1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

১৫ শিংয়ের ডাইনোসরে'র সন্ধান মিলেছে উটা মরুভূমিতে

২ অক্টোবর ২০১০

সম্প্রতি মার্কিন মুলুকের উটা অঞ্চলের মরুভূমি খুঁড়ে আজ থেকে ৭৬ মিলিয়ন বছর আগের পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াত, এমন বিরল প্রজাতির ডাইনোসরাসের সন্ধান পেয়েছেন জীবাশ্মবিদরা৷

https://p.dw.com/p/PSbs
শিঙেল ডাইনোছবি: dpa

সেই যে ছড়া, সুকুমার রায় লিখেছিলেন – ‘সিংহের শিং নেই, এই তার কষ্ট/ হরিণের সাথে মিলে শিং হল পষ্ট৷' হরিণের সাথে মিলেছিল কিনা জানা যায় নি, কিন্তু এ যেন খানিকটা তাই৷ সম্প্রতি কয়েকজন জীবাশ্মবিদ মার্কিন মুলুকের পশ্চিমাংশের উটা মরুভূমি খুঁড়ে দীর্ঘ শিংওলা বিরল প্রজাতির ডাইনোসরের সন্ধান পেয়েছেন৷

এই শিঙেল ডাইনো'রা নাকি হার্বিভোরাস টাইসেরাটোপ প্রজাতির ডাইনোসরদের নিকটাত্মীয় ছিলো৷ জীবাশ্মবিদরা মাটি খুঁড়ে ডাইনোসরের দুইটি করোটি পেয়েছেন৷ একটি সাত ফুট লম্বা করোটি, আর অন্য করোটিতে নাকি ১৫টি শিং সাজানো ছিল৷ এক মাথায় ১৫ শিং নিয়ে কি বিচিত্রই না দেখাতো এই প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীগুলোকে৷

গবেষকরা জানিয়েছেন, অতিকায় নিরামিষাশী এই ডাইনোরা ছিল হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন মহাদেশ ‘লারামিডিয়া'র অধিবাসী৷ যার অবস্থান ছিল এখনকার উত্তর আমেরিকার কাছে৷ খুঁজে পাওয়া এই প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীগুলোর একটা নামও তো চাই, তাই নয় কি! গবেষকরা এই ডাইনো দুটির একটির নাম রেখেছেন ‘উটা-সেরাটপ'৷ উটা'র মরুভূমিতেই যে এদের সন্ধান মিলেছে৷

দুই জীবাশ্মের মধ্যে যে ডাইনোটি অপেক্ষাকৃত ছোট, সেটির নাম রাখা হয়েছে ‘কসমসেরাটপস রিচার্ডসনি'৷ ল্যাটিন ভাষায় কসমস মানে হচ্ছে বিশদভাবে অলংকৃত৷ আর গবেষক স্কট রিচার্ডসন একে খুঁজে পেয়েছিলেন বলেই তার নামের রিচার্ডসন এর সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়েছে রিচার্ডসনি৷

চেহারা দেখেশুনে আরেক জীবাশ্ম গবেষক মার্ক লোওয়েন জানিয়েছেন, আদতে এই উটাসেরাটপ'দেরকে মস্ত মাথার বিশালকায় গণ্ডারই বলা যায়৷ নাকের ওপরে বসানো লম্বা শিংটির কথা বাদ দিলে অন্য শিংগুলো ঊর্ধ্বমুখী না হয়ে তাদের মুখের পাশ দিয়ে বেরিয়ে থাকতো৷ ৩ থেকে ৪ টন ওজন হতো এদের৷ ঝাড়া ১৮ থেকে ২২ ফুট দৈর্ঘের এসব ডাইনোসর উচ্চতায় ছিল ৬ ফুট৷

কিন্তু গবেষকদের মাথা ব্যথার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন এই ১৫ টি শিং৷ বিশাল মাথায় বিচিত্রভাবে সাজানো এতোগুলো শিং দিয়ে এই ‘কসমসেরাটপস রিচার্ডসনি'রা আসলে কি করতো! এ নিয়ে বিষম ধন্দে পড়ে গিয়েছেন তারা৷ অবশ্য কেউ কেউ বলছেন, এই শিং গুলো প্রতিদ্বন্দ্বী আর শত্রুদের ঠেঙাতেই ব্যবহার করতো কসমসেরাটপ রিচার্ডসনিরা৷ কখনো কখনো নাকি প্রেমের ভাব প্রকাশেও এর ব্যবহার ছিল৷ অন্তত বিজ্ঞানীদের তেমনটিই ধারণা৷ সেক্ষেত্রে এই বিরল প্রজাতির ডাইনোদের বিচিত্র এই শিং সমাহার সমরাস্ত্র এবং প্রেমাস্ত্র, মানে প্রেম প্রকাশের অস্ত্র হিসেবেও ব্যবহার করতো এরা৷

প্রতিবেদন: হুমায়ূন রেজা

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন