1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হজ নিয়ে সৌদি আরব এখনো কিছু জানায়নি

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৭ মে ২০২১

সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবার হজের প্রটোকল ঘোষণা করলেও বাংলাদেশ থেকে হজ করতে যাওয়া যাবে কী না, গেলে কতজন তা এখনো জানা যায়নি৷ তবে বাংলাদেশের প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়৷

https://p.dw.com/p/3u3pL
Saudi-Arabien Mekka | Erste Pilger nach Coronasperrung
ফাইল ফটোছবি: Saudi Ministry of Hajj and Umra/AFP/Getty Images

মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব(হজ)  এম হামিদ জমাদ্দার জানান," সৌদি আববের  পক্ষ থেকে হজের ব্যাপারে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি৷ আমরা যোগাযোগ রাখছি৷ আর এব্যাপারে  আমাদের দিক থেকে আমরা প্রস্তুত আছি৷”

সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবার এই করোনার মধ্যে ৬০ হাজার মুসলিমের হজের সুপারিশ করেছে৷ তারমধ্যে ৪৫ হাজার হাজি সৌদি আরবের বাইরের দেশ থেকে আসতে পারবেন৷ গত বছর করোনার শুরুতে তারা সৌদি আরবের বাইরের কোনো দেশ থেকে কোনো মুসলামানকে হজ করতে সৌদি আরব যেতে দেয়নি৷ তবে এবার সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শর্ত সাপেক্ষে সুপারিশ করলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়৷

শর্তের মধ্যে রয়েছে হজে যাওয়ার এক সপ্তাহ আগে করোনার টিকার দুই ডোজ পূর্ণ হতে হবে৷ যাওয়ার ৭২ ঘন্টা আগে পিসিআর টেস্টে নেগেটিভ হতে হবে৷  সৌদি আরব গিয়ে ৭২ ঘন্টা কোয়ারন্টিনে থাকতে হবে৷ সেখানেও টেস্টে নেগেটিভ হতে হবে৷ বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে৷

তবে মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ওইসব দেশে করোনার অবস্থা, সংক্রমণ ও মুত্যুর হার বিবেচনা করছে তারা৷ ভারতে করোনা পরিস্থিতি ও ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বাংলাদেশের জন্য হজের অনুমতিতে আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়৷

শাহাদাত হেসেন তসলিম

হজে যেতে হলে টিকা লাগবে এটা আগেই জানানো হয় বলে জানান হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের(হাব) প্রেসিডেন্ট শাহাদাত হেসেন তসলিম৷ তিনি বলেন," তখন বলা হয়েছিলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত টিকা নিতে হবে৷ আর চীন ও রাশিয়ার টিকায় হবে না বলে উল্লেখ ছিলো৷ তবে যারা যেতে ইচ্ছুক তাদের আগেই অক্সফোর্ডের টিকা দেয়া হয়েছে৷ আর এবার নতুন কোনো তালিকা হয়নি৷ ২০২০ সালে যারা তালিকাভূক্ত হয়েছেন তারাই অনুমতি পেলে হজে যেতে পারবেন৷”

স্বাভাবিক অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারেন৷ এর মধ্যে ৯৭ ভাগই যান বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়৷ বাকিরা সরকারি ব্যবস্থাপনায়৷ কিন্তু গত বছর করোনার মধ্যে ৬৫ হাজার হজে যাওয়ার জন্য টাকা জমা দিয়েছিলেন৷ তাদের মধ্যে চার হাজার তাদের টাকা তুলে নিয়েছেন৷ বাকি ৬১ হাজার এখনো তালিকাভূক্ত আছেন৷ এখন সৌদ আরব কতজনকে অনুমোদন দেয় তার ওপর নির্ভর করছে কত জন যেতে পারবেন৷ তবে এই সংখ্যা এক হাজারের বেশি হবে বলে মনে করেন না হাব প্রেসিডেন্ট৷

বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে মোট খরচ হয়  তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা৷ যারা এই টাকা আগেই জমা দিয়ে রেখেছেন তাদের আরো টাকা দিতে হতে পাারে৷ হাব  প্রেসিডেন্ট বলেন, এবার কোয়ারান্টিন, বিমান ভাড়া ও হোটেল খরচ অনেক বেড়ে যাবে করোনার কারণে৷  ফলে খরচ দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি৷

মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন," আমরা এখনো সৌদি আরব থেকে হজের ব্যাপারে কোনো অফিসিয়াল চিঠি বা তথ্য পাইনি৷ পাওয়ার পর আমরা বলতে পারব খরচ বাড়বে কী না৷ কিন্তু আমাদের প্রস্তুতি আছে আমরা শর্ট নোটিশেই পাঠাতে পারব৷ কারণ এবছর তো আমরা নতুন করে কাউকে  তালিকাভূক্ত করিনি৷ ২০১৯ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশ থেকে হজে গিয়েছে৷ ২০২০ সালে করোনার মধ্যে যারা হজের টাকা জমা দিয়েছেন তাদের মধ্য থেকেই এবার হলে সুযোগ পাবেন৷ তাদের সব কিছু অটোমেশন করা আছে৷ অনেকের টিকাও দেয়া আছে৷ এবার নতুন করে কারুর হজ নিবন্ধন করা হয়নি৷”

সৌদি আরবে বাংলাদেশের হজ কাউন্সিলর আছেন৷ তার সাথে বৃহস্পতিবারও যোগাযোগ করে কোনো তথ্য পায়নি ধর্ম মন্ত্রণালয়৷

এদিকে বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ এখনো শেষ হয়নি৷ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসেও আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে৷ আবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হজ যাত্রীরা সৌদি আরবে যাবেন৷  এই পরিস্থিতি বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়ার কোনো ঝুঁকি বা মৃত্যু ঝুঁকি আছে কী না জানতে চাইলে বিএসএমইউর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম বলেন," সৌদি আরব তো প্রটোকল ঘোষণা করেছে৷ সেটা মেনে হজ হলে আশঙ্কা অনেক কম৷ কিন্তু মাহামারিতে তো ঝুঁকি কিছুটা থাকেই৷

স্বাভাবিক সময় সৌদি আরবে প্রতিবছর ১৮ লাখ মুসলমান হজ করেন৷ হজে যাওয়ার সংখ্যার দিক থেকে বাংলদেশের অবস্থান চতুর্থ৷ প্রথম ইন্দোনেশিয়া, দ্বিতীয় পাকিস্তান এবং তৃতীয় ভারত৷

এবার যদি শেষ পর্যন্ত অনুমতি পাওয়া যায় তাহলে যারা হজের টাকা জমা দিয়েছেন তাদের অনেকেই বয়সসহ নানা নিয়ম নীতির কারণে যেতে পারবেন না৷ স্বাভাবিক সময় প্রস্তুতির জন্য পাঁচ মাস সময় লাগলেও এবার ১৫ দিন আগেও অনুমতি পেলে বাংলাদেশ থেকে হজে পাঠানো যাবে বলে মন্ত্রণালয় জানায়৷ জুলাই মাসে হজ অনুষ্ঠিত হবে৷

হাব সভাপতি জানান, করোনা শুরুর পর থেকে ওমরাহও বন্ধ আছে৷ স্বাভাবিক অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর দুই লাখ ৫০ হাজার মুসলিম ওমরাহ করতে সৌদি আরব যান৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য