1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সূর্যকণার ওজন

৭ জানুয়ারি ২০২০

নিউট্রিনোর ভর আছে৷ কিন্তু সেই ভর বা ওজন মাপার পদ্ধতি এখনো নিশ্চিত করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা৷ জার্মানিতে একদল বিজ্ঞানী সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/3VlqT
Deutschland Sonnenaufgang und Hochnebel BdT
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Eifert

ফিউশনের মাধ্যমে সূর্যে হাইড্রোজেন হিলিয়ামে পরিণত হয়৷ সম্ভবত নিউট্রিনো মহাবিশ্বের সবচাইতে বিস্ময়কর কণা৷ প্রতি সেকেন্ডে কোটি কোটি এই কণা পৃথিবীতে আঘাত করে একে আলোকিত করে৷ অনেকটা সময় ধরে বিজ্ঞানীরা ভাবতেন এর ভর নেই৷

আজ আমরা জানি নিউট্রিনোর ভর আছে৷ বিষয়টি ভালো বোঝেন পদার্থবিজ্ঞানী ম্যাগনাস শ্ল্যোসার৷ তাঁর মতে, ধারণার চেয়েও ক্ষুদ্র এই কণা৷  তিনি বলেন, ‘‘নিউট্রিনোর ভরের সীমার অর্ধেক বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ আগে যেটা ধারণা করা হতো দুই ইলেকট্রন ভোল্ট, এখন আমরা জানি তা এক ইলেকট্রন ভোল্টের চেয়েও কম৷ এর ধারণা করা কতটা কঠিন দেখুন, দশমিকের পরে একটি শূন্যের সাথে আরো ৩৬টি শূন্য বসিয়ে তারপর এক বসালে যত কিলোগ্রাম হয় ততটা৷ খুবই কম ওজন৷''

পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে একশ' জনেরও বেশি বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞের একটি দলের অংশ হলেন ম্যাগনাস৷ ক্যাটরিন নামের একটি পরিমাপক দিয়ে পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে জটিল ধাঁধাগুলো মেলাচ্ছেন এরা৷

২০০১ সালে বাভেরিয়ার ডেগেনডর্ফে এই বিশেষ প্রতিষ্ঠানটির জন্ম৷

পরিমাপকটি এত বড় যে মোটরওয়ে দিয়ে একে আনা যাচ্ছিল না৷ তাই দানয়ুব নদী ধরে ইউরোপের প্রায় ৯০০০ কিলোমিটার ঘুরে রাইন পর্যন্ত এসে পৌঁছায়৷ ২০০ টন ওজনের বস্তুটি শেষ কয়েক কিলোমিটার সরু পথ দিয়ে পৌঁছেছে কার্লরুহে রিসার্চ সেন্টার৷ স্কেলটি এখানেই তৈরি করা হয়েছে৷  ছোট নিউট্রিনোর জন্য বড় আয়োজন৷

ড. ম্যাগনাসের ভাষায়, ‘‘যেমন ধরুন, মহাবিশ্বের প্রতি ঘনসেন্টিমিটারে এখনো বিগব্যাংয়ের কারণে তৈরি হওয়া ৩০০ নিউট্রিনো আছে৷ তারওপর সূর্য, সুপারনোভা থেকে প্রচুর পরিমাণে নিউট্রিনো পৃথিবীর মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে৷ কিন্তু এরা একে অপরের সঙ্গে এত দুর্বলভাবে প্রতিক্রিয়া করে যে, কোটি কোটি নিউট্রন থাকার পরও আমরা কিছুই টের পাই না৷'' 

নিউট্রিনো ওজন করা অনেক জটিল৷ কৌশল করে করতে হয় এটা৷ স্কেলগুলো ৭০ মিটার লম্বা৷ একপাশে ট্রিটিয়াম ঢোকানো হয়৷ ট্রিটিয়াম হলো হাইড্রোজেনের বিকিরিত সংস্করণ৷ যখন এর ক্ষয় হয়, তখন একটি ইলেকট্রন ও একটি ইলেকট্রন নিউট্রিনো তৈরি হয়৷ 

একসঙ্গে এরা সবসময় সমান শক্তি ধারণ করে- আর এখানেই লুকিয়ে আছে, নিউট্রিনোর ভর মাপার কৌশল৷ যেহেতু বিজ্ঞানীরা নিউট্রিনোর ভর মাপতে না পারলেও ই্লেকট্রনের শক্তির পরিমাণ মাপার উপায় জানেন৷ 

স্পেকট্রোমিটারটিতে ভালোভাবে চার্জিত গুটিকয়েক ইলেকট্রন পথ তৈরি করতে পারে৷ বিজ্ঞানীরা ইলেকট্রনের শক্তির পরিমাপ করেন৷ সেই ফল থেকে একটি নিউট্রিনো কতটা শক্তি ও ভর ধারণ করে তা নির্ধারণ করা যায়৷ এই পরিমাপ অনেক সংবেদনশীল এবং তাই এর পরিমাপন পদ্ধতিও এতটা সংবেদনশীল৷

ম্যাগনাস বলেন, ‘‘যদি ভর তৈরি হয় এবং আমরা সংবেদনশীলতার মাত্রায় পৌঁছাতে পারি, তাহলে এক পর্যায়ে এসে ভর পরিমাপ করতে পারি৷ এই মুহূর্তে এই হলো আমাদের সংবেদনশীলতার মাত্রা এবং এখন এর ভর হতে পারে ০ থেকে অনির্দিষ্ট পর্যন্ত৷ এখনো আমরা সুনির্দিষ্ট ভর পরিমাপ করতে পারিনি৷ তবে ঠিক পথেই আছি৷''

বিজ্ঞানীরা ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ নিয়ে কাজ করবেন৷ এক হাজারটি পরিমাপ দিনে গেলে শেষ হবে এটি৷ 

আগামী কয়েকটি বছর খুব উত্তেজনায় কাটবে এদের৷ কারণ, নিউট্রিনো স্কেল বেশ ভালোই কাজ করছে৷ এই গবেষণার ফল পদার্থবিদ্যাকেই হয়তো বদলে দেবে৷ 

ইয়ুলিয়া নেস্টলেন/জেডএ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য