1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্বাচনে দাঙ্গার প্রভাব

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১৪ জানুয়ারি ২০১৪

উত্তর প্রদেশের মুজফ্ফরনগরের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে কী প্রভাব ফেলবে এবং কীভাবে? এই দাঙ্গার ফলে ভোটব্যাংক রাজনীতির অভিমুখ কী ঘুরে যেতে পারে? সমাজবিজ্ঞানীরা কী মনে করেন?

https://p.dw.com/p/1ApqA
Ausschreitungen nach Protesten in Singapur
ছবি: Reuters/Mark Cheong/The Straits Times

পশ্চিম উত্তর প্রদেশের মুজফ্ফরনগর ও তার আশেপাশের জেলাগুলিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর আবার মাথা তুলেছে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে ঘিরে বিতর্ক৷ আঙুল তোলে হচ্ছে একে অপরের বিরুদ্ধে৷ ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধর্মীয় মেরুকরণের ফায়দা তুলতে ময়দানে নেমে পড়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি৷ তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ শিবির তোপ দেগেছে বিজেপিলালিত হিন্দুত্ববাদী গৈরিক সেনাদের দিকে৷ কংগ্রেস দায়ী করছে উত্তর প্রদেশের শাসকদল সমাজবাদী পার্টিকে৷ কংগ্রেসের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকার সতর্ক করে দেয়া সত্ত্বেও সমাজবাদী সরকার দাঙ্গা রোধে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়নি৷ তাই এবার, এর ফায়দা তুলবে মায়াবতির দলিত পার্টি বিএসপি, এমনটাই মনে করেন জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপিকা সুধা পাই৷

Indien Relief Camp in Malakpur
দাঙ্গার পরবর্তী চিত্র – শরণার্থী ক্যাম্পছবি: SAJJAD HUSSAIN/AFP/Getty Images

কীভাবে? পশ্চিম উত্তর প্রদেশে হিন্দু জাঠ আর মুসলিমদের মধ্যে সৌহার্দ দীর্ঘদিনের৷ সেই জাঠ সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট নেতা ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী চরণ সিং-এর আমল থেকে৷ প্রশ্ন হলো, এক দশকের এই সুসম্পর্ক নষ্ট করে কেন জাঠ-মুসলিম সম্প্রদায় রাজনৈতিক দলগুলিকে ফায়দা তোলার সুযোগ দিল? তাঁর মতে, এর অন্তর্নিহিত কারণ হলো অর্থনৈতিক রেষারেষি৷ স্রেফ ধর্মীয় আত্মপরিচয়ের রাজনীতি নয়৷

Indien Narendra Modi Premierminister von Gujarat
নরেন্দ্র মোদীছবি: Sam Panthaky/AFP/Getty Images

পশ্চিম উত্তর প্রদেশে বেশিরভাগ জমি জাঠদের দখলে এবং মুজফ্ফরনগর ও তার লাগোয়া অঞ্চলের চিনি শিল্পে জাঠ সম্প্রদায়ের আধিপত্য বেশি৷ কিন্তু ধীরের ধীরে চিনি শিল্পের অবস্থা খারাপের দিকে যায়৷ মন্দা দেখা দেয় জাঠদের আর্থিক অবস্থায়৷ ভারতীয় আখ চাষি সংগঠনের অভিযোগ, এর কারণ সরকারের প্রতিকূল আখ চাষ নীতি৷ রাজ্যের চিনি শিল্পে আর্থিক লোকসানের বহর বছরে তিন হাজার কোটি টাকা৷ আখের দাম ২০০৫ সালের কুইন্টাল প্রতি ১১৫ টাকা থেকে বেড়ে ২০১০ সালে ১৬৫ টাকা হলেও আখ চাষিদের তাতে লাভ হয়নি চিনি মিলগুলি ঠিকমতো না চলায়৷ পাশাপাশি মুসলিমদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হতে থাকে ঐ এলাকায়৷ বিশেষ করে নির্মাণ শিল্পে দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা মেটায় মূলত মুসলিমরা৷ এছাড়া ফল বাগিচা, অটোমোবাইল ও ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পে দক্ষ মুসলিম শ্রমিকরা অনেক এগিয়ে৷ এই অর্থনৈতিক ব্যবধানে জন্ম নেয় রেষারেষি৷ তাই এটাকে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বলতে নারাজ আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিদ্যার অধ্যাপক এস. পান্ডে৷ গ্রামীণ অর্থনীতির পরিবর্তন থেকে শুরু হয় প্রতিযোগিতার লড়াই৷ সরকারের কাছ থেকে চাকরি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পেতে জাঠরা নিজেদের অন্যান্য অনুন্নত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাতে থাকে যেটা এক দশক আগে জাঠরা ভাবতে পারতো না৷ অর্থনৈতিক সংঘাত থেকেই শুরু হিংসা৷ সবুজ বিপ্লবে জাঠদের ছিল অগ্রণী ভূমিকা ৷

১৯৮৭ সালে চরণ সিং-এর মৃত্যুর পর জাঠ-মুসলিম আতাঁতে ভাটা পড়তে শুরু করে৷ তাতে ইন্ধন জোগায় চরণ সিং-এর ছেলে রাষ্ট্রীয় লোকদলের নেতা অজিত সিং এবং সমাজবাদী নেতা মুলায়েম সিং-এর উস্কানিমূলক ভাষণ৷ অন্যদিকে পশ্চিম উত্তর প্রদেশের ১২টি জেলার ৭৭টি বিধানসভা আসনে জনসংখ্যার দিক থেকে মুসলিম সম্প্রদায় ভারি, প্রায় ৩৩ শতাংশ৷ ৭৭টি বিধানসভার আসনের মধ্যে ২০১২ সালের ভোটে ২৬টি আসন গেছে মুসলিম প্রার্থীদের ঝুলিতে৷ সুতরাং, ধর্মীয় মেরুকরণে কোনো দলেরই লাভ হবে না৷ সবাই চায় নিরাপত্তা৷ ঐ দাঙ্গায় মারা যায় জনা পঞ্চাশেক, গৃহহারা হয় প্রায় ৫০ হাজার পরিবার৷ এইসব পরিবারদের পুনর্বাসন নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনীতির আরেক রংখেলা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান