1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সিরিয়ার উদ্বাস্তুতে লেবাননে ব্যবসা চাঙা

১ জুলাই ২০১৭

গত তিন বছরে লেবাননের মুদি দোকানদার আলী খিয়ামী তাঁর দোকানে অতিরিক্ত ছয় জন কর্মচারী নিয়োগ করেছেন৷ দোকানের লাভের টাকায় কিনেছেন বসবাসের জায়গা৷ অনায়াসে জুগিয়েছেন সন্তানদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ৷

https://p.dw.com/p/2fgxF
ছবি: picture alliance/AP Photo/H. Malla

ঋণগ্রস্ত দোকানদার থেকে বর্তমান অবস্থায় আসার পেছনে ভূমিকা রেখেছে সিরিয়া থেকে যাওয়া উদ্বাস্তুরা৷সিরিয়ার এসব মানুষ জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির আওতায় একটি ইলেকট্রনিক কার্ড পায়৷ সেই কার্ডের মাধ্যমে তাঁদেরকে মুদি দোকানের মাল কিনতে প্রতি মাসে মাথাপিছু ২৭ ডলার করে দেয়া হয়৷

এই সহযোগিতা কেবল উদ্বাস্তুদের জীবনেই প্রভাব ফেলেনি, এতে লাভবান হচ্ছে লেবাননের ব্যবাসয়ীরাও৷খিয়ামী বলেন, এই কর্মসূচি আমার জীবন বদলে দিয়েছে৷তিনি জানান, পূর্বে তার মাসিক আয় ২ হাজার ডলারের মতো ছিল৷ এখন এটা বেড়ে ১০ হাজার ডলার হয়েছে৷ 

যেভাবে সমুদ্র জয় করলেন আলী

দক্ষিণ বৈরুতের এই দোকানে দরজায় একটি ছোট নীল স্টিকার লাগানো আছে৷ তা দিয়ে বোঝা যায়, দোকানটি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি অনুমোদিত৷ দেশজুড়ে এ রকম দোকান আছে আরো ৫০০টি৷

লেবাননের জনসংখ্যা ৪০ লাখের মতো৷ এই দেশে সিরিয়ার ১০ লাখের মতো সিরিয়ার উদ্বাস্তু আশ্রয় নিয়েছে৷ এরা লেবাননের ভঙ্গুর পানি-বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর চাপ তৈরি করেছে৷

সিরিয়ার এই সংকট অন্তত দুই লাখ লেবানিজকে নতুন করে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে, যেখানে আগে থেকেই ১০ লাখের মতো মানুষ দরিদ্র ছিল৷

এই কর্মসূচি থেকে ৭ লাখ সিরিয়ান উদ্বাস্তু উপকৃত হচ্ছে৷ ডেবিট কার্ডের লেনদেনও অর্থনৈতিক চাপ মোকাবেলায় কিছুটা ভূমিকা রাখছে৷

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মুখপাত্র অ্যাডওয়ার্ড জনসন এএফপিকে বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে কেবল উদ্বাস্তুরা উপকৃত হচ্ছে না৷ বরং যখন লেবানিজ দোকান থেকে পণ্য কেনা হয়, তখন তাঁরাও উপকৃত হচ্ছে৷

২০১৩ সালে এই কর্মসূচি শুরুর পর উদ্বাস্তুরা ডাব্লিউএফপিতে এসব নিবন্ধিত দোকান থেকে ৯০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য কিনেছেন৷ পণ্যের দাম, প্রাপ্যতা, পরিচ্ছন্নতা, উদ্বাস্তুদের অবস্থানস্থলের সঙ্গে নৈকট্য ইত্যাদি বিবেচনা করে দোকানকে এই নিবন্ধন দেয়া হয়৷ 

খিয়ামীর দোকানে আসা একজন সিরিয়ান ক্রেতা বলেন, এই কর্মসূচির ফলে উদ্বাস্তুদের বোঝা মনে করার পরিবর্তে এই দোকানদারের মতো অনেকে তাঁদেরকে নিজেদের ভাগ্যলক্ষ্মী মনে করে৷

এই প্রক্রিয়ার ফলে সুনির্দিষ্ট এই দোকানগুলোতে সিরিয়ানদের পছন্দের পণ্যও যত্ম করে রাখা হচ্ছে৷

লেবাননের বেকা উপত্যকার এ রকম অন্য এক দোকানদার সাদেক হামজা জানান, বর্তমানে তাঁর ৬০ ভাগ ক্রেতাই সিরিয়ান৷ বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় কম দামে অন্যদেরও পণ্য দিতে পারছেন৷       

পশ্চিম বৈরুতের ওমর আল-শেখের অভিজ্ঞতা অবশ্য কিছুটা ভিন্ন৷ যদিও উদ্বাস্তুরা আসায় তাঁর মাসিক আয় প্রায় দ্বিগুন হয়েছে৷ তবে তিনি প্রায় ২০ শতাংশ লেবানিজ ক্রেতা হারিয়েছেন৷

কারণ লেবানিজরা ভীড় এড়াতে চায়৷ অনেকের বিদ্বেষপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গিও থাকতে পারে৷ মাঝে মধ্যে অনেক লেবানিজ ক্রেতা মুখ ফুটে সিরিয়ানদের বিষয়ে অভিযোগও করেছে৷

তবে ওমর এসব বিষয়কে খুব একটা আমলে নিতে চান না৷ তিনি সিরিয়ানদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ অব্যাহত রাখতে চান৷

এএফপি /এসএন