1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্মৃতিবিভ্রম কাটিয়ে তোলা যায়?

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ছোটবেলার স্মৃতি আজও আমাদের নাড়া দেয়, অতীতের সঙ্গে বর্তমানের যোগসূত্র গড়ে তোলে৷ কিন্তু সেই স্মৃতি আচমকা হারিয়ে গেলে পায়ের তলা থেকে যেন মাটি সরে যায়৷ বিজ্ঞানীরা সেই বন্ধ দরজার চাবি খোঁজার চেষ্টা করছেন৷

https://p.dw.com/p/1Hzok
Großbritannien Ausstellung The mind as matter in London
ছবি: Courtesy of The Gordon Museum, Kings College London

আমাদের স্মৃতিশক্তি না থাকলে কেমন হতো? আত্মজীবনিমূলক স্মৃতিকেই আমরা ‘মনে করা' বলি৷ সেখানে ঘটনাগুলি শুধু চিন্তা হিসেবে জমা থাকে না, তার সঙ্গে জড়িত আবেগও জুড়ে থাকে৷ এই প্রক্রিয়া সাধারণত ৩ বছর বয়স থেকে শুরু হয়৷ এবং সেটা সবসময় অন্যের সঙ্গে ভাবের আদান-প্রদানের সময় ঘটে৷ তখন নিজস্ব এক সত্তার সৃষ্টি হয়৷ আমরা তখন বুঝতে পারি, কোথা থেকে এসেছি, আমরা কে, অন্যদের থেকে আমরা কীভাবে বাকিদের থেকে আলাদা৷

জীবনের ইতিহাস হারিয়ে ফেললে সেই সত্তা সৃষ্টির পেছনের মুহূর্তগুলিও উধাও হয়ে যায়৷ এমনটা ঘটলে সবকিছু গোলমাল হয়ে যায়৷

সাবিনের বয়স তখন বিশের গোড়ায়৷ একদিন সকালে উঠে তিনি আর কিছুই মনে করতে পারলেন না৷ নিজের অতীতের ছবির দিকে তাকালেই আশা জাগে, হয়ত কিছু মনে পড়ে যাবে৷ তিনি বলেন, ‘‘শৈশব পুরোটা হারিয়ে ফেলেছি৷ এখন এ সব ছবি দেখলে কল্পনাশক্তি কাজে লাগিয়ে তার কিছু অর্থ বার করতে পারি, কিন্তু সক্রিয়ভাবে কিছুই মনে করতে পারি না৷''

সাবিনে কিন্তু অন্য অনেক কাজ করতে পারেন৷ সাইকেল চালানো, মনে মনে অঙ্ক কষা ইত্যাদি৷ জন্ম তারিখও মনে আছে৷ শুধু আত্মজীবনিমূলক স্মৃতি পুরোপুরি মুছে গেছে৷ সাবিনে বলেন, ‘‘একেবারে ফাঁকা৷ অনুভূতিও শূন্যতায় ভরা৷ অতএব কোনো আবেগই আসে না৷''

কী ঘটেছিল সাবিনের সঙ্গে? সত্যি কি তাঁর ছোটবেলার স্মৃতি মুছে দেওয়া হয়েছে? গোটা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা অ্যামনেসিয়া বা স্মৃতিবিলোপের রহস্য ভেদ করে মানুষের স্মৃতির বিষয়টি ভালো করে বুঝতে চান৷

স্মিডার ক্লিনিকস এক আন্তর্জাতিক স্নায়ুবিজ্ঞান কেন্দ্র৷ এখানে অ্যামেনেসিয়ার স্নায়ুগত ও মানসিক প্রভাবের চিকিৎসা হয়৷ নিউরোলজিস্টরা অ্যামনেসিয়ার নিউরো-বায়োলজিকাল প্রক্রিয়ার দুর্বল অংশ খুঁজছেন৷ এমআরআই স্ক্যানারের মধ্যে সাবিনে-কে কিছু আবেগ-জাগানো ছবি দেখানো হচ্ছে৷ স্বাভাবিক মানুষ এমন ছবি দেখলে স্বাভাবিক আচরণ করে৷ কিন্তু সাবিনে-এর ক্ষেত্রে ভিন্ন ফলাফল দেখা গেল৷ মস্তিষ্কের যে অংশ আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে, সেটি অতি সক্রিয় হয়ে উঠেছে৷ প্রত্যেকটি ছবি চরম ভীতি জাগিয়ে তুলছে৷ অর্থাৎ তথ্য ঠিকমত প্রক্রিয়াকরণ করা হচ্ছে না৷ এর একটা কারণ শৈশবের কোনো ‘ট্রমা' বা চরম দুঃখজনক ঘটনা হতে পারে৷ নিউরোলজিস্ট প্রো. রজার স্মিট বলেন, ‘‘এমন অবরুদ্ধ স্মৃতি চিকিৎসার মাধ্যমে কীভাবে উদ্ধার করা যেতে পারে, সেটা গবেষণার বিষয়৷ একটি প্রক্রিয়ায় চরম দুঃখজনক ঘটনার স্মৃতি আবার জাগিয়ে তুলে বন্ধ দরজা খোলার চেষ্টা করা হয়৷ অন্য প্রক্রিয়ায় স্মৃতিভ্রষ্ট মানুষকে নতুন করে তার জীবনের কাহিনি শেখানোর চেষ্টা হয়৷''

সাবিনে কয়েক বছর ধরে স্মৃতিভাণ্ডার ফিরে পাবার চেষ্টা করছেন৷ বার বার তিনি শৈশবের স্মৃতি হাতড়াচ্ছেন৷ অভিজ্ঞতাগুলি চিরকালের জন্য হারিয়ে যায় নি বলে তাঁর আশা৷ কোথাও যেন তালাবন্ধ রয়েছে৷ মস্তিষ্ক যেন তার উপর লিখে রেখেছে, ‘সাবধান! খুললেই বিপদ'৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান