1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সুচির মুক্তি সমাসন্ন

১২ নভেম্বর ২০১০

মিয়ানমারের মানুষই শুধু নন, গোটা বিশ্বই এখন অপেক্ষা করছে মিয়ানমারের আপোষহীন নেত্রী কারারুদ্ধ অং সান সুচির মুক্তির বহু প্রতীক্ষিত সেই মাহেন্দ্রক্ষণটির জন্য৷

https://p.dw.com/p/Q6pH
মহান নেত্রীর মুক্তির জন্য গোটা বিশ্ব অপেক্ষা করছেছবি: AP

সেদেশের সামরিক কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, গৃহান্তরীণ এই নেত্রীর মুক্তি সমাসন্ন৷ যে কোনদিনই তিনি মুক্তি পেতে যাচ্ছেন৷

জানা গেছে, এখন বিষয়টি সময়ের ব্যাপার মাত্র৷ শুক্রবার সামরিক শক্তির নিয়ন্ত্রণে থাকা এ'দেশটির কর্তাব্যক্তিদের কেউ কেউ এমনটিই জানিয়েছেন৷ সুচির মুক্তি নিয়ে খানিক উত্তেজনা বাড়ায় ইয়াঙ্গনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাটি জোরদার করা হয়েছে৷ টহল পুলিশের গাড়ি ঘুরছে শহরে৷

নোবেল শান্তি জয়ী সুচির এই বন্দিদশা প্রায় দুই দশকের৷ এই দীর্ঘ সময়টি জুড়েই মিয়ানমারের আপোষহীন এ'নেত্রীকে বদ্ধ ঘরে বন্দিজীবন বরণ করতে হয়েছে৷ তারপরও সুচির জনপ্রিয়তা, ক্ষমতা বা সামর্থ্যের বিষয়টি নিয়ে সামরিক শক্তির ভীতি বা শঙ্কা কাটে নি৷ তবে মিয়ানমারের সামরিক শক্তি সম্ভবত এবারের নির্বাচনে তাদের এই পুকুর চুরি বা ভয়াবহ কারচুপির বিষয়টি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য সুচির মুক্তিকে সামনে আনতে চাইছে৷

Aung San Suu Kyi
মুক্তি পেলেও কতটা সক্রিয় থাকতে পারবেন কি?ছবি: AP

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি মুখপাত্র সুচির মুক্তির বিষয়টি যে নিশ্চিৎ এটি জানিয়ে বলেছেন, কর্তৃপক্ষ তাঁকে মুক্তি দিতে যাচ্ছে, এটি এখন নিশ্চিৎ৷ ৬৫ বছর বয়েসি আপোষহীন নেত্রী সুচির আইনজীবি বলেছেন, গত বছরের ১৪ মে তাঁর এই গৃহান্তরীণ দশার শুরু হয়েছিল, এর শেষ হওয়ার কথা এবছরের নভেম্বর মাসের পনেরো তারিখে৷ এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন সরকারি কর্মকর্তাও বলেছেন, সুচিকে পরিকল্পনানুযায়ীই মুক্তি দেয়া হবে৷

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের আগস্টে অং সান সুচির গৃহান্তরীণ দশার মেয়াদ আরো আঠারো মাস বাড়ানো হয়েছিল৷ মেয়াদ বাড়ানোর পেছনে ক্ষমতাসীন সামরিক শক্তির যুক্তিটি ছিলো- আজব ধরণের৷ সুচি গৃহবন্দি থাকার সময়ে যে লেকঘেরা বাড়িতে অন্তরীণ ছিলেন, সেখানে এক মার্কিনি নাকি সাঁতরে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিল৷

এদিকে মিয়ানমারের অসংখ্য সুচি সমর্থকরা অধির আগ্রহে তাঁর মুক্তির জন্য অপেক্ষা করছেন৷ তাঁরা জানেন না ঠিক কখন সুচি মুক্তি পাচ্ছেন৷ সুচির আইনজীবি নাইয়ান উইন বলেছেন, আইনানুযায়ী বন্দিদশার মেয়াদটি তারা আর বাড়াতে পারবে না৷ দেশের স্বার্থেই তাঁকে মুক্তি দেওয়া উচিৎ৷ সুচি সমর্থকদের একজন বলেছেন, মুক্তির পর তাঁদের নেত্রী এক সংবাদ সম্মেলন করবেন৷ সমর্থকটি বলেন, সুচি তাঁর ওপর চাপিয়ে দেওয়া কোন নিয়ম বা শর্তই মেনে নেবেন না৷

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বীর জেনারেল অং সানের সুযোগ্যা কন্যা এই আপোষহীন নেত্রী দুই দশক আগে নির্বাচনে বিপুল সমর্থন পেয়েছিলেন৷ নির্বাচনে তাঁর এই বিশাল জয়ের পরেও সামরিক শক্তি তাঁকে ক্ষমতা যেতে বা সরকার গঠন করতে দেয় নি৷ উল্টো এই দুই দশক ধরেই তিনি অন্তরীণই রয়েছেন৷

সুচির এই মুক্তি উপলক্ষে তাঁর সমর্থকরা নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন বলেই জানা গেছে৷ মুক্তির বিষয়টি স্মরণীয় করে রাখতে অনেকেই স্থানীয় হাসপাতালে রক্তদান করবেন৷ স্থানীয় এক ট্যাক্সি চালক আবেগমথিত কন্ঠে বলেছেন, আমি তাঁর জন্য প্রার্থনা করছি৷ তিনি আমাদের জন্য সারাজীবনই কষ্ট করেছেন৷ অনেক কষ্ট৷

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে সুচি যখন একবার মুক্তি পেয়েছিলেন সেসময় তিনি যেখানেই গিয়েছেন উপচে পড়া ভীড় আর জনতার ঢল প্রবাহিত হয়েছে তাঁর চলার পথটিতে৷ তাঁর সেই জনপ্রিয়তা আজো কমেনি বই বেড়েই চলেছে৷

প্রতিবেদন: হুমায়ূন রেজা
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক