1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরার গল্প

১৮ জুলাই ২০১৮

টানা ১৭ দিন গুহায় আটকে থাকা থাইল্যান্ডের কিশোর ফুটবলাররা অবশেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে৷ প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেছে, না খেয়ে পানিতে ডুবে মৃত্যুর আশঙ্কা দূরে রাখার রোমহর্ষক সেই দিনগুলোর গল্প৷

https://p.dw.com/p/31hAR
Thailand PK des geretteten Fußtball-Teams
ছবি: Reuters/S. Zeya Tun

২৩ জুন থেকে ৯ জুলাই – টানা ১৭ দিন উত্তর থাইল্যান্ডের এক গুহায় আটক ছিল ‘' ফুটবল দলের ১২ জন কিশোর ফুটবলার এবং তাদের ২৫ বছর বয়সি কোচ৷ তিন দিনের ঝুঁকিপূর্ণ উদ্ধার অভিযান শেষ হয় ১০ জুলাই৷ শেষ হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৩টি প্রাণ বাঁচানোর মানবিক দায়িত্ব৷ ১০ জুলাই সবাইকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও অবশ্য তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি৷ গুহা থেকে উদ্ধার করেই সবাইকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে৷ কিশোর ফুটবলারদের পরিবার এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আপত্তি থাকায় গত এক সপ্তাহ সংবাদমাধ্যমও জানতে পারেনি বিভীষিকাময় ১৭টি দিনের কথা৷ মঙ্গলবার অবশেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন থেকে সারা দেশে সম্প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেয় ফুটবলাররা৷ সেই সুবাদে ওই ১৭ দিনের অজানা কথাগুলোও জানা হয়ে যায় সবার৷

‘থাইল্যান্ড মুভস ফরোয়ার্ড' নামের সরকারি এক অনুষ্ঠানের সেটটি সাজানো হয়েছিল পূর্ণাঙ্গ এক ফুটবল মাঠের আদলে৷ সেখানে ফুটবল নিয়ে এসে সেই ফুটবলে লাথিদিয়েই কথা শুরু করে কিশোর ফুটবলাররা৷ নিজেদের বেঁচে থাকার গল্প শোনানোর আগে তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে প্রাণ দেয়া এক উদ্ধারকর্মীর প্রতি শ্রদ্ধাও জানিয়েছে তারা৷

অনুষ্ঠানে এসে এক ফুটবলার জানায়, আটকে পড়ার পর তার মাথা যেন ঠিকভাবে কাজ করছিল না, অনেক যুদ্ধের পর বেঁচে থাকাটা তার জন্য এখন অলৌকিক ঘটনা৷ তার ভাষায়, ‘‘ওটা সম্পূর্ণ অলৌকিক ঘটনা৷ (আটকে পড়ার সময়) আমার মস্তিষ্ক খুব ধীরে ধীরে কাজ করছিল, আমরা তো ১০ দিন গুহায় আটকে ছিলাম৷ বুঝতে পারছিলাম না কী বলবো!'' 

১১ থেকে ১৬ বছর বয়সি ১২ জন ফুটবলার এবং তাদের কোচের ১৭ দিন ধরে শুধু একটা চিন্তাই মাথায় ঘুরপাক খেয়েছে – বাঁচতে হবে আর বাঁচতে হলে গভীর গুহা থেকে বেরোনোর পথ বের করতেই হবে৷ গুহায় তখন জল থৈ থৈ৷ আরেকবার বৃষ্টি শুরু হলেই পানির উচ্চতা বাড়বে আর তাতেই সলিল সমাধি হবে সবার৷ তাই কিশোরদের কেউ কেউ গুহা খুঁড়ে পথ করার চেষ্টাও করেছে৷ সঙ্গে কোনো খাবার ছিল না৷ তাই না খেয়ে খেয়ে শরীর তখন ভীষণ দুর্বল৷ মন তবু বলছিল, ‘‘বের হওয়ার পথ করতে পারবোই৷'' কোচ জানালেন, ‘‘যখন মনে হলো কর্তৃপক্ষ আমাদের উদ্ধার করবে সেই অপেক্ষায় বসে থাকা ঠিক হবে না, তখন আমরা নিজেরাই মাটি খুঁড়ে পথ করার চেষ্টা শুরু করি৷'' এক কিশোর জনায়, অনেক চেষ্টায় সে তিন ফুট খুঁড়তে পেরেছিল৷

শেষ পর্যন্ত আর মাটি খুঁড়ে বেরিয়ে আসার অসম্ভব চেষ্টায় প্রাণপাত করতে হয়নি তাদের৷ তার আগেই সফলভাবে শেষ হয় কষ্টসাধ্য এবং ঝুঁকিপূর্ণ উদ্ধার অভিযান৷ তারপর থেকে চলেছে চিকিৎসা৷ সাত দিনের চিকিৎসায় এখন সবাই বেশ সুস্থ৷ বার্তা সংস্থা ডিপিএ-কে এক ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট বলেছেন, ‘‘আমরা অনেকগুলো ডাক্তারি পরীক্ষা করে দেখেছি ওরা এখন সুস্থ আছে৷ এখন সমাজের যে কোনো চাপ সহ্য করার মানসিক শক্তিও হয়েছে ওদের৷ আর কোনো চিন্তা নেই৷ ওরা এখন বাড়ি ফিরতে পারে৷''

এসিবি/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)