য বিস্তারিতভাবে দেয়া যায় না, মূলত এ কারণেই নাকি কিঞ্চিৎ অবিশ্বাস্য এই সংখ্যা বৃদ্ধি৷ আরো বলা হচ্ছে, করোনায় সংক্রমিত হলে সেরে উঠতে উঠতে ২৪ দিনও লেগে যায়, সুতরাং সুস্থ হয়ে ফেরার সংখ্যা নিয়ে প্রতিদিন নতুন তথ্য দেয়া সম্ভব নয়৷

প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য দিতেই হবে এমন কোনো কথা নেই৷ তা প্রত্যাশিতও নয়৷ 

তবে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হবে এক কথা, ওয়েবসাইটে থাকবে আরেক তথ্য-  এমনটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত৷ করোনা সংকট ছেলেখেলার বিষয় নয়৷ যে-কোনো উপায়ে যা খুশি তথ্য দিলেই বিশ্বাস করতে কেউ বাধ্য নয়৷