1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হিয়ারিং এইড কি শুধু বয়স্কদের জন্য?

১২ জুন ২০১৮

বয়স হলে অনেকের দৃষ্টিশক্তির সঙ্গে শ্রবণশক্তিও দুর্বল হয়ে পড়ে৷ কম বয়সেও এমনটা ঘটতে পারে৷ আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে হিয়ারিং এইড আরও ক্ষুদ্র ও শক্তিশালী হয়ে পড়ায় সেটি সহজে চোখে পড়ে না৷ ফলে বিনা সংকোচে তা ব্যবহার করা যায়৷

https://p.dw.com/p/2zHC4
Hörgerät
ছবি: Colourbox

বেশিরভাগ মানুষের কানে স্বাভাবিক মাত্রায় শব্দ পৌঁছয়৷ কিছু মানুষের কানে সেই শব্দ খুবই নিস্তেজ ও প্রায় নীরব হয়ে ধরা পড়ে৷ পথেঘাটে এমন অবস্থায় প্রাণ বিপন্ন হতে পারে৷ ইভেট ইয়েন্ডরেইসিক পেশায় নার্স৷ তিনি বলেন, ‘‘হিয়ারিং এইড থাকায় এখন আমি সহজেই পেছন থেকে আসা গাড়ির শব্দ শুনতে পারি এবং পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারি৷''

হিয়ারিং এইড মানুষকে বয়স্ক করে তোলে – এমন ধারণার কথা তিনি প্রায়ই শুনেছেন৷ তাঁর মতে, ‘‘এই ধারণা সেকেলে হয়ে পড়েছে৷ আগে হিয়ারিং এইড দেখতে বড় ছিল৷ আজ সেগুলি অনেক ছোট মাপের, প্রায় চোখেই পড়ে না৷ বেশিরভাগ মানুষ জানেনই না যে আমি হিয়ারিং এইড ব্যবহার করি৷''

দুই শিল্পপতি বিভিন্ন কোম্পানির হিয়ারিং এইড বিক্রি করেন৷ তার মধ্যে অনেকগুলির মাপ মুক্তার মতো, দাম ২,৮০০ ইউরো পর্যন্ত৷ মানুষের আয়ু বাড়ছে, সেইসঙ্গে সমাজে বয়স্ক মানুষের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে৷ ফলে দুই শিল্পপতির জন্য বিশাল বাজার অপেক্ষা করে রয়েছে৷ আউডিবেনে কোম্পানির প্রধান পাউল ক্রুসিউস বলেন, ‘‘৫০ বছরের বেশি মানুষের এক তৃতীয়াংশের শ্রবণশক্তির সমস্যা রয়েছে৷ তাঁদের মধ্যে ২০ শতাংশ হিয়ারিং এইড ব্যবহার করেন৷ অর্থাৎ আগামী কয়েক দশকে আমাদের সামনে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে৷'' 

‘হিয়ারিং এইড’ সবার জন্য

২০১২ সালে কোম্পানি প্রতিষ্ঠা হয়৷ আজ বার্লিনে কর্মীসংখ্যা প্রায় ৩৫০৷ যে সব গ্রাহক হিয়ারিং এইড পেতে চান, কোম্পানি তাঁদের মডেল, মাপ ইত্যাদি বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে৷ স্বাস্থ্য বিমা কোম্পানি কোন শর্তে হিয়ারিং এইড-এর ব্যয় বহন করে, গ্রাহকরা সে পরামর্শও পান৷

এমন আলোচনা মোটেই সহজ নয়৷ অনেক গ্রাহকের কাছে সিদ্ধান্ত মোটেই সহজ নয়৷ বেশিরভাগ মানুষই তাঁদের শ্রবণশক্তির দুর্বলতার কথা সহজে স্বীকার করতে চান না৷

বেশি হিয়ারিং এইড বিক্রি করতে পারলে কমিশন পাওয়া যায়৷ সবচেয়ে বেশি বিক্রি করলে পুরস্কারও মেলে৷ গোটা বিশ্বে ৯টি দেশে কোম্পানির প্রায় ৮০০ কর্মী রয়েছে৷ মুনাফার অর্থ আরও বৃদ্ধির কাজে লাগানো হয়৷

কোম্পানির ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপনে অপেক্ষাকৃত কমবয়সিদের তুলে ধরা হয়৷ তাঁরা নিজেদের তিরিশের মাঝামাঝি বয়সিদের মতো মনে করেন৷ তাঁরা মান্ধাতার আমলের হিয়ারিং এইড চান না৷ নিজেদের জীবনযাত্রার সঙ্গে মানানসই প্রায় অদৃশ্য যন্ত্র চান তাঁরা৷ এমন যন্ত্র পুরোপুরি কানের আড়ালে থাকতে হবে৷ পাউল ক্রুসিউস বলেন, ‘‘আসলে এর পেছনে চিরতারুণ্য ধরে রাখার বিষয়টি কাজ করছে৷ বর্তমানে যে প্রজন্ম নিয়ে আমরা কাজ করছি, তাঁরা অনেক সন্তান ধারণ করেছেন৷ নিজেরা খুবই সক্রিয় জীবনযাপন করছেন৷ অনেকেই পেশা নিয়ে ব্যস্ত৷ একটু কোলাহলময় পরিবেশে তাঁরা আর ভালো করে কিছু শুনতে পারছেন না৷''

একজন গ্রাহক অনলাইনে হিয়ারিং এইড কিনেছেন৷ তবে অ্যাকুস্টিশিয়ানের কাছে গিয়ে যন্ত্রটিকে নিজের শ্রবণশক্তি অনুযায়ী সাজিয়ে নিতে হয়৷ ২৮ বছর বয়সি টরস্টেন মারকার্ড সারাক্ষণ হিয়ারিং এইড কানে লাগিয়ে রাখেন, যা সহজে কারো চোখেই পড়ে না৷ এই যন্ত্রের বৈশিষ্ট্য হলো, সেটিকে অত্যন্ত দামী ইয়ারফোন হিসেবেও ব্যবহার করা যায়৷ স্মার্টফোনের অ্যাপের মাধ্যমে সংগীত শোনা যায়৷

তাঁর কাছে এই হিয়ারিং এইড মোটেই বয়স্কদের প্রয়োজনীয় যন্ত্র নয়৷ টরস্টেন বলেন, ‘‘আমার কখনো মনে হয় নি, হিয়ারিং এইড শুধু বয়স্কদের জন্য৷ আমার আশেপাশের মানুষ সেটি চিনতেও পারে নি৷ মোবাইল ফোন বার করে দেখিয়েছি, সেটি দিয়ে কেমন গান শোনা যায়৷ সবাই তখন এমন ডিভাইস দেখে মুগ্ধ হয়েছে৷''

গান শোনার পর আশেপাশের পরিবেশের শব্দ শুনতেআবার হিয়ারিং এইড মোড চালু করতে হয়৷ ২৯ বছর বয়সেই শ্রবণশক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে? নতুন প্রযুক্তির কল্যাণে টরস্টেন-এর কাছে এটা কোনো সমস্যাই নয়৷

ক্রিস্টিয়ান প্রিসেলিউস/এসবি