1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আধুনিক সাজে আলবেনিয়ার ঐতিহ্যগত খাদ্য

১৪ ডিসেম্বর ২০১৮

দাদি-নানি অথবা মায়ের হাতের রান্নার অপূর্ব স্বাদ কি দামি রেস্তোরাঁয় আনা সম্ভব? আলবেনিয়ার দুই শেফ ঠিক সেই অসাধ্যসাধন করতে পুরানো ঐতিহ্যগত উপকরণ ও রন্ধনপ্রণালী নতুন করে তুলে ধরছেন৷

https://p.dw.com/p/3A5cc
Albanien, Mullixhiu Restaurant in Tirana
ছবি: Ilir Rizaj

শেফ ব্লেডার কোলা-র রেস্তোরাঁর রান্নাঘরে চরম ব্যস্ততা৷ ‘মুলিজিউ' নামের রেস্তোরাঁর একটিমাত্র মূলমন্ত্র, আর তা হলো স্লো ফুড – আলবানিয়ার নিজস্ব স্লো ফুড৷ ব্লেডার বলেন, ‘‘আমি আলবানিয়ার রন্ধনশিল্পকে নতুন করে তুলে ধরতে চাই, আধুনিক ছোঁয়া দিয়ে খাবার থেকে ফ্যাট ও কড়া গন্ধ দূর করে মৌলিক স্বাদ অক্ষত রেখে এই খাদ্যকে ‘আপডেট' করতে চাই৷''

সেই স্বপ্ন পূরণ করতে ব্লেডার আবার তাঁর নিজের দেশে ফিরে গেছেন৷ ১৯৯০ সালে সমাজতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রের অবসানের পর থেকে রাজধানী টিরানা অত্যন্ত ধীরে ধীরে উন্নতির মুখ দেখেছে৷ আজ গোটা শহরে সমৃদ্ধির ছাপ দেখা যায়৷ তার আগে অবশ্য চরম বেকারত্মের কারণে অনেক মানুষ কাজের খোঁজে দেশ ছেড়েছিলেন৷

১৯৯৯ সালে লন্ডনে চলে যাবার সময় ব্লেডার কোলা-র বয়স ছিল ১৫৷ রেস্তোরাঁয় বাসন ধোয়ার কাজ শুরু করে তিনি সুইডেনের দুই তারকা রেস্তোরাঁ ফেভিকেন ও কোপেনহেগেন শহরের বিখ্যাত নরমা রেস্তোরাঁয় কাজের সুযোগ পান৷

২০১৬ সাল থেকে তিনি টিরানা শহরে নিজের রেস্তোরাঁ চালাচ্ছেন৷ ‘মুলিজিউ' দেশের ঐতিহ্যগত খাবার ও স্থানীয় শাকসবজি ব্যবহারের উপর জোর দেয়৷ এমনকি নিজস্ব গম ভাঙানোর যন্ত্রে রুটি ও নুডলসের জন্য ময়দাও পেশা হয়৷ আলবেনীয় ভাষায় ‘মুলিজিউ' মানে মিলের কর্মী৷ ব্লেডার কোলা বলেন, ‘‘আমার ফিরে আসা দরকার ছিল, কারণ আমি দেশের খাবারের গভীরতা বুঝতে চেয়েছিলাম৷ জানেন তো, পুরানো রন্ধন প্রণালী সব কিছুর ভিত্তি৷ কখনোই অতীত ভুলে যাওয়া উচিত নয়৷ অতীত না থাকলে ভবিষ্যতও থাকবে না৷ পিছনে ফিরে তাকিয়ে আমাদের সামনের দিকে এগোনো উচিত৷

এমন প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে ব্লেডার কোলা একা নন৷ আন্টন প্রেংগা ২০১০ সালে ভাইয়ের সঙ্গে আলবেনিয়ার উত্তর পশ্চিম প্রান্তে এক স্লো ফুড রেস্তোরাঁ খোলেন৷ প্রথমদিকে উচ্চ মানের স্থানীয় উপকরণের অভাব ছিল৷ সেই ঘাটতি পূরণ করতে দুই ভাই সেই রেস্তোরাঁকে কেন্দ্র করে এক যৌথ খামার গড়ে তোলেন৷

দরিদ্র এই অঞ্চলে এভাবে অনেক ক্ষুদ্র চাষী ও ২৫ জন কর্মীর কর্মসংস্থান সম্ভব হয়েছে৷ রেস্তোরাঁর সব খাবারের উপকরণ সেখানেই উৎপাদন করা হয়৷ চিজ, টমেটো স্যালাড, ঝিঙা অথবা ব্ল্যাকবেরি পানা অথবা যে পদই হোক না কেন৷ আন্টন প্রেংগা বলেন, ‘‘প্রায় ৫ বছর চাষবাস করার পর আমরা ব্লেডার-এর সঙ্গে দেখা করি৷ সবাই মিলে আমরা হারিয়ে যাওয়া শস্য আবার খাবার টেবিলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাতে চেয়েছিলাম৷ সেখান থেকেই টিরানা শহরে ‘মুলিজিউ' রেস্তোরাঁ চালু করার আইডিয়া আসে৷''

দুই শেফই ব্যবসার সহযোগী ও বন্ধু৷ দুজনেই বিদেশে গিয়ে উচ্চ মানের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন৷ দুজনেই সচেতনভাবে আবার দেশে ফিরে কাজ করতে চেয়েছিলেন৷ দু'জনেরই সাফল্যের মূলমন্ত্র এক৷ ব্লেডার কোলা বলেন, ‘‘রেস্তোরাঁর জন্য স্টার সংগ্রহ করে বিশ্বকে আমাদের রন্ধনশিল্পের ঐতিহ্য দেখানো আমাদের উদ্দেশ্য নয়৷ স্টার যোগ হলে আমাদের আপত্তি নেই৷ কিন্তু সেটাই লক্ষ্য নয়৷''

মিশল্যাঁ স্টার না থাকলেও রেস্তোরাঁয় খাবারে স্বাদ অনবদ্য৷ ব্লেডার কোলা টিরানায় স্লো ফুড আন্দোলনে এবং শেফদের মধ্যে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন৷

ডানিয়েলা শুলৎস/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান