1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অনেক দিন আকাশে থাকতে পারবে যে বিমান

২৪ জুলাই ২০২০

এমন বিমান যার কোনো ইঞ্জিন নেই৷ মাসের পর মাস আকাশে ভেসে থেকে নজরদারি চালাতে পারে৷ কল্পবিজ্ঞান নয়, গবেষকরা এমন উড়ন্ত বস্তুর প্রোটোটাইপ তৈরি করেছেন৷ বছর পাঁচেক পর সেটি লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3fqcn
Ungewöhnliche Hochzeitsorte
প্রতীকী ছবিছবি: picture-alliance/dpa/F. Gambarini

ফিনিক্স দেখতে ছোট আকারের জেপেলিনের মতো৷ এটির আবিষ্কারক অবশ্য নিজের সৃষ্টিকে বিমান হিসেবেই তুলে ধরতে বদ্ধপরিকর৷ এটি আসলে নতুন ধরনের মানুষবিহীন উড়ন্ত যানের প্রোটোটাইপ বা নমুনা৷ ডানা ও লেজ এখনো লাগানো হয়নি৷ প্রাথমিক পরীক্ষামূলক উড়ালের জোরালো প্রস্তুতি চলছে৷ হলের মধ্যেই ফিনিক্স প্রথম বারের মতো শূন্যে ভাসতে চলেছে৷ পরীক্ষা কি সফল হবে? হাইল্যান্ডস ও আইল্যান্ডস বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্ড্রিউ রে বলেন, ‘‘বহুকাল ধরে, প্রায় দেড়শ বছরের বেশি সময় থেকে এই আইডিয়া চালু রয়েছে৷ পানির নীচে রিমোট কনট্রোলের সাহায্যে এমন যান চালানো হয়ে থাকে৷ জরিপের কাজে পানির নীচে খুব ভালো গ্লাইডার ব্যবহার করা হয়৷ কিন্তু এখনো পর্যন্ত বাতাসে কেউ এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করে নি৷ কারণ বাতাস পানির তুলনায় প্রায় হাজার গুণ কম ঘন৷ অতএব সেই প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল৷''

ফিনিক্সের মধ্যে হিলিয়াম গ্যাস ভরে দেওয়া হলো৷ বাইরের অংশের উপাদান আলাদা করে তৈরি করতে হয়েছে৷ একই সঙ্গে সেটিকে হালকা ও হিলিয়াম ধরে রাখার মতো মজবুত হতে হবে, কারণ এই গ্যাস অত্যন্ত উদ্বায়ী৷ হালকা কার্বন ফাইবার দিয়ে তৈরি ডানা এবং লেজে ফটোভল্টায়িক সেল বসানো হয়েছে৷ এভাবে বিমানের জ্বালানীর জোগান দেওয়া হয়৷ বিমানের মধ্যে ব্যাটারির কল্যাণে রাতেও সেটি ওড়ানো সম্ভব৷

এবার বিমান তৈরির কাজ পুরোপুরি শেষ৷ ভবিষ্যতে এই উড়ন্ত যানকে বিভিন্ন কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে৷ যেমন কোনো পরিবেশ বিপর্যয়ের সময়ে কোথায় সবার আগে সাহায্য পৌঁছানো প্রয়োজন, ক্যামেরা লাগানো ফিনিক্স যান সে বিষয়ে ধারণা দিতে পারবে৷ অ্যান্ড্রিউ রে জানান, ‘‘এই যানকে নকল স্যাটেলাইট হিসেবেও কাজে লাগানো যেতে পারে৷ ২০,০০০ মিটার উচ্চতায় সেটি নজরদারি চালাতে পারবে৷ কারণ সেই স্তরে আবহাওয়া সবচেয়ে অনুকূল৷ নীচের স্তরের তুলনায় বাতাস অনেক কম৷''

ফিনিক্স ১৫ মিটার দীর্ঘ৷ হিলিয়াম ভরা না থাকলে ওজন মাত্র ১২০ কিলোগ্রাম৷ সে কারণে জ্বালানির চাহিদাও অনেক কম৷ সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এই বিমানের কোনো ইঞ্জিন না থাকায় জ্বালানীরও কোনো প্রয়োজন নেই৷ ফলে মাসের পর মাস ধরে সেটিকে আকাশে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে৷ তাছাড়া ফিনিক্স তুলনামূলকভাবে অনেক অর্থ সাশ্রয় করতে পারে৷

ফিনিক্স যে কৌশলে আকাশে ওড়ে, তার পোশাকি নাম ‘ভেরিয়েবল বুয়্যান্সি ড্রাইভ'৷ হিলিয়াম বাতাসের তুলনায় হালকা হওয়ায় ফিনিক্সকে ঠেলে উপরে তুলে দেয়৷ নীচের দিকে দুটি কমপ্রেসর বাইরে থেকে বাতাস শুষে নিয়ে ফিনিক্সের ভিতরে এক ধরনের আধারে ভরে ফেলে৷ তখন বিমানটির ওজন বেড়ে যায় ও সেটি নীচের দিকে নেমে আসে৷

বাতাস আবার বার করে দিলে ফিনিক্স আরও হালকা হয়ে উপরের দিকে চালিত হয়৷ এমন ‘নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস' প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এবং ডানার সাহায্যে ফিনিক্স শুধু উপর-নীচ নয়, সামনের দিকেও চালনা করা সম্ভব৷ প্রায় অর্ধেক সময়ে ফিনিক্সের ওজন বাতাসের তুলনায় ভারি, অর্থাৎ, বিমানের মতো৷ অন্য সময়ে সেটি বাতাসের তুলনায় হালকা, অর্থাৎ গ্যাস বেলুনের মতো৷

ফিনিক্সের মডেলকে উইন্ড টানেলের মধ্যে অসংখ্য পরীক্ষায় পাশ করতে হয়েছে৷ অ্যান্ড্রু রে এয়ারোডাইনামক্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত গবেষক৷ তিনি এই বিমানের মধ্যে আরো উন্নতি আনতে চান৷ গবেষকরা লেজার রশ্মি ও ধোঁয়ার মাধ্যমে বিমানের মডেলের চারিপাশে বাতাসের স্রোত দৃশ্যমান করে তুলেছেন৷

অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হলো৷ প্রায় তিন বছরের পরিশ্রমের পর প্রোটোটাইপের প্রথম পরীক্ষামূলক উড়াল চালানো হলো৷ সেই প্রচেষ্টা সফল হয়েছে৷ প্রায় ১২০ মিটার দীর্ঘ হ্যাঙারের মধ্যে ফিনিক্স বাতাসে ঢেউয়ের মতো ওঠানামা করেছে৷

পাঁচ বছর পর দ্বিতীয় প্রোটোটাইপ প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার কথা৷ সেটির আকার তখন প্রায় চার গুণ বড় হবে এবং সত্যি ২০,০০০ মিটার উচ্চতা ছুঁতে পারবে৷

আংগেলিকা লিৎসিউস

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান