1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সর্বদলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা

৭ ডিসেম্বর ২০১৮

সর্বদলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে৷ দেশকে হতে হবে বিনিয়োগবান্ধব৷ একইসঙ্গে স্বাধীনতার চেতনা অক্ষুণ্ণ রেখে গড়ে তুলতে হবে একটি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ৷ ডয়চে ভেলে আয়োজিত টক শোয়ে এমনই সব প্রত্যাশার কথা উঠে আসে৷

https://p.dw.com/p/39h9W
#WhatBangladesh do you want
ছবি: DW/P. Böll

আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে হতে যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন৷ বাংলাদেশের এই নির্বাচনকে ঘিরে দেশের জনগণের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের উন্মাদনাও কম নয়৷ তারই জের ধরে ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগ আয়োজন করেছিল বিশেষ টক শোয়ের৷ ‘#কেমনবাংলাদেশ আমি দেখতে চাই’ শীর্ষক এই আলোচনাটি জার্মানির বন শহরে অবস্থিত ডয়চে ভেলের প্রধান কার্যালয় থেকে ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে৷ বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার আরটিভি এবং বাংলা ট্রিবিউনও অনুষ্ঠানটি তাদের নেটওয়ার্কে প্রচার করেছে৷  

ডয়চে ভেলের অনুপম দেব কানুনজ্ঞের সঞ্চালনায় এতে অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রবাসী রাজনীতিক বশিরুল আলম চৌধুরী, বিএনপির রাজনীতিক মোস্তাক খান, জার্মান রাজনৈতিক দল গ্রিন পার্টির সক্রিয় সদস্য শাহাবুদ্দিন মিয়া, প্রবাসী সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্ট শরাফ আহমেদ এবং গবেষক তন্বী নওশিন৷

<iframe src="https://www.facebook.com/plugins/video.php?href=https%3A%2F%2Fwww.facebook.com%2Fdw.bengali%2Fvideos%2F331497427701051%2F&show_text=0&width=560" width="560" height="315" style="border:none;overflow:hidden" scrolling="no" frameborder="0" allowTransparency="true" allowFullScreen="true"></iframe>

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে এই আলোচনায় যোগ দেন ক্যানসার গবেষক ড. গোলাম আবু জাকারিয়া এবং প্রকৌশলী মোনাজ হক৷ টক শো চলাকালে ডয়চে ভেলের স্টুডিওতে উপস্থিত ছিলেন জার্মানির বিভিন্ন শহর থেকে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিরা৷ এছাড়াও বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্নস্থান থেকে দর্শকরা যোগ দেন ফেসবুক কমেন্টের মাধ্যমে৷

টক শো শুরুর আগে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডয়চে ভেলের মুখপাত্র ক্রিস্টফ ইউম্পেল্ট৷ তিনি জার্মানপ্রবাসী বাংলাদেশিদের এই আয়োজনে স্বাগত জানান এবং বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তাঁর প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন৷ ক্রিস্টফ বলেন, এই নির্বাচনটি বাংলাদেশের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ এর আগের জাতীয় নির্বাচনে  সার্বিকভাবে কোনো বিরোধী দলের অংশগ্রহণ চোখে পড়েনি৷ কিন্তু এবার বিরোধী দলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে৷ অন্যান্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মতো ডয়চে ভেলেও এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে৷ তাঁর প্রত্যাশা, এই নির্বাচনের আগেই বাংলাদেশে গুম-খুন বন্ধ হবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হবে৷ 

#WhatBangladesh do you want
টক শোতে বক্তব্য রাখছেন প্রবাসী সাংবাদিক শরাফ আহমেদ

তাঁর কথায়, ডয়চে ভেলে সবসময় বাকস্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়িয়েছে৷ বাংলাদেশের মানুষ গণতান্ত্রিক ও বাকস্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ অধিকার পাক এমনটাই প্রত্যাশা তাঁর৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিশ্বখ্যাত বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহীদুল আলম যেন অচিরেই তাঁর বিরুদ্ধে চলমান মামলা থেকে অব্যাহতি পান৷ জামিনে মুক্ত রয়েছেন তিনি, কিন্তু মামলা চলমান৷ তাই এটি একেবারেই প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান তিনি৷ এছাড়া আয়োজনে উপস্থিত বাংলাদেশিদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সকলকে শুভকামনা জানান তিনি৷ 

সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই প্রত্যাশা...

সঞ্চালক অনুপম দেব কানুনজ্ঞ আলোচনা শুরু করেন নির্বাচন নিয়ে৷ নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' কী অবস্থায় আছে – এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রবাসী রাজনীতিক ও জার্মান আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট বশিরুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘আমার মতে সবার সমান অধিকার নিশ্চত করাটাই ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' এবং আওয়ামী লীগ সরকার ইতোমধ্যে সেটা করতে সক্ষম হয়েছে৷ নির্বাচনে সর্বদলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে এই সরকার৷'' তাই তিনি মনে করেন রাজনৈতিক সমতা বিরাজ করছে নির্বাচনি আবহে৷

তবে এ প্রসঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন বিএনপির রাজনীতিক মোস্তাক খান৷ তিনি বলেন, মনোনয়ন দাখিলের পর ১৯৭২ জন গ্রেফতাসহ নানা জটিলতার মুখোমুখী বিএনপি৷ এদিকে পল্টনে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে আওয়ামী লীগ নির্বাচনপূর্ব সহিংসতার সৃষ্টি করেছে ষড়যন্ত্র করে৷ নির্বাচন কমিশনে মনোনয়ন নিতে এসে লাশ হয়েও ফিরতে হয়েছে বিএনপি নেতার৷ তাই এই নির্বাচনি পরিবেশকে তিনি ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' বলতে অস্বীকৃতি জানান৷

এ সময় দর্শকের আসন থেকে আলোচনায় যুক্ত হন বিএনপির একজন সমর্থক৷ তিনি বলেন, ‘‘বিএনপির শক্তি তার ভোটার এবং নির্বাচন স্বচ্ছ হলে এটি প্রমাণিত হবে৷'' 

#WhatBangladesh do you want
টক শোতে উপস্থিত অ্যাক্টিভিস্ট তন্বী নওশীন

জার্মান রাজনৈতিক দল গ্রিন পার্টি বা সবুজ দলের সক্রিয় সদস্য শাহাবুদ্দিন মিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন কীভাবে আসতে পারে তা নিয়ে প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে আর গণতন্ত্র হচ্ছে সেটাই যখন জনগণ নির্বাচনে স্বচ্ছভাবে ভোট দিতে পারে৷'' তিনি জার্মান গণতন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বলেন, এখানে জনসমর্থনের ভিত্তিতে সরকার গঠিত হয়৷ তাই বাংলাদেশের নির্বাচনেও তিনি এমনটা প্রত্যাশা করেন৷

এ সময় সঞ্চালকের প্রশ্নের মুখে তিনি জার্মানির শরণার্থীদের প্রতি বিদ্বেষ নিয়ে কথা বলেন৷ বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৭৩ বছর পর এই দেশের সার্বিক সংস্কৃতি ও আচারে অনেক পরিবর্তন হয়েছে৷

প্রবাসী সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্ট সরাফ আহমেদ বলেন, একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ হচ্ছে৷ সবার অংশগ্রহণটাকেই বড় করে দেখছেন তিনি৷ তিনি এই নির্বাচনকে ভীষণ ইতিবাচক বলে আখ্যা দেন৷ তিনি বলেন, এই যে সবাই অংশ নিচ্ছে এটিই গণতন্ত্র৷ তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশে এটি অব্যাহত থাকবে৷

#WhatBangladesh do you want
প্রকৌশলী মীর মোনাজ হক তুলে ধরেন তাঁর অভিজ্ঞতা

অন্যদিকে প্রবাসী গবেষক তন্বী নওশিনের কথায় উঠে আসে সারা বিশ্বের গণতান্ত্রিক সংকটের প্রসঙ্গ৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে সুন্দরবন, কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন হয়েছে৷ তবে এখানে এইসব আন্দোলন নীতিনির্ধারক পর্যায়ে পরিবর্তন আনতে পারেনি৷ রাজপথেই শেষ হয়েছে বা চলছে৷'' তবে গণজাগরণ মঞ্চের যে আন্দোলন ছিল, সেটিকে সফল বলে অভিহিত করে তন্বী আওয়ামী লীগ সরকারকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে ধন্যবাদ জানান৷ একইসঙ্গে পরবর্তীকালে ধর্মীয় আবেগ ব্যবহার করে যে রাজনৈতিক কৌশল করছে এই সরকার, তা নিয়ে আক্ষেপও প্রকাশ করেন তিনি৷

নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় যাওয়া প্রসঙ্গে বশিরুল আলম বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ তার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হবে না৷ বরং তারা এই আদর্শের জের ধরেই ধর্মনিরপেক্ষ ও বিদ্বেষহীণ বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখে৷ আদর্শ বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যেই তারা কাজ করে আসছে৷''

