1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হাইতি’র মহামারিতে মৃতের সংখ্যা ২৫০ ছাড়িয়েছে

Debarati Guha২৫ অক্টোবর ২০১০

মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া কলেরার কারণে হাইতিতে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫০ জনেরও বেশি৷ স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান থিমোঠে জানান এ পর্যন্ত কলেরা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিন হাজার একশো পনেরো জন৷

https://p.dw.com/p/PnNV
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কলেরা আক্রান্তরাছবি: AP

এবছরের ১২ জানুয়ারির সেই ভূমিকম্পের কারণে বিধ্বস্ত হাইতিতে এখন কলেরা মহামারি সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গত এক শতকের মধ্যে হাইতিতে এবারই প্রথম কলেরা মহামারি আকারে দেখা দিল৷ উল্লেখ্য, ভূমিকম্পের পর প্রায় ১৩ লাখ গৃহহীন মানুষ রাজধানীতে তাঁবু খাটিয়ে বসবাস করছে৷

এদিকে জানা গেছে, এই সোমবার রাজধানী পোর্ট-অব-প্রিন্সে পাঁচ জন কলেরা রোগী শনাক্ত করার পর রাজধানীতে কলেরা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়লেও সুইজারল্যান্ড সফররত হাইতির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কলেরার এই মহামারি হাইতির উত্তরাংশের আর্টিবোনি এবং মধ্য মালভূমির মধ্যেই সীমিত রয়েছে৷

হাইতিতে কর্মরত জাতিসংঘ দপ্তরও জানিয়েছে, রাজধানীর এই পাঁচজনের কলেরায় আক্রান্তের ঘটনাটা আবারো নতুন করে মহামারি ছড়ানো নয়৷ ইতোমধ্যেই তাঁরা আর্টিবোনি নদীসংলগ্ন এলাকাও সফর করেছেন, এটিও আসলে কলেরা সংক্রামিত নতুন কোনো বসতি নয়৷ অবশ্য হাইতির এই নদীটির জল-দূষণই মহামারি ছড়ানোর মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে৷

এ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং প্রতিষ্ঠান হাইতির এই ভয়াবহ দুর্যোগে এগিয়ে এসেছে৷ অক্সফাম ইতোমধ্যেই তাঁদের পাঁচজন বিশেষজ্ঞকে আর্টিবোনি সংলগ্ন এলাকার প্রায় এক লক্ষ মানুষের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং পরিচ্ছন্নতার জন্য সেখানে পাঠিয়ে দিয়েছে৷ তাঁরা সেখানে কাজও শুরু করেছেন৷ এছাড়া সাবান, পানি বিশুদ্ধ করার বড়ি সহ খাবার স্যালাইন দেওয়ার কথাও জানিয়েছে অক্সফাম৷

ডক্টরস উইদাউট বর্ডার সংগঠন রোগীদের শুশ্রূষার লক্ষ্যে হাইতির সেইন্ট মার্কে ইতোমধ্যেই একটি অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করেছে৷ এদিকে ক্যানাডা সরকার তাঁদের এক মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি একটি সামরিক হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হাইতির কলেরা রোগীদের চিকিৎসা সেবার সহায়তা দেবে বলেই জানিয়েছে৷

জানা গেছে, মহামারি আক্রান্ত হাইতি অসহায় মানুষজনের জন্য মার্কিন রেডক্রসের সাহায্য সামগ্রীর তিনটি বড় চালানও ইতোমধ্যেই হাইতি পৌঁছেছে৷

মহামারি ঠেকাতে, রোগীদের শুশ্রূষায় অপরাপর দেশি, বিদেশি সংস্থার কর্মীদের পাশাপাশি হাইতির স্বাস্থ্য কর্মীরাও নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছেন৷ হাইতিতে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়ক নাইজেল ফিসার বলেছেন, ‘মহামারি ভয়াবহ দিকে মোড় নেওয়ার আগে তা অবশ্যই ঠেকাতে হবে৷ আশা করছি, এটি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছাবে না৷

কিন্তু শংকার বিষয় হচ্ছে, ভূমিকম্প বিধ্বস্ত হাইতিতে গৃহহীন হাজারো মানুষ অপরিচ্ছন্ন এবং অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় তাবু টানিয়ে এর রাজধানী শহর এবং আশেপাশে আশ্রয় নিয়েছেন৷ তাঁদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি একেবারেই অপ্রতুল, প্রায় নেই বললেই চলে৷ কলেরা দূষিত পানি এবং খাবারের মাধ্যমে মানবেতর জীবনযাপনকারী এই জনবসতিগুলোতে দাবানলের মতোই ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ হাইতির বর্তমান বাস্তবতায় সেটির আশংকা একেবারে অমূলক নয়৷

প্রতিবেদন: হুমায়ূন রেজা

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক