1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্মার্টফোন কি সত্যি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়?

২৭ মে ২০১৯

স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট ছাড়া আধুনিক জীবনযাত্রা অনেকের কাছে অকল্পনীয়৷ তবে রাতে ঘুমানোর আগে ডিসপ্লের নীলাভ ছটা মানুষের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে৷ বিজ্ঞানীরা দুই যমজ বোনের উপর পরীক্ষা চালিয়ে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছেন৷

https://p.dw.com/p/3J9aB
Frau benutzt Smartphone im Bett
ছবি: picture-alliance/PhotoAlto/F. Cirou

রিকে ও কাটি ফান ডেয়ার ভেয়ার্ট হুবহু যমজ দুই বোন৷ স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটের উজ্জ্বল ডিসপ্লে কীভাবে আমাদের ঘুমে ব্যাঘাত আনে, এই দুই যমজ বোনের সাহায্যে তা জানার চেষ্টা চলছে৷ ঘুমানোর আগে কাটি বই পড়ে৷ রিকে ট্যাবলেট ব্যবহার করে পড়ে৷

পরীক্ষার সময় দুই যমজ বোন ফিটনেস ট্র্যাকার ব্যবহার করে৷ তারা ঘুমাচ্ছে কিনা, ট্র্যাকার তার উপর নজর রাখে৷ সেই তথ্য স্মার্টফোনে চলে যায় এবং একটি অ্যাপের মধ্যে জমা হয়৷ প্রতি রাতে কাটি ঘুমানোর আগে নিয়ম করে বই পড়ে৷ আর রিকে ট্যাবলেটের পর্দার দিকে তাকিয়ে কিছু না কিছু পড়ে৷ ডিসপ্লের উজ্জ্বলতা সর্বোচ্চ মাত্রায় রাখা হয়েছে৷ ফলে মুখের উপর আলো পড়ছে৷ যমজ বোনের তুলনায় তার ঘুমে কি ব্যাঘাত ঘটবে?

পরের দিন সকালে কাটি-র দিকে নজর দেওয়া যাক৷ অ্যাপের তথ্য অনুযায়ী রাত ১১টা ৪৮ মিনিটে সে ঘুমিয়ে পড়েছে৷ ঘুমের মোট সময় ৬ ঘণ্টা ৭ মিনিট৷ অন্যদিকে রিকে তার বোনের তুলনায় ৪ মিনিট দেরিতে ঘুমাতে গেছে৷ তার মোট ঘুমের সময় বোনের তুলনায় ১০ মিনিট কম৷

 ঘুম বিশেষজ্ঞ হলগার হাইন ডিসপ্লের  আলোর পরিণাম সম্পর্কে সচেতন৷ তিনি বলেন, ‘‘এই সংক্ষিপ্ত তরঙ্গের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৪৭০ থেকে ৪৮০ ন্যানোমিটারের মতো৷ চোখের ফটো রিসেপ্টরে তা ধরা পড়ে, যার ফলে মেলাটোনিন হরমোন সৃষ্টির প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে৷ তাছাড়া শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মতো প্রক্রিয়াও বদলে যায়৷ ফলে এই আলো ঘুম ও জেগে থাকার ছন্দে বিঘ্ন ঘটায়, ঘুমিয়ে পড়তে বেশি সময় লাগে, ঘুমের সময়ও কমে যায়৷''

রিকে-র শরীরের নিজস্ব ঘড়ি কি বদলে গেছে? বাস্তবে সারাদিন দুই বোনের জীবনের ছন্দ একই রকম৷ খামারে খোলা আকাশের নীচে তারা সারাদিন যথেষ্ট পরিশ্রম করে৷ ফলে সন্ধ্যা নাগাদ তারা সাধার স্মার্টফোন বা স্মার্টওয়াচের মতো ‘স্মার্ট’ নদীর বাঁধ সাধারণত বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়ে৷ এক সপ্তাহ পর রিকে-র ঘুমের ব্যাঘাতের প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠলো৷ যমজ বোন কাটি-র তুলনায় প্রতি রাতে সে ১৫ থেকে ২০ মিনিট কম ঘুমিয়েছে৷

একাগ্রতা সংক্রান্ত এক পরীক্ষায় ঘুমের ঘাটতি টের পাওয়া যায়৷ আধ ঘণ্টা ধরে একটি বিন্দু একটি জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলে যায়৷ অনিয়মিতভাবে সেটি একটি করে অংশ টপকে যায়৷ ক্লান্ত মানুষের পক্ষে সেই বিচ্যুতি শনাক্ত করা কঠিন কাজ৷ পরীক্ষার ফল কী বলছে? হলগার হাইন বলেন, ‘‘সামান্য পার্থক্য চোখে পড়ছে৷ ফারাক খুব বড় নয়৷ তবে অবশ্যই একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ সন্ধ্যায় বেশিক্ষণ নীল আলোর দিকে তাকালে পরের দিন একাগ্রতার ক্ষমতা কিছুটা কমে যায়৷ প্রতি রাতে এমনটা করলে সেই ফারাক সম্ভবত আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে৷''

এর মধ্যে অনেক স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের ডিসপ্লে বা পর্দা এমনভাবে স্থির করা যায়, যাতে নীল রঙের বদলে লালের আভা দেখা যায়৷ সেইসঙ্গে ডিসপ্লের ঔজ্জ্বল্যযতটা সম্ভব কম রাখা উচিত৷ অথবা স্মার্টফোন সরিয়ে রেখে বই হাতে নিলে আরও ভালো হয়৷

মাটিয়াস ব্রেমার/এসবি