হোলি আর্টিজান হামলার টাইমলাইন
২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাঁচ জঙ্গিসহ ২৯ জন নিহত হয়৷ হামলায় জড়িত থাকার দায়ে সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে৷
হামলা শুরু
২০১৬ সালের ১ জুলাই শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে ঢাকার গুলশান দুই-এর ৭৯ নম্বর সড়কের পাঁচ নম্বর বাড়ির হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা হয়৷
হামলাকারী
সরাসরি হামলায় অংশ নেন পাঁচজন৷ তারা হলেন: রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিবরাস ইসলাম, মীর সামিহ মোবাশ্বের, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ওরফে বিকাশ৷ শনিবার সকালে সেনা কমান্ডো অভিযানে তারা সবাই নিহত হন৷ ছবিতে হামলাকারী নিবরাস ইসলামকে দেখা যাচ্ছে৷
নিহত
মোট ২৯ জন প্রাণ হারান৷ এর মধ্যে পাঁচ জঙ্গিসহ এক রেস্তোরাঁ কর্মী ও একজন শেফ কমান্ডো অভিযানে নিহত হন৷ বাকি ২২ জনের মধ্যে অভিযান চালাতে গিয়ে প্রাণ হারান দুই পুলিশ৷ তাঁরা হলেন গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানীর ওসি মো. সালাহউদ্দিন খান৷ বাকি ২০ জনের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশি, নয়জন ইটালীয়, সাতজন জাপানি ও একজন ভারতীয়৷ নিহত বাংলাদেশিরা হলেন ইশরাত আকন্দ, ফারাজ আইয়াজ হোসেন ও অবিন্তা কবীর৷
কমান্ডো অভিযান
২ জুলাই শনিবার সকালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সাথে নিয়ে সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা অভিযান চালান৷ এতে পাঁচ জঙ্গিসহ সাতজন নিহত হন৷ অভিযান শেষে নারী-শিশুসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়৷
মামলা দায়ের
২০১৬ সালের ২ জুলাই সন্ত্রাস দমন আইনে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন গুলশান থানার এসআই রিপন কুমার দাস৷
চার্জশিট
কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই আটজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয়৷ তদন্তে হামলায় ২১ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়৷ এর মধ্যে ১৩ জন কমান্ডো অভিযান ও পরবর্তীতে জঙ্গিবিরোধী বিভিন্ন অভিযানে নিহত হন৷ সে কারণে ওই ১৩ জনকে বাদ দিয়ে আটজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়৷
যাদের আসামি করা হয়নি
জিম্মি অবস্থা থেকে উদ্ধার করা হাসনাত রেজাউল করিম ও তাহমিদ হাসিব খানকে (ছবি) গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও পরে আসামি করা হয়নি৷
জঙ্গিবিরোধী অভিযান
বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত আটজন হলেন: তামিম চৌধুরী, সরোয়ার জাহান ওরফে আব্দুর রহমান, তানভীর কাদেরী ওরফে জামসেদ, নুরুল ইসলাম মারজান, বাশারুজ্জামান চকোলেট, মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ও রায়হান কবির ওরফে তারেক৷
বিচারকাজ শুরু
চাজশিট দেয়ার প্রায় চার মাস পর ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করে বিচারকাজ শুরু করে৷ আদালত ২১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে ২৭ নভেম্বর রায়ের জন্য দিন নির্ধারণ করেন৷
রায়
বিচার শুরুর এক বছরের মাথায় ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর আট আসামির মধ্যে সাত জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত৷ তারা হলেন জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলামুল ইসলাম ওরফে রাশেদ ওরফে র্যাশ, আব্দুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, রাকিবুল হাসান রিগান, মামুনুর রশিদ রিপন ও শরীফুল ইসলাম খালিদ৷ মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে খালাস দেয়া হয়েছে৷
স্বীকারোক্তি
ছয় আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন৷ মৃত্যুদণ্ড পাওয়া মামুনুর রশিদ রিপন ও শরীফুল ইসলাম খালিদ জবানবন্দি দেননি৷