1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সিএএ-বিরোধী কথা শুনেই থানায় উবার চালক

৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

দোষের মধ্যে উবারে চড়ে ফোনে বন্ধুর সঙ্গে সিএএ-এনআরসি বিরোধী কথা বলছিলেন বাঙালি কবি। তার জন্য প্রবল হয়রানির মুখে পড়তে হল তাঁকে৷

https://p.dw.com/p/3XPE0
ছবি: picture-alliance/AA/J. Sultan

মুম্বইয়ে সিএএ বিরোধী বিক্ষোভদেখিয়ে উবারে বাড়ি ফিরছিলেন বাঙালি কবি বাপ্পাদিত্য সরকার৷ ফোনে তিনি এক বন্ধুকে জানাচ্ছিলেন, দিল্লির শাহিনবাগে 'লাল সেলাম' স্লোগান কীভাবে লোককে অস্বস্তিতে ফেলেছিল তা নিয়ে৷ উবার চালক সেই সব কথা শুনছিলেন৷ কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি গাড়ি থামান৷ বপ্পাদিত্যকে বলেন, এটিএমে যাবেন একটু পরে দু'জন পুলিশ কর্মীকে নিয়ে তিনি ফিরে আসেন৷ চালকের অভিযোগ ছিল, বাপ্পাদিত্য ফোনে বলছিলেন, তিনি কমিউনিস্ট৷ দেশকে জ্বালানোর কথা, মুম্বইয়ে শাহিনবাগ করার কথা বলছিলেন৷ তাই তিনি সোজা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। কেউ দেশকে ধ্বংস করবে, আর তিনি তা বসে বসে দেখবেন, এটা হতে পারে না৷

বাপ্পাদিত্য বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, তিনি চালকের কাছে জানতে চান, পুলিশের কাছে যাওয়ার আগে কেন তাঁর সঙ্গে কথা বললেন না ওই চালক? তাতে চালকের জবাব, ভাগ্য ভালো তাঁকে পুলিশের কাছে আনা হয়েছে। অন্য কোথাও পাঠানো হয়নি৷ চালক কী বলতে চাইছেন তা বুঝতে অসুবিধা হয় না৷

বাপ্পাদিত্যের বিবৃতি অনুযায়ী, পুলিশ তাঁর কাছ থেকে জানতে চায়, কেন তিনি ডাফলি (বাদ্যযন্ত্র) নিয়ে ঘুরছেন। তিনি জবাব দেন, সিএএ বিরোধী প্রতিবাদে গিয়েছিলেন। সেখানে ডাফলি বাজিয়ে স্লোগান দিয়েছেন৷ পুলিশ তাঁকে জানায়, পরিস্থিতি ভালো নয়৷ তিনি যেন ডাফলি নিয়ে বা গলায় লাল স্কার্ফ জড়িয়ে না ঘোরেন৷ পুলিশ দু'জনের জবানবন্দি রেকর্ড করে। রাত একটা নাগাদ তাঁর এক বন্ধু থানায় আসেন, তারপর পুলিশ বাপ্পাদিত্যকে ছেড়ে দেয়৷

এই ঘটনা নিয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নীলোৎপল বসু ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''আমরা তো আগেই বলেছি, আরএসএস ও বিজেপির মূল নিশানা হলেন বামপন্থীরা৷ তারা নিরন্তর প্রচার করে যাচ্ছে৷ তার কিছু  ছাপ পড়েছে৷ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, প্রধানমন্ত্রী যখন সংসদে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদের অধিকারকে অস্বীকার করেন, তখন জনমানসে তার প্রভাব পড়ে৷ শুধু বামপন্থী নয়, এর মোকাবিলা করা নাগরিক সমাজের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ৷'' বিজেপি নেতারা অবশ্য হামেশাই স্বীকার করেন, মতাদর্শের ক্ষেত্রে বামেরা তাঁদের প্রধান শত্রু৷

কিন্তু কেন এরকম ঘটনা ঘটছে? লেখক ও প্রবীণ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''এই যে বারবার করে কোনও ব্যক্তি বা সংগঠনকে দেশের শত্রু, সমাজের শত্রু বলে প্রচার চলছে, তাতে একটা সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে৷ লোকে চাকরি খোঁজার মতো শত্রু খুঁজতে শুরু করেছে৷ পরিস্থিতি বেশ ঘোরালো হয়ে উঠছে৷''

পরিস্থিতি যে ঘোরালো তা বাপ্পাদিত্যর হয়রানির ঘটনাই বলে দিচ্ছে৷ তাকে ঘিরে উবার চালক ও পুলিশের কথা থেকে পরিষ্কার, সন্দেহ, ঘৃণা, শত্রু খোঁজার প্রয়াস কীভাবে লোককে বিপাকে ফেলতে পারে৷

জিএইচ/এসজি(এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে)