1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সিরিয়ায় তুরস্কের হামলা, জার্মানির উভয় সংকট

১১ অক্টোবর ২০১৯

সিরিয়ায় নতুন ভূরাজনৈতিক সঙ্কটে কোন পক্ষ নেবে জার্মানি তা নির্ধারণে ভূমিকা রাখতে পারে দেশটিতে বসবাসরত তুর্কি আর কুর্দি গোষ্ঠী৷ এরই মধ্যে আঙ্কারাকে যুদ্ধ থামাতে চাপ দেয়ার জন্য কুর্দি নেতারা জার্মানির প্রতি আহবান জানিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/3R7ng
Wolfsgruß der Grauen Wölfe
ছবি: Imago/ZumaPress/S. Babbar

বুধবার থেকে উত্তর সিরিয়ার কুর্দি অঞ্চলে সামরিক হামলা শুরু করেছে তুরস্ক৷ যা এই অঞ্চল নিয়ে জার্মান সরকারের কূটনৈতিক অবস্থানকে সংকটের মধ্যে ফেলেছে৷ 

সিরিয়ার কুর্দি অঞ্চলে মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন জোটে আছে জার্মানি৷ ২০১৭ সালে তারা সেখানে ৫ কোটি ইউরোও পাঠিয়েছে৷ আবার উত্তর ইরাকে মিশনের অংশ হিসেবে জার্মানির সামরিক বাহিনী সেখানকার কুর্দি যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ সহযোগিতাও দিচ্ছে৷      

একই সময়ে ন্যাটো অঞ্চলের আকাশ সীমানায় নজরদারি বাড়ানোর জন্য তুরস্কের সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতা দিচ্ছে জার্মানির বিমান বাহিনী৷ অর্থাৎ একদিকে কুর্দি বিদ্রোহী অন্যদিকে তুরস্কের সামরিক বাহিনী দুই পক্ষকেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছিল দেশটির সরকার৷ কিন্তু কুর্দিদের দমনে তুরস্ক সিরিয়ায় সামরিক হামলা শুরু করায় কার পক্ষ নেবে জার্মানি সেটি এখন বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে৷  

বুধবার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনের অংশ হিসেবে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ক্রিস্টোফার বুর্গার বলেন, ‘‘উত্তরপূর্ব সিরিয়ায় সামরিক পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা তুরস্ক সরকারের প্রতি বারবার আহবান জানিয়ে আসছি৷ কেননা আমাদের ভয় হলো এমন হস্তক্ষেপ এই অঞ্চলের অস্থিরতাকে আরো বৃদ্ধি করবে৷'' শুধু তাই নয়, তুরস্কের কর্মকাণ্ড নতুন করে শরনার্থী সংকট তৈরি করতে পারে বলেও শংকা প্রকাশ করেছেন তিনি৷

অস্থিরতার শঙ্কা ঘরে-বাইরে

তুরস্কের এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অনেকগুলো বিপদ তৈরি করতে পারে বলেও সতর্ক করে আসছে বিভিন্ন পর্যবেক্ষক দল৷ একটি ভয় ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিদের নিয়ে৷ ঐ অঞ্চলে কুর্দিদের জেলখানায় বন্দী আছে প্রায় ১২ হাজার আইএস যোদ্ধা৷ ধারণা করা হয়, এর মধ্যে প্রায় ১০০ জনই পাড়ি জমিয়েছে জার্মানি থেকে৷ তুরস্কের হামলায় বন্দীর কোনোভাবে মুক্ত হলে আবারো সন্ত্রাসী জঙ্গিগোষ্ঠীটি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে৷

জার্মান সরকার চাপে পড়ছে দেশের অভ্যন্তরেও৷ প্রায় ২০ লাখ মানুষ আছেন দেশটিতে যারা হয় কুর্দি, নয়তো তুর্কি ঐতিহ্য বহন করছেন৷ গত মঙ্গলবার জার্মানিতে বসবাসরত কয়েকশো কুর্দি বার্লিনের রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন৷ এই সপ্তাহে আরো কয়েকটি সমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে৷

জার্মানিতে কুর্দিদের সবচেয়ে বড় সংগঠন কেজিডি এর ডেপুটি চেয়ারম্যান মেহমেত তানরিভার্দি মনে করেন, আঙ্কারা সিরিয়ার ঐ অঞ্চলে জাতিগত নিধনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মিশনে নেমেছে৷ সিরিয়ার আরব শরনার্থীদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে তুরস্ক জোরপূর্বক সেখানকার জনমিতি পরিবর্তন করতে চায় বলেও শংকা তাঁর৷

এমন পরিস্থিতিতে জার্মানির শুধু মুখের কথা বলা কোনো কাজে আসবে না বলে মনে করেন তানরিভার্দি৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘জার্মানিকে অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে৷ সরকার তার হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না৷ যেমনটি তারা এখন মনে করছে যে, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে চলা হত্যাকাণ্ডে তাদের করার কিছু নেই৷''

তিনি মনে করেন জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল চাইলে নানাভাবেই সিরিয়ার উপর চাপ প্রয়োগ করতে পারেন৷ তাঁর মতে, ম্যার্কেল যদি এর্দোয়ানকে শুধু এই হুমকি দেন যে, জার্মানি ন্যাটোতে তুরস্কের সদস্যপদ নিয়ে প্রশ্ন তুলবে তাহলেই দেশটির প্রেসিডেন্ট নতুন কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে দুইবার ভাববেন৷ সেই সাথে দেশটিতে সব ধরণের অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করে দেয়া, আঙ্কারার সঙ্গে শরনার্থী চুক্তি বাতিল করার পরামর্শও দেন তিনি৷ এমনকি প্রয়োজনে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের মতো পদক্ষেপও পারে তুরস্ককে সিরিয়া হামলা থেকে বিরত রাখতে৷

বেন নাইট /এফএস

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য