তিনি আরও উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ কোনো সামরিক বাহিনী নয়, তাদের শক্তি জনগণ৷ এই শক্তির বলেই তিনি আবার ক্ষমতায় আসার প্রত্যাশা রাখেন৷ তিনি আরও বলেন, বিশ্বের সব দেশেই সরকার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করে, যা বাংলাদেশেও হতে যাচ্ছে৷ এটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশেরই একটি মাইলফলক৷ 

#WhatBangladesh do you want
ডয়চে ভেলের টক শোতে বক্তব্য রাখছেন ক্যানসার গবেষক ড. গোলাম আবু জাকারিয়া

এ সময় দর্শকদের মধ্য থেকে প্রবাসী রাজনীতিক ইউনুস খান আওয়ামী লীগ সরকারকে ধন্যবাদ জানান৷ তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও অন্যান্য সংকট মোকাবেলা করছে, তা নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য৷

এই আলাপের জের ধরে বিএনপির রাজনৈতিক শক্তির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন মোস্তাক খান৷ তিনি বলেন, ‘‘আজকে বিএনপির ঐক্যফন্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে নির্বাচনটি দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার পরিকল্পনা৷ অন্যায়ভাবে কারাবন্দী হওয়ার আগেই তিনি দলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ঐক্য করার এবং দল সেই পথেই এগিয়ে যাচ্ছে৷'' স্বচ্ছ নির্বাচন হলে জনগণই জবাব দেবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি৷

ওদিকে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেন সরাফ আহমেদ৷ তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে এটি স্বাধীনতার অভ্যুদয় থেকেই এসেছে৷ তার পরে স্বাধীণতার যে মূল দাবি ধর্ম নিরপেক্ষ বাংলাদেশ সেটা ব্যহত হচ্ছে৷ বাংলাদেশে বিএনপি-যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াতের সঙ্গে জোট করে নির্বাচনে জয়ের চেষ্টা করে আসছে৷ একইভাবে আওয়ামী লীগ হেফাজতের সঙ্গে জোট করেছে ৮৩ শতাংশ মুসলমানকে পাশে পাওয়ার উদ্দেশ্যে৷ রাজনীতিতে ধর্ম টেনে আনার কৌশল ভোট জেতার জন্যই বলে দাবি করেন তিনি৷ অথচ জার্মানিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে, বলেন তিনি৷ 

#WhatBangladesh do you want
ডয়চে ভেলের টক শোতে সঞ্চালক অনুপম দেব কানুনজ্ঞ’র (বাম থেকে) সঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ বশিরুল আলম চৌধুরী ও বিএনপির রাজনীতিবিদ মোস্তাক খানকে দেখা যাচ্ছে

সরাফ আহমেদের বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের বশিরুল আলম বলেন, ‘‘বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, জামায়াত সরাসরি অংশ নিতে পারছে না নির্বাচনে৷ জামায়াতের বিচারও করবে আওয়ামী লীগ সরকার৷ তবে আমাদের এটি মাথায় রাখতে হবে আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল, বিচারিক আদালত নয়৷ বিচারের দায়িত্ব  আদালতের৷ আর সেটা নিশ্চয় হবে৷ 

এ সময় দর্শকদের পক্ষ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি বন্যা ফেরদৌস দেশ এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজনৈতিক স্বার্থে ছাড়ের দাবি জানান৷ জার্মানিতে আশ্রয় নেওয়া ব্লগার পৃথু স্যন্যাল বলেন, বাংলাদেশে মৌলবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে৷ তাই তিনি ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের দাবি করেন, যেখানে অভিজিতরা খুন হবে না৷

চাই উন্নয়ণশীল বিনিয়োগ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ বান্ধব বাংলাদেশ...

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ‘কেমন বাংলাদেশ চাই’ প্রসঙ্গে ক্যানসার গবেষক গোলাম আবু জাকারিয়া প্রবাসীদের সহায়তায় বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন৷ তবে প্রবাসীদের এই অবদান তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি৷ এর সঙ্গে বাংলাদেশে পরিবেশ বিষয়ক জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘পরিবেশকে সর্বতভাবে গুরুত্ব দিতে হবে৷’’

#WhatBangladesh do you want
ডয়চে ভেলের মুখপাত্র ক্রিস্টফ ইউম্পেল্ট এবং এশিয়া বিভাগের প্রধান দেবারতি গুহ অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন

