1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিপর্যয়ের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন দায়ী'

২৪ আগস্ট ২০২১

মানুষের কার্যকলাপের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই জুলাই মাসে পশ্চিম ইউরোপে চরম বিপর্যয় দেখা গেছে বলে এক গবেষণায় দাবি করা হচ্ছে৷ ভবিষ্যতেও এমন ঘটনা সম্পর্কে সতর্ক করে দিচ্ছেন গবেষকরা৷

https://p.dw.com/p/3zPNN
Griechenland, Vilia | Einsatzkräfte bekämpfen einen Waldbrand
ছবি: REUTERS

গত মাসে জার্মানির পশ্চিমাঞ্চল, বেলজিয়ামের পূর্বাঞ্চল, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবুর্গ ও সুইজারল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে অস্বাভাবিক মাত্রায় বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দেখা গেছে৷ ১২ ও ১৫ই জুলাইয়ের বিপর্যয়ের কারণে শুধু জার্মানি ও বেলজিয়ামে কমপক্ষে ২২০ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ বিপর্যস্ত এলাকায় এখনো স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসে নি৷ সরকারি ও বেসরকারি সহায়তার মাধ্যমে ত্রাণ ও পুনর্গঠনের উদ্যোগ চলছে৷ এমন প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে, এমন ঘটনার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন কতটা দায়ী?

মঙ্গলবার প্রকাশিত এক গবেষণার রিপোর্ট অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয় আরও ঘনঘন ঘটছে৷ ‘ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন ইনিশিয়েটিভ' নামের উদ্যোগের আওতায় এই গবেষণা চালানো হয়েছিল৷ এর আওতায় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ থেকে এখনো পর্যন্ত আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে৷ তাতে দেখা গেছে, তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মারাত্মক বৃষ্টিপাতের ঘটনা বাড়ছে৷ অথচ অতীতে প্রতি ৪০০ বছরে এমন ধ্বংসলীলা দেখা যেত৷ গবেষণার ফল অনুযায়ী গড় তাপমাত্রা মাত্র শূন্য দশমিক আট শতাংশ বাড়লেই সেই সময়সীমা ৩০০ বছর পর পর বড় আকারের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে৷ সেইসঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও বেড়ে চলেছে৷ তথ্য-উপাত্তের উপর ভিত্তি করে গবেষকরা মানুষের কার্যকলাপের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনকেই এমন বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করছেন৷

পশ্চিম ইউরোপের বিপর্যস্ত এলাকায় বৃষ্টিপাতের মাত্রা মাত্র এক দিনে তিন শতাংশ থেকে বেড়ে ১৯ শতাংশ ছুঁয়েছিল৷ একই সময়কালে গড় তাপমাত্রা এক দশমিক দুই শতাংশ বেড়েছে৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, পৃথিবীর তাপমাত্রা মাত্র এক ডিগ্রি বাড়লেই বাতাস বাড়তি সাত শতাংশ পানি শুষে নিতে পারে৷ স্বাভাবিকভাবে সেই পানি ছাড়া হলে প্রবল বৃষ্টিপাত অনিবার্য৷ ইউরোপের ছয়টি দেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪০ জন গবেষক ইউরোপের  সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতের জন্য মারাত্মক পূর্বাভাস দিয়েছেন৷ তাঁদের মতে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে এমন ঘটনার আশঙ্কা এক দশমিক দুই শতাংশ থেকে নয় গুণ বাড়তে পারে৷ এমন পরিস্থিতি এড়াতে সব দেশকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর চেষ্টা চালাতে হবে এবং এমন বিপর্যয়ের জন্য আরও প্রস্তুতি নিতে হবে৷

গবেষক দলের অন্যতম সদস্য জার্মানির আবহাওয়া দফতর ডিডাব্লিউডি-র বিশেষজ্ঞ ফ্রাংক ক্লাইয়েনকাম্প বলেন, জাতিসংঘের সাম্প্রতিক জলবায়ু সংক্রান্ত রিপোর্টের সঙ্গে এই গবেষণার ফল মিলে যাচ্ছে৷ তাঁর মতে, মানুষই যে পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তন করছে ও এই গ্রহকে আরও উষ্ণ করে তুলছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ এমন উষ্ণায়নের কারণে আরও ঘনঘন চরম আবহাওয়া দেখা যাচ্ছে৷ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ফ্রিডেরিকে অটো বলেন, ইউরোপের সাম্প্রতিক বন্যা স্পষ্ট দেখিয়ে দিয়েছে যে এমনকি শিল্পোন্নত দেশগুলিও চরম আবহাওয়ার প্রভাব এড়াতে পারে না৷ বিজ্ঞান জগত বহু বছর ধরে সাবধান করে দিলেও বাস্তবে টনক নড়েনি৷ এবার জরুরি এই আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সময় এসে গেছে৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য