1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

২১ জেলার বন্যায় দুর্গত ১৫ লাখ 

১৬ জুলাই ২০১৯

ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢল নেমে আসায় দেশের প্রধান নদ-নদী অববাহিকায় পানি বেড়েই চলেছে। ফলে দেশের ২১টি জেলায় বন্যা ছড়িয়ে পড়েছে৷ ধারণা করা হচ্ছে, দুর্গত মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৫ লাখ৷

https://p.dw.com/p/3M9LK
Hochwasser in Rangamati, Bangladesh
ছবি: DW/H. Chakma

 দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় কেন্দ্রের কাছে দুর্গত মানুষের সঠিক হিসেবটি এখনও নেই৷

বন্যায় রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিতে ডুবে কুড়িগ্রামে তিনটি, সিরাজগঞ্জে একটি শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে৷

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেয়া সবশেষ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, দেশের ২৩টি পানি সমতল স্টেশনে ১৩টি নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে৷ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলছেন, ‘‘সার্বিকভাবে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে৷ বেশ কিছু অঞ্চলে পানি নেমে গেছে৷ বেশকিছু জায়গায় পানি বেড়েছে৷ তবে উত্তরাঞ্চল ও উত্তর মধ্যাঞ্চলে অবনতি হয়েছে৷''

সার্বিকভাবে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে:আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া

তাঁর হিসেবে, সিলেট, সুনামঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোণা, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল--এই ১১টি জেলায় এখনো বন্যা পরিস্থিতি রয়েছে৷ বাকি জেলাগুলোর অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পানিও দ্রুত নেমে যাচ্ছে৷

তবে পানি বাড়ার প্রবনতা দু'একদিনের মধ্যে কমে আসবে বলে মনে করছেন তিনি৷ আরিফুজ্জামান বলেন, ‘‘আগামী সপ্তাহের শুরু থেকে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নয়ন হবে৷''

বাংলাদেশ অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর এখনও সক্রিয়৷ উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে৷ তাই দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে৷

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মো. শামসুদ্দীন জানিয়েছেন, ‘‘গত দশদিনে বাংলাদেশ, নেপাল, আসাম, মেঘালয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে৷ যার ফলে নদীর পানি বেড়ে গেছে৷ নদীর পানি বেড়ে যাওয়ার বিভিন্ন স্থান প্লাবিত হয়েছে৷'' তবে আসাম আর নেপালে বৃষ্টি বন্ধ হলে, নদীর পানি কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি৷

জানমালের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেদিকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে:কাজী তাসমীন আরা আজমিরী

বন্যাসহ যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলা সরকার প্রস্তুত আছে বলেও জানিয়েছেন ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় কেন্দ্রের উপ সচিব কাজী তাসমীন আরা আজমিরী৷ তিনি বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গে প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে তাঁদের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে৷ জানমালের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেদিকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলেও এই কর্মকর্তা৷

তাঁর দেওয়া হিসেব মতে, দেশের বন্যা উপদ্রুত ২১টি জেলায় এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৩৫০ মেট্রিক টন চাল পাঠানো হয়েছে৷ আর্থিক অনুদান দেয়া হয়েছে তিন কোটি ১৭ লাখ টাকা৷ শুকনো খাবারের ব্যাগ দেয়া হয়েছে ৮৪ হাজার৷ বন্যার সঙ্গে যেহেতু অতিবর্ষণও আছে তাই, ১৫টি জেলায় সাড়ে সাত হাজার তাঁবু পাঠানো হয়েছে৷

বন্যার জন্য প্রাকৃতিক কারণের পাশাপাশি মনুষ্য সৃষ্ট কারণও আছে: ড. আতিক রহমান

বন্যার জন্য প্রাকৃতিক কারণের পাশাপাশি মনুষ্য সৃষ্ট কারণও আছে বলে মনে করেন পরিবেশবিদ ড. আতিক রহমান৷ তিনি বলেন, ‘‘আগের মতো নদীর বহমানতা বা নেভিগেশন থাকলে চট করে পানিটা চলে যেত৷ এখন যেটা হয়েছে, পলি মাটি আসায় নদীর তলানিটা ভরাট হয়ে গেছে৷ ফলে পানিটাকে আর ধরে রাখা যায় না, সেটা ছড়িয়ে যায়৷ ফলে বন্যা বাড়তে থাকে৷ সমপরিমাণ বৃষ্টিতে আগের চেয়ে বেশি বন্যা হয়৷''

যোগাযোগ ব্যবস্থায় দেশ অনেকখানি এগিয়ে গেছে বলেও মনে করেন ড. আতিক৷ তাই মানুষের জীবনের ক্ষতিটা অনেক কমে গেছে৷ কিন্তু দেশের সার্বিক অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য