1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হুমায়ুন আজাদ(১৯৪৭-২০০৪):সব মৃত্যু থেমে থাকা নয়

১৯ আগস্ট ২০০৪

১২ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখক হুমায়ুন আজাদকে মিউনিখের একটি এপার্টমেন্টে পাওয়া গেল মৃত অবস্হায়৷

https://p.dw.com/p/DQ0z


ইন্টারন্যাশনাল পেন ক্লাবের বৃত্তি নিয়ে প্রথা বিরোধী লেখক আজাদ জার্মান প্রতিবাদী কবি হাইনরিশ হাইনের ওপর গবেষণা করতে মিউনিখে আসেন ৮আগস্ট রবিবার সন্ধ্যায়৷

১২আগস্ট সকালে জার্মান পেন ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ইয়োহানেস স্ট্রাসার ছেলে কতগুলো দাপ্তরিক কাজে নিয়ে যাবার জন্য ডঃ আজাদের এপার্টমেন্টে পৌঁছে কলিং বেল বাজিয়ে, ডাকাডাকি করে কোন সাড়া না পেয়ে ভেতরে ঢুকে তাঁকে ঘুমন্ত অবস্হায় পায়৷তখন তিনি মৃত৷ সাথে সাথে ডাক্তার এবং পুলিশকে খবর দেয়া হয়৷

স্ট্রাসার জানান,বুধবার সন্ধ্যায় ডঃআজাদ একটি গ্রীল পার্টিতে যোগ দেন৷ সেখানে তাঁকে খুব হাসিখুশী দেখাচ্ছিল৷


পুলিশ তাঁর মৃতদেহ অটপসি করে স্বাভাবিক মৃত্যুর প্রমান পায়৷ পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মি. বিশলে জানান, ডাক্তারী পরীক্ষায় অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়েনি৷ ডাক্তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর লক্ষণ পেয়েছে৷


হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুতে দেশে-বিদেশে তাঁর পাঠক-শুভাকাঙ্ক্ষী-বন্ধুমহলে শোকের ছায়া নেমে আসে৷ তাঁর পরিবারবর্গ একে অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে অভিহিত করে এই ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবী করে৷


১৫আগস্ট রবিবার ঢাকার জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য এফেয়ার্স ফুলার রোডের বাসায় ডঃ আজাদের পরিবারবর্গের সাথে দেখা করে জানান, মৃতদেহ পরীক্ষা করে স্বাভাবিক মৃত্যুর প্রমাণ পেয়েছে জার্মান ডাক্তারেরা৷


১৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার ডঃ আজাদের মৃতদেহ ঢাকায় পাঠানোর সম্ভাবনার কথা বলা হলেও তা সম্ভব হয়নি৷মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১১ সেপ্টেম্বর ঘটনার পর মৃতদেহ পরিবহণের ক্ষেত্রে বিমানে তোলার ২৪ ঘন্টা আগে তা বিমানবন্দরে নিয়ে আসার নিয়ম করা হয়েছে নিরাপত্তাজনিত কারণে৷

ডঃ আজাদের মৃতদেহ পরিবহণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ঢাকার জার্মান দূতাবাসে জমা দেয়া হয় বুধবার৷তখন মৃতদেহ পরিবহণের জন্য প্রস্তুত করে উডডয়নের ২৪ ঘন্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছানো সম্ভব ছিলনা বলে জানায় সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ৷


বাংলাদেশ বিমানের পরবর্তী ঢাকাগামী ফ্লাইটে ২৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার ডঃ আজাদের মৃতদেহ ঢাকায় পাঠানো হবে বলে আশা করা যাচ্ছে৷


হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুতে প্রতিক্রিয়া জানাতে ডয়চেভেলের মুখোমুখি হন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম,সাজ্জাদ শরীফ প্রমুখ৷ অনমনীয় বহুমাত্রিক লেখক আজাদের অকস্মাত্ মৃত্যুতে সবাই স্তম্ভিত৷


একুশে বইমেলার সময় সন্দেহভাজন মৌলবাদী জঙ্গীদের হামলায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন যিনি, তিনি এমন নীরবে চলে যাবেন তা কারো বিশ্বাস হচ্ছিল না৷

তবে তাঁর সাহসী উচ্চারণ হয়তো দুঃসময়ে জনমানুষের সহগামী হবে,এ প্রত্যাশা সকলের৷


আবদুল্লাহ আল্-ফারূক
মাসকাওয়াথ আহসান