প্রকৌশলী মোনাজ হক বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সংকট হচ্ছে যে আমরা মূল ধারা থেকে সবসময় অনেক দূরে থাকি৷ নির্বাচনি ইশতেহারের পরিবর্তে আমরা নির্বাচন কমিশন নিয়ে বেশি ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি৷ অথচ এটি হওয়ার কথা ছিল না৷'' একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি ধর্মনিরপেক্ষ উন্নয়নশীল বাংলাদেশ দেখতে চান৷ তবে একইসঙ্গে হতাশা প্রকাশ করেন এই বলে যে, ‘‘মোট চারবার ক্ষমতায় থেকে স্বাধীনতার পক্ষের দল আওয়ামী লীগও আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে৷''

সরাফ আহমেদ বলেন, দেশের বিভাজন দূর করতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে৷ তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, দশট্রাক অস্ত্র এবং গুম, খুন, ক্রসফায়ারের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘এগুলো বন্ধ করতে প্রধান রাজনৈতিক দলদের একসঙ্গে বসতে হবে৷'' তিনি আরও জানান, এটা হতাশার যে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে পরিবেশ বিষয়ে আলোচনা নেই৷ 

বিএনপির মোস্তাক খান বলেন, ‘‘বাঁচতে হলে সবুজ দরকার৷ বিএনপি সেই সবুজ নিয়ে কাজ করবে এমন প্রতিশ্রুতি রয়েছে৷ তবে তার আগে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন – এগুলো বন্ধ করতে হবে অবিলম্বে৷ নতুবা এটা সম্ভব হবে না৷''

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী রাজনীতিক বশিরুল আলম বলেন, ‘‘পরিবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগেরও নিজস্ব ইশতেহার রয়েছে৷ এই সরকারের আমলেই পরিবেশ মন্ত্রণালয় শক্তিশালী হয়েছে৷'' 

#WhatBangladesh do you want
জার্মানির গ্রিন পার্টির রাজনীতিবিদ শাহাবুদ্দিন মিয়া (ডানে)

পরিবেশ বিষয়ে মোনাজ হক বলেন, ‘‘জার্মানির মতো দেশে গ্রিন মুভমেন্ট আছে৷ কয়লা খনি বন্ধ করে দিয়েছে, একটি পার্টিও গড়ে উঠেছে৷ কিন্তু বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড পরিবেশ নিয়ে আন্দোলন নেই৷'' 

গ্রিন পার্টির শাহবুদ্দিন মিয়া আশা প্রকাশ করেন, ‘‘জার্মানিতে ইতোমধ্যে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, কয়লাও বন্ধের পথে৷ বাংলাদেশেও এমন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে অচিরেই৷''

বিদেশি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে মোনাজ হক প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদাত্ত বিনিয়োগের আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশ সরকারকের পৃষ্ঠপোষকতা দাবি করেন৷

এ বিষয়ে ক্যানসার গবেষক গোলাম জাকারিয়া বাংলাদেশের থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তিগত বিনিয়োগের যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, একজন চাইলেই স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগ করতে পারবে সেটির ভূয়সী প্রশংসা করেন৷ তবে মার্কেটিং স্পেশালিস্ট আসিফ ইকবাল হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘উন্নত এবং আধুনিক বাংলাদেশ আমরা সবাই চাই৷ তবে এখানে প্রশ্ন ফাঁসের মতো ঘটনা ঘটছে, যা শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের সন্দিহান করে তুলছে৷'' বাংলাদেশের সবক্ষেত্রে প্রবাসী গবেষক, বিজ্ঞানীদের সংযুক্ত করার আহ্বান জানান তিনি৷

এর পরিপ্রেক্ষিতে বশিরুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় চায় জনগণের অংশগ্রহণ৷ তিনি প্রবাসীদের দেশে গিয়ে আরও উন্নত স্যাটেলাইট তৈরিসহ নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান৷

#WhatBangladesh do you want
দর্শকদের একাংশছবি: DW/P. Böll

সবশেষে সরাফ আহমেদ বাংলাদেশে বিনিয়োগে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও রাজনৈতিক সংকট দূরিকরণের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন৷

এর পরপরই দর্শক সারি থেকে সাংবাদিক আবদুল হাই বলেন যে, পারস্পিক শ্রদ্ধাশীল রাজনৈতিক দল ও সহিংসতামুক্ত বাংলাদেশ চান তিনি৷ তরুণ প্রবাসী নিয়াজ হাবিব টেকসই উন্নয়ন ও আইনের সুশাসন, উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্বলিত বাংলাদেশ হবে এমন আশা প্রকাশ করেন৷

এছাড়া দর্শকের সারি থেকে সব প্রবাসীরাই বিনিয়োগবান্ধব বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান৷ একইসঙ্গে গুম, খুন ও ধর্ষণমুক্ত সংকটহীন বাংলাদেশের প্রত্যাশা করেন তারা৷

#WhatBangladesh do you want
